BRAKING NEWS

বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে মধ্যপ্রদেশের প্রতিটি আসনে পদ্ম ফোটানোর আবেদন মোদীর

ভোপাল, ২৪ এপ্রিল (হি. স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার মধ্যপ্রদেশের সাগর এবং বেতুলে দুটি বিশাল জনসভায় ভাষণ দিয়ে রাজ্যের জনগণের কাছে আবেদন করেছেন যে এবার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে মধ্যপ্রদেশের প্রতিটি আসনে পদ্ম ফোটাতে। এই মহার্যাষলিতে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মোহন যাদব, উপ-মুখ্যমন্ত্রী জনাব রাজেন্দ্র শুক্লা, প্রবীণ নেতা শ্রী নরোত্তম মিশ্র, বিদিশা লোকসভা প্রার্থী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহান, বেতুল-হারদা প্রার্থী শ্রী দুর্গাদাস উইকে এবং সাগর লোকসভার প্রার্থী। শ্রীমতি লতা ওয়াংখেড়ে এবং অন্যান্য নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ সাগর ও বেতুলের ভূমিতে জনসমুদ্র সমবেত হয়েছে। গোটা মধ্যপ্রদেশ ফের একবার মোদী সরকারের প্রতি মনস্থির করেছে। আমার মধ্যপ্রদেশের মানুষের আশীর্বাদ দরকার, এটাই আমার সবচেয়ে বড় সম্পদ। জনসাধারণ ঈশ্বরের রূপ এবং জনসাধারণ যখন আশীর্বাদ করে, তখন সেই আশীর্বাদ স্বয়ং ঈশ্বরের আশীর্বাদ। বর্তমান সময়ে আশীর্বাদ দেওয়ার একমাত্র উপায় হল, পদ্ম প্রতীকের বোতাম টিপুন। দেশের উন্নয়নের জন্য একটি স্থিতিশীল সরকার কতটা প্রয়োজন তা মধ্যপ্রদেশের মানুষ ভালো করেই জানেন। সঠিক নীতি ও সঠিক দূরদৃষ্টি দিয়েই উন্নয়ন সম্ভব। তাই, দেশে উন্নয়ন হয়েছিল যখন কংগ্রেস ক্ষমতার বাইরে গিয়েছিল, এবং বিজেপি সরকার গঠন করেছিল। কংগ্রেস শাসনকালে মধ্যপ্রদেশ বিমারু রাজ্য হিসেবে পরিচিত ছিল, কিন্তু বিজেপি সরকারের অধীনে মধ্যপ্রদেশ উন্নয়নের উচ্চতায় ছুঁয়ে চলেছে। কেন-বেতওয়া লিঙ্ক প্রকল্পের ঐতিহাসিক কাজ মধ্যপ্রদেশে শুরু হয়েছে এবং বিজেপি সরকার সেচের জন্য বান্দা-ব্রিহ সেচ প্রকল্পের কাজকেও গতি দিয়েছে। মধ্যপ্রদেশে মহাসড়কের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে, নর্মদা প্রগতি পথ, বিন্ধ্য প্রগতি পথ, মালওয়া-নিমার প্রগতি পথ, মধ্য ভারত প্রগতি পথ, বুন্দেলখণ্ড প্রগতি পথ এবং অটল প্রগতি পথের মতো এক্সপ্রেসওয়েগুলি মধ্যপ্রদেশের পরিচয় হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার মধ্যপ্রদেশকে ৩৫০টিরও বেশি রেল প্রকল্প উপহার দিয়েছে। সাগরে একটি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজও নির্মাণ করা হয়েছে। বিন রিফাইনারীতে ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পেট্রো-কেমিক্যাল কমপ্লেক্সের কাজও শুরু হয়েছে। বিজেপি সরকার মধ্যপ্রদেশে পরিকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার দিকনির্দেশনায় কাজ করেছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মোহন যাদব শিল্পের প্রসারের জন্য অবিরাম কাজ করে চলেছেন।

শ্রী মোদী বলেছেন, দেশের জনগণের ভোটই ভারতকে বিদেশে গর্বিত করেছে, দেশের শত্রুদের নীরব করেছে এবং ৫০০ বছর পর রামলালাকে রাম মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গত ১০ বছরে যে কাজ করা হয়েছে তা কেবল একটি ট্রেলার, এখন আমাকে দেশকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আদিবাসী বিপ্লবী সর্দার গঞ্জন সিং কোরকু এবং সর্দার বিষ্ণু সিং গৌউনের অবদান কখনও ভুলে যাওয়া যাবে না। বিজেপি সরকার ভগবান বিরসা মুণ্ডার জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় জনজাতি গৌরব দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছে এবং লক্ষ লক্ষ আদিবাসীদের বন অধিকার দিয়েছে। গত ১০ বছরে করা কল্যাণমূলক কাজ আদিবাসী মহিলাদের জীবনকে সহজ করেছে। মোদী সরকার বেতুল সহ সমগ্র মধ্যপ্রদেশের কৃষকদের জন্য অনেক কল্যাণমূলক কাজ সম্পন্ন করেছে। অন্যদিকে তেলেঙ্গানার কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী রেভন্থ রেড্ডি একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে সংরক্ষণ দেওয়ার কথা বলছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র মায়ের সন্তান মোদী দেশের মা-বোনদের জন্য অনেক কাজ করেছেন। করোনার সময় মোদী সরকার মহিলাদের রান্নাঘরে রেশনের ঘাটতি হতে দেয়নি। এখনও দেশের ঘরে ঘরে গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় শস্য রান্না হচ্ছে। দেশের ৮০ কোটি পরিবার আগামী ৫ বছর ধরে খাদ্যশস্য পেতে থাকবে এটাই মোদীর গ্যারান্টি। মোদী সরকার দেশের মা-বোনদের প্রতিটি বাড়িতে জল, বিদ্যুৎ এবং শৌচাগারের মতো মৌলিক সুবিধা দিচ্ছে। মোদী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ৩ কোটি মহিলাকে লাখপতি দিদি বানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

শ্রী মোদী বলেন যে আজ কংগ্রেস সম্পর্কে এমন একটি সত্য প্রকাশ পেয়েছে, যা শোনার পরে প্রতিটি দেশবাসী হতবাক হয়ে গেছে। দেশের সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে ধর্মের ভিত্তিতে কোনো সংরক্ষণ দেওয়া হবে না। বাবা সাহেব আম্বেদকর নিজে ধর্মের নামে সংরক্ষণের বিরুদ্ধে ছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস আগেই ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং তা পূরণ করতে কংগ্রেস বছরের পর বছর বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। দেশবাসীর চোখে ধুলো দিচ্ছে কংগ্রেস। কংগ্রেস ২০০৪ সালে অন্ধ্রপ্রদেশে ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ দিয়ে সংবিধানের মূল বিষয়কে লঙ্ঘন করেছিল। এর পরে ২০০৯ এবং ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস দুইবারই ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কংগ্রেস এসসি, এসটি এবং ওবিসি-দের ১৫ শতাংশ সংরক্ষণ তুলে দিয়ে ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ করতে চায়। কর্ণাটকে আগের কংগ্রেস সরকার ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ দিয়েছিল। কিন্তু বিজেপি সরকার গঠনের পর বিজেপি বাবা সাহেবের সংবিধানের প্রতি সম্মান রেখে ধর্ম ভিত্তিক সংরক্ষণ বাতিল করেছে। আবারও কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার ওবিসি সম্প্রদায়ের চোখে ধুলো দিয়ে ওবিসি কোটায় একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এটাই কংগ্রেস সারা দেশে প্রয়োগ করতে চায়। নির্বাচন আসবে যাবে, কিন্তু এই বিপজ্জনক খেলা দেশের মানুষের আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেবে। ওবিসি সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় শত্রু কংগ্রেস। কংগ্রেস সামাজিক ন্যায়বিচারকে হত্যা করেছে। কংগ্রেস সংবিধানের চেতনা লঙ্ঘন করে বাবা সাহেবকেও অসম্মান করেছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে এসসি, এসটি এবং ওবিসিদের সংরক্ষণ বাতিল করে মুসলমানদের সংরক্ষণ দেওয়ার খেলা বন্ধ করতে মোদীর ৪০০ আসনের প্রয়োজন। মোদীকে দলিত, আদিবাসী ও ওবিসিদের সংরক্ষণ বজায় রাখতে হবে। কংগ্রেস জনগণের সম্পত্তি নিয়ে নিতে চায়। কংগ্রেস দেশে জনগণের সম্পত্তি নিয়ে সমীক্ষা করে সাধারণ মানুষের অতিরিক্ত সম্পত্তি এবং মহিলাদের গয়না কেড়ে নিয়ে তাদের ভোটব্যাঙ্ক এর লোকজনকে দেওয়ার কথা বলে। এটা জনগণের কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। আজ কংগ্রেসের লুকানো এজেন্ডা বেরিয়ে এসেছে। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তিতেও কংগ্রেস কর আরোপের কথা বলছে। ভারতের প্রতিটি বাড়িতে প্রবীণরা তাদের নাতি-নাতনিদের জন্য সম্পত্তি রেখে যান। কিন্তু কংগ্রেস এতেও কর আরোপ করতে চায়। কংগ্রেস ভারতের সামাজিক মূল্যবোধ থেকে এতটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যে পারিবারিক মূল্যবোধ সম্পর্কেও তাদের কোনো ধারণা নেই। ভারতীয়রা তাদের প্রয়োজন অনুসারে অর্থ ব্যয় করে এবং বাকিটা সঞ্চয় করার চেষ্টা করে। কিন্তু কংগ্রেস এটাও লুট করতে চায়। কংগ্রেস দেশ ও সংবিধানকে অসম্মান করে, তাই তারা দেশের মানুষের বিশ্বাসকে সবদিক দিয়ে দুর্বল করতে চায়। ইন্ডি জোট এখনও তাদের নেতা চূড়ান্ত করতে পারেনি। কিন্তু বিজেপিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোদী। তাঁর ১০ বছরের কাজের হিসাব এবং আগের ২৫ বছরের উন্নয়নের জন্য একটি খতিয়ান রয়েছে বিজেপির কাছে। প্রতি বছরই ইন্ডি জোটের দলগুলো নতুন প্রধানমন্ত্রীর ভাবনাচিন্তা করে। এটা মুঙ্গেরিলালের সুন্দর স্বপ্ন নয়, বরং দেশকে ধ্বংস করার কৌশল।

মানণীয় মোদী বলেন যে, কংগ্রেস ভগবান রামকে কাল্পনিক বলে। ভগবান রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণও ওরা প্রত্যাখ্যান করেছিল। জনগণ এখন কংগ্রেসকে প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কংগ্রেসের বিরোধিতা শুধু অযোধ্যা ও রাম মন্দিরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, ভক্তদের মন্দিরে যাওয়া নিয়েও তাদের সমস্যা রয়েছে। গত বছর যখন আমি মধ্যপ্রদেশে সন্ত রবিদাস মন্দিরের উদ্বোধন করেছিলাম, কংগ্রেস নেতারা সেই সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল একজন মহান দলিত সাধুর মন্দিরও কংগ্রেস পছন্দ করে না।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত জনতার কাছে আবেদন করেন, ৭ মে স্থানীয় বিজেপি প্রার্থীদের বিজয়ী করে দেশ গঠনে তাদের ভূমিকা পালন করার জন্য এবং দেশে আবার মোদী সরকার গঠন করে বিকশিত ভারত গড়ায় অবদান রাখার জন্য ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *