নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ ডিসেম্বর৷৷ কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতার পালা বদল ঘটলেও বিভিন্ন মন্ত্রকের অধীন বিভাগ গুলির কাজের ধরন ইত্যাদির পরিবর্তন হয়নি৷ সেই একই ধাঁচে আমলাদের মন পছন্দ, মনগড়া ভাবেই চলছে কেন্দ্রের বিভিন্ন দপ্তর৷ যেমন কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীনে রয়েছে ডি এডিপি, পিআইবি, প্রসার ভারতী৷ ত্রিপুরাতে এইসব দপ্তরের কাজকর্ম কেমন চলছে, বিগত বছরের সাফল্য কতখানি তা দেখার তাগিদ আমলাদের আছে কিনা, জনপ্রতিনিধিরা তা খতিয়ে দেখেন কিনা এই প্রশ্ণ উঠা খুব স্বাভাবিক৷ ডিএডিপি এরাজ্যে ফিল্ড পাবলিসিটির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে৷ ত্রিপুরার মানুষের মধ্যে তার কোনো সুফল কতখানি দেখা যায়? মন্ত্রকের অধীন, স্বাধীন সত্তার অধিকারী প্রসার ভারতীর তো শোচনীয় হাল৷ দর্শক ও শ্রোতার সংখ্যা তো দিনে দিনেই নিম্নাভিমুখী৷ আগরতলা দূরদর্শনের বিভিন্ন প্রোগ্রাম, সংবাদ শোনার আগ্রহ শূন্যের কোটায় নেমে আসছে৷ অথচ বছরে কোটি টাকা ব্যয় হয়ে যাচ্ছে দূরদর্শনের কল্যাণে৷ সেখানে বার্তা বিভাগে নতুন নতুন লোক নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো নিয়মনীতির বালাই নেই৷ এখানে কর্তার ইচ্ছায় চলছে কীর্তন৷ বার্তা বিভাগে দায়িত্ব নিয়েই ছড়ি ঘুরাচ্ছেন যিনি তিনি অনেক ধরাধরি করে বহির্বাজ্য থেকে আগরতলা দূরদর্শনের সংবাদ বিভাগের কর্তার পদে যোগ দিয়েছেন৷ অভিযোগ উঠেছে তাঁর বদলী রুখতে তিনি প্রতিনিয়ত বিজেপি নেতাদের ধরাধরিতে ব্যস্ত থাকেন৷ তিনি তলে তলে বাম নেতাদের কাছের লোক হয়ে আছেন৷ বাইরে অন্যরূপ৷ অর্থাৎ একই সঙ্গে বহুরূপ৷ আগরতলা দূরদর্শনের দর্শক সংখ্যা নিম্নাভিমুখী হবার জন্য দায়ী দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ও কর্মীদের অদক্ষতা৷ একটি সুবিধাভোগী চক্র আগরতলা দূরদর্শনকে গ্রাস করেছে৷ বিভিন্ন প্রোগ্রামের নামে লক্ষ লক্ষ টাকার বাণিজ্য চলছে৷ সব চাইতে শোচনীয় হাল সংবাদ বিভাগের৷ যিনি এই বিভাগের মুখ্য দায়িত্বে তিনি বদলী আটকাতে সদ্য ব্যস্ত৷ এরাজ্যের শাসক দলকে খুশী রাখা আবার বিজেপি নেতাদের মন জয় করার চেষ্টা৷ সব মিলিয়ে আগরতলা দূরদর্শনের বার্তা বিভাগের শোচনীয় হাল সম্পর্কে ত্রিপুরার একটি বিশেষ মহল প্রসারভারতীর শীর্ষ আধিকারিক ও সম্প্রচার মন্ত্রকের হস্তক্ষেপ চাইবেন বলে জানা গেছে৷
দেশের বা রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক বা দপ্তরের অন্যতম হচ্ছে তথ্য ও সম্প্রচার৷ রাজ্যে তথ্য সংসৃকতি দপ্তরের হাল অবস্থা কি তা পরবর্তী পর্যায়ে আলোচনা করা যেতে পারে৷ আজ যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হল তথ্য ও সম্প্রচার৷ গোটা বিশ্ব তার উপর গুরুত্ব দিয়ে চলেছে৷ অথচ সরকারি প্রচার মাধ্যম প্রসার ভারতীর পরিচালিত দূরদর্শন ও আকাশবাণীর শোচনীয় পরিণতি সম্পর্কে ভাবার কেউ নেই৷ সেই গড্ডালিকা প্রবাহেই যেন চলছে৷ অথচ এক সময় আকাশবাণী ছাড়া যেন আধুনিক জীবনই অচল হয়ে পড়তো৷ আজকের এই তথ্য বিস্ফোরণের যুগেও বাংলাদেশের রেডিও অনেক বেশী জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছে৷ আসলে আকাশবাণী ও দূরদর্শনে কায়েমী স্বার্থের গ্রাসে চলে গেছে৷ এই ত্রিপুরায় দূরদর্শন ও আকাশবাণীতে একটি রাজনৈতিক শক্তির ছায়া প্রবলভাবে প্রসারিত৷ এই গ্রাস থেকে বোধ হয় ত্রিপুরার দূরদর্শন ও আকাশবাণীর মুক্তি নেই৷
2016-01-01

