নিজস্ব প্রতিনিধি, কৈলাসহর, ৫ মে: কৈলাসহর থানার বড়সড় সাফল্য, পাইতুরবাজার এলাকায় দোকান চুরি কান্ডে ১২ ঘন্টার মধ্যে পুলিশের জালে উঠে এলো চোর।
বিগত বেশ কিছুদিন যাবৎ চুরি কান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন কৈলাসহরের পাইতুরবাজার এলাকার ব্যবসায়ী সহ সেখানকার স্থানীয় মানুষ। কখনো মিষ্টির দোকান,কখনো বা ঔষধের দোকান আবার কখনো মাছ,মাংস ও সবজি ব্যবসায়ীর দোকানকে টার্গেট করে প্রতিনিয়ত চুরি কান্ড ঘটায় দীর্ঘ দিন ধরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে ছিলো গোটা এলাকায়।
গত তেসরা মে গভীর রাতে মিষ্টি বিক্রেতা অরুণ কুমার রায়ের দোকানে চুরি কান্ড ঘটার পর নড়ে চড়ে বসেন সেখানের ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী সহ স্থানীয় জনগন চুরি কান্ডের বিরুদ্ধে পথ অবরোধে সামিল হয়েছিলেন চার মে শনিবার সকাল ৯টা থেকে। সাথে সাথেই কৈলাসহর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জয়ন্ত কর্মকারের নির্দেশে অবরোধকারীদের সাথে কথা বলেন কৈলাসহর থানার এস.আই উজ্জ্বল বাবু। উনি অবরোধকারীদের কথা দেন পুলিশ খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং প্রকৃত চোরদের পুলিশের জালে তোলা হবে।
সেই মোতাবেক অবরোধকারীরা পথ অবরোধ তোলে নেওয়ার সাথে সাথে চুরিকান্ডে জড়িত থাকার পান্ডাদের দিনভর খোঁজাখুজির পর বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর নিয়ে একজনকে গতকাল রাতে অর্থাৎ ৪টা মে গ্রেফতার করে কৈলাসহর থানার পুলিশ। চুরিকান্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে কৈলাসহর পুর পরিষদ এলাকার কালিপুরের এক বাড়ি থেকে অঞ্জন দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত অঞ্জন দাস কালীপুর এলাকায় এক বাড়িতে ভাড়া থাকতো। ধৃত অঞ্জন দাস এর আগেও বহু চুরির সাথে যুক্ত ছিলো।
কৈলাসহরের চন্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা অঞ্জন দাস নিজ গ্রামে চুরি কান্ডে হাতেনাতে ধরা পড়ার পর গ্রামবাসীরা অঞ্জন দাসকে উত্তম মধ্যম দিয়ে চন্ডীপুর গ্রাম থেকে বের করে দেয়। চন্ডীপুর গ্রাম থেকে বিতারিত হবার পর বিগত এক বছর ধরে কৈলাসহরের কালীপুর এলাকায় ভাড়া থেকে প্রতিনিয়ত চুরি কান্ড করে যেত অঞ্জন দাস। দোকান থেকে চুরি যাওয়া নগদ কিছু টাকা সহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার সহ চুরি কান্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা সহ লোহার রড ধৃত অঞ্জন দাসের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা নিয়েছে কৈলাসহর থানার পুলিশ যার মামলার নম্বর ৪৩/২০২৪। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ আই.পি.সি ধারায় মামলা নেওয়া হয়েছে বলে জানান মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জয়ন্ত কর্মকার।তিনি বলেন, তেসরা মে গভীর রাতে চুরিকান্ড সংগঠিত হওয়ার মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে বিভিন্ন সুত্রের খবর অনুযায়ী অঞ্জনকে পুলিশের জালে তোলা হয়। ৫ই মে রোববার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তবে পাইতুরবাজার এলাকায় চুরিকান্ডে অঞ্জনের জবানবন্দি অনুযায়ী আরো কয়েকজনকে গ্রেফতার করতে পারে বলে পুলিশ সুত্রে খবর। তবে, ইদানীং কালে ঘন ঘন পাইতুরবাজার এলাকায় দোকান চুরির পর তেসরা মে শুক্রবার গভীর রাতে অরুন রায়ের মিস্টির দোকান চুরির পর পাইতুরবাজার এলাকার সমস্ত ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে চার মে শনিবার সকালে যেভাবে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলো এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ যেভাবে পজিটিভ মনোভাব নিয়ে চুরি কান্ডে জড়িত অঞ্জন দাসকে অতি দ্রুত গ্রেফতার করেছে তাতে সকলেই পুলিশের ভুমিকার প্রশংসা করছে।
বেশ কয়েকদিন ধরে পাইতুরবাজার এলাকায় চুরিকান্ড সংগঠিত হওয়ার পর কৈলাসহর পুলিশের সাফল্যে খুশি শহরের মানুষ। তবে স্থানীয়দের ধারনা আদালতের নির্দেশে যদি পুলিশ তাদেরকে রিমান্ডে পায়,তাহলে আরো অনেকের সন্ধান পাওয়া যাবে বলেই অনুমান ওয়াকিবহাল মহলের।