নবম -দ্বাদশ পড়ুয়ারা ভবিষ্যৎ ভোটার, তাই পাঠ্যক্রমে ‘নির্বাচনী স্বাক্ষরতা’ যুক্ত করতে পরামর্শ নির্বাচন কমিশনের

নয়াদিল্লি, ১৩ ফেব্রুয়ারি৷৷ সুকলগুলিতে দ্বাদশ মানের সিলেবাসে নির্বাচনী স্বাক্ষরতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশন৷ কমিশন চাইছে ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয়স্তর থেকেই ভোটার হিসেবে দায়িত্ববান হয়ে উঠুক৷ কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রকের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়ে কমিশন বলেছে ১৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী ভবিষ্যৎ ভোটারদের নির্বাচন সম্পর্কিত সম্যক জ্ঞান দেওয়ার লক্ষ্যে দ্বাদশমানের পাঠ্যক্রমে নির্বাচনী স্বাক্ষরতা বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হোক৷ যাতে ১৮ বছর হওয়ার পর ঐ ছাত্র কিংবা ছাত্রী ভোট দেওয়ার বিষয়ে দায়িত্ববান হতে পারেন৷

মন্ত্রককে কমিশন বলেছে এনসিইআরটি’র সাথে আলোচনা করে নির্বাচন এবং নির্বাচনী পদ্ধতি সম্পর্কিত একটি পুস্তিকা পাঠ্যক্রমে রাখার ব্যবস্থা করার জন্য৷

নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রককে বলেছে এনসিইআরটি যাতে একটি প্রচার পুুস্তিকা প্রস্তুত করে নির্বাচন এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত যেটাকে অতিরিক্ত পাঠ্য বিষয় হিসেবে সুকল ও সমমান সম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷

গত জুলাইয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নাসিম জাইদি কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাবড়েকরকে একটি চিঠি লিখে অনুরোধ করেন যাতে পাঠ্যসূচীতে ‘নির্বাচনী স্বাক্ষরতা’ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷ নির্বাচনী স্বাক্ষরতা সংক্রান্ত এই বিষয়টি এখনো পাঠ্যসূচীতে যোগ করা হয়নি৷ এদিকে, আগষ্টে প্রকাশ জাবড়েকর মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের চিঠির জবাব দিতে গিয়ে বলেন, পোল প্যানেলকে অনুরোধ করা হয়েছে এনসিইআরটির সাথে কথা বলে জাতীয় সুকল পাঠ্যক্রম কাঠামো গঠন করার জন্য৷ বর্তমানে পাঠ্যবইয়ের যেসব বিষয়বস্তু রয়েছে তা মূলত এনসিইআরটি’র জাতীয় পাঠ্যক্রম কাঠামো ২০০৫ মোতাবেক চলছে৷ নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে এনসিইআরটি যখন তার পরবর্তী পাঠ্যক্রম পর্যালোচনা করবে৷ প্রকাশ জাবড়েকর মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে লেখা চিঠিতে আরও বলেন, বর্তমানে মন্ত্রক ব্যস্ত রয়েছে নতুন শিক্ষা নীতি প্রস্তুত করা নিয়ে৷ তিনি আরও জানান, বর্তমানে যে রাষ্ট্রবিজ্ঞান পাঠ্যবই রয়েছে যেটা এনসিইআরটি তৈরী করেছে তাতে নির্বাচন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত অনেক বিষয় রয়েছে৷

কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর চিঠি পেয়ে কাল বিলম্ব না করে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে পুনরায় চিঠি লেখেন, চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র সুকলের পাঠ্যসূচীতে নির্বাচনী স্বাক্ষরতা সংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে৷

এদিকে পোল প্যানেল জানুয়ারীতে একটি ব্যতিক্রমী কর্মসূচী নিয়েছে যাকে বলা হয়েছে ‘ইন্টারেক্টিভ সুকল এংগেজমেন্ট’৷ এই কর্মসূচীর অধীন ৫০০০ নথিভুক্ত নির্বাচন আধিকারীক, জেলা নির্বাচন আধিকারীক এবং মুখ্য নির্বাচন আধিকারীকরা সুকলে গিয়েছেন এবং ঐ সুকলের ৯ম-১২শ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রী যাদের বয়স ১৫-১৭ বছর তাদের সাথে মত বিনিময় করেছেন৷ তাদের বিভিন্ন প্রশ্ণের উত্তর দেওয়া হয়েছে৷ নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সম্যক জ্ঞান দেওয়া হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নাসিম জাইদি গত ২৫ জানুয়ারী জাতীয় ভোটার দিবসে জানিয়েছেন ভারতে ৬২ লক্ষ মানুষ রয়েছে যাদের বয়স ১৫-১৭ এর মধ্যে এবং তারা নির্বাচন কমিশনের মতে ভবিষ্যৎ ভোটার৷ এই ভবিষ্যৎ ভোটারদের প্রতি বছর ২০ লক্ষ মানুষ ১৮ বছরের হন এবং তারা প্রথম ভোটার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন৷ সাধারণত এই ভবিষ্যৎ ভোটাররা নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিতে থাকেন না৷ কিন্তু, এখন পদ্ধতিগত ভোটার শিক্ষা কর্মসূচী অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন ২০১৭ সাল থেকে তাদের উপর গুরুত্ব দিয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *