মধ্যপ্রদেশে মন্ত্রিসভার বড় সিদ্ধান্ত: ২১ হাজার কোটি টাকার আদিবাসী রাস্তা প্রকল্প, তুয়ার ডালে করছাড়, মহিলা হোস্টেল ও বর্ষার প্রস্তুতি

ভোপাল, ১০ জুন — মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মোহন যাদবের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে আজ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের গত ১১ বছরের আর্থিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতির প্রশংসা করে একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস করা হয়েছে। বিশেষ করে কৃষক, নারী, যুব ও দরিদ্র শ্রেণির জন্য কার্যকরভাবে চালু করা বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

মন্ত্রিসভা বৈঠকে ঘোষণা করা হয়েছে “মুখ্যমন্ত্রী মজরা-টোলা সড়ক যোজনা” নামের একটি নতুন প্রকল্প, যা মূলত আদিবাসী ও দূরবর্তী গ্রামাঞ্চলের ছোট ছোট বসতিগুলিকে মূল সড়কের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য শুরু করা হচ্ছে। মোট ৩০,৯০০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে, যাতে প্রায় ২০,৬০০টি বসতিকে সংযুক্ত করা যাবে। প্রকল্পে প্রায় ₹২১,৬৩০ কোটি ব্যয় হবে বলে অনুমান। এই প্রকল্পের ৮০% উপকারভোগী হবেন আদিবাসী অঞ্চলের মানুষ।

যেসব বসতিতে কমপক্ষে ২০টি পরিবার, ১০০ জনের বেশি জনসংখ্যা এবং ৫০ মিটারের মধ্যে কোনো রাস্তা নেই, সেই বসতিগুলিকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। গ্রাম নির্বাচনে জেলা কালেক্টর, সংসদ সদস্য, বিধায়ক ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের মতামত গ্রহণ করা হবে।

মহারাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুয়ার ডালের উপর থেকে মাণ্ডি কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ডালের ভালো মূল্য পাবেন, রাজ্যে দাল মিলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এটি রাজ্যের কৃষি, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন মন্ত্রীরা।

রাজ্যের জবুয়া, সিমরোলি, দেবাস সহ চারটি শিল্পাঞ্চলে ‘ওয়ার্কিং উইমেন হোস্টেল’ তৈরি করা হবে। মোট ৩৫০ সিটের এই হোস্টেল নির্মাণে ব্যয় হবে ₹৪০.৫৯ কোটি, যা কেন্দ্রীয় সহায়তায় পিপিপি মডেলে গড়ে তোলা হবে।

বর্ষার আগে সমস্ত মন্ত্রীদের নিজ নিজ অঞ্চলে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নগর অঞ্চলে নালা ও জল নিষ্কাশনের পরিস্কার এবং গ্রামীণ অঞ্চলে পুকুর ও জলাধারের ক্যাচমেন্ট এলাকাগুলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও প্রতিটি জেলায় ‘জেলা উন্নয়ন উপদেষ্টা কমিটি’ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হবেন উপ-সভাপতি। কমিটি জেলা উন্নয়নের রোডম্যাপ তৈরি করবে এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কাজ করবে। প্রয়োজনে রাজ্য সরকার এই কমিটিকে তহবিলও প্রদান করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *