BRAKING NEWS

ওয়ার্ধার জনসভা থেকে সরকারের প্রাপ্তিগুলি তুলে ধরে আবারও মোদী সরকার গঠনের আহ্বান মোদীর

ওয়ার্ধা, ১৯ এপ্রিল (হি. স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধায় আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দিয়েছেন। এদিন এই কর্মসূচিতে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস, মহারাষ্ট্র বিজেপি রাজ্য সভাপতি শ্রী চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে, ওয়ার্ধা লোকসভা প্রার্থী শ্রী রামদাস চন্দ্রভাঞ্জি তডস এবং অমরাবতী লোকসভা প্রার্থী শ্রীমতি নবনীত রানা এবং অন্যান্য নেতারা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জি সনাতন ধর্ম বিরোধী এবং দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ার জন্য ইন্ডি জোটকে তীব্রভাবে নিশানা করেছেন এবং গত ১০ বছরে কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের প্রাপ্তিগুলি তুলে ধরে আবারও মোদী সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে তিনি গুজরাটে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তাই ওয়ার্ধা এবং অমরাবতীর সাথে তাঁর একটি ভালো সম্পর্ক রয়েছে। জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীও গুজরাটে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁর জন্মস্থান ছিল ওয়ার্ধা। ২০২৪ সালের নির্বাচন বিকশিত ভারত এবং স্বনির্ভর ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়নের নির্বাচন। পূজনীয় বাপুজি এই স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বাধীনতার আগে। এখন যখন দেশ এই দিকে নির্ণায়কমূলক পদক্ষেপ নিতে চলেছে, তখন ওয়ার্ধার বিশেষ সহযোগিতা প্রয়োজন। অমরাবতী ও ওয়ার্ধা থেকে মানুষের এই বিশাল আগমন বলে দিচ্ছে বিকশিত ভারতের লক্ষ্য বেশি দূরে নয়। এর আগেও ওয়ার্ধায় নির্বাচনী সভায় এসেছি, কিন্তু আজকের মতো ভিড় দেখিনি। আজ আবারও মহারাষ্ট্র জুড়ে ফের একবার মোদী সরকারের স্লোগান ধ্বনিত হচ্ছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে ২০১৪ সালের আগে সারা দেশ জুড়ে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছিল। দেশে একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল যে ভালো কিছু হবে না। গ্রামীণ এলাকার মানুষ মনে করেছিল যে তাদের গ্রামে বিদ্যুৎ, জল এবং রাস্তা পৌঁছাবে না। দরিদ্র মানুষরা মনে করেছিল যে তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মও এই দারিদ্র্যতা থেকে মুক্তি পাবে না। কৃষকরা এই দুর্দশাকে তাদের ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছিল। মহিলারাও মনে করেছিলেন যে তাদের সমস্যার সমাধান হবে না। যাদেরকে কেউ গুরুত্ব দেয়নি, গরিব মায়ের সন্তান মোদী তাদের পুজো করে। বিজেপি সরকার গত ১০ বছরে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্তা থেকে বের করে এনেছে। মোদী সরকার দেশের প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে এবং ১১ কোটি বাড়িতে কলের জলের সংযোগ দিয়েছে। গত ১০ বছরে ৪ কোটিরও বেশি মানুষ স্থায়ী ঘর পেয়েছে এবং ৫০ কোটিরও বেশি মানুষ ব্যাঙ্কিং ব্যাবস্থার সাথে যুক্ত হয়ে অর্থনীতির অংশ হয়েছে। দেশের প্রতিটি মানুষের সেবা করতে হবে, যোগ্য মানুষ যারা এখনও গ্যাস সংযোগ, কলের জল এবং স্থায়ী ঘর পাননি, মোদী সরকার অবশ্যই আগামী ৫ বছরে সেই সমস্ত অভাবী লোকদের সমস্ত সুবিধা প্রদান করবে। এখন বিজেপি কর্মীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে জনগণের কাছে এই গ্যারান্টি দিতে হবে, কারণ জনগণের কাছে প্রতিটি বিজেপি কর্মী মোদীর সমতুল্য। আমার কাছে দেশের মানুষ ও দলের প্রত্যেক কর্মীই মোদী।

গ্যারান্টির কথা উল্লেখ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে আজ আত্মবিশ্বাসে ভরা এই দেশ এখন মোদীর গ্যারান্টির দিকে তাকিয়ে আছে। যখন সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি থাকে, একটি রোডম্যাপ থাকে এবং মনের মধ্যে কাজ করার সংকল্প থাকে, তখন যত বাধাই আসুক না কেন, মোদী অজুহাত না দেখিয়ে কাজ করে দেখান এবং তারপর গ্যারান্টিও পূরণ হয়। মোদীর জন্য এই গ্যারান্টি কেবল তিন অক্ষরের খেলা নয়, গ্যারান্টির পিছনে প্রতিটি মুহূর্ত ব্যয় করার উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রতিটি মুহূর্ত মানুষের নামে, প্রতিটি মুহূর্ত দেশের নামে, যার অর্থ ২০৪৭ সালের জন্য ২৪x৭। বিজেপি তার সংকল্প পত্রে বলেছে যে আগামী ৫ বছরে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে গরিবদের জন্য ৩ কোটি নতুন বাড়ি তৈরি করা হবে। দেশের প্রতিটি ঘরে কলের জল পৌঁছে যাবে, ৭০ বছরের বেশি বয়সীদের বিনামূল্যে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা দেওয়া হবে। উজ্জ্বলা প্রকল্পের আওতায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতে পাইপের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করা হবে। বন্দে ভারত-এর মতো আধুনিক ট্রেন দেশের প্রতিটি কোণে ছুটবে এবং দেশ বুলেট ট্রেনের স্বপ্নও পূরণ হতে দেখবে, চন্দ্রযানও দেখা যাবে, গগনযানও দেখা যাবে। দেশের মা, বোন ও কন্যাদের ক্ষমতায়ন ছাড়া বিকশতি ভারত সম্ভব নয়। গত ১০ বছরে, বিজেপি স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির আন্দোলন তৈরি করে মহিলাদের অর্থনৈতিক অংশগ্রহণের পথ খুলে দিয়েছে। শুধুমাত্র ওয়ার্ধাতেই, ১.৫ লক্ষেরও বেশি পরিবারের মহিলারা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিতে জড়িত৷ এনডিএ সরকার ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ওয়ার্ধার মহিলাদের জন্য ১২০০ কোটি টাকারও বেশি সাহায্য পাঠিয়েছে। মোদীর গ্যারান্টি হল বিজেপি আগামী ৫ বছরে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কোটি কোটি মহিলাকে নতুন লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় এবং ৩ কোটি বোনকে লাখপতি দিদি করা হবে। গ্রামের মেয়েদের ড্রোন চালানো এবং ড্রোন পাইলট হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

কংগ্রেস এবং ইন্ডি জোটকে উন্নয়ন বিরোধী এবং কৃষক বিরোধী হিসাবে বর্ণনা করে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, কংগ্রেস এবং ইন্ডি জোটের চিন্তাভাবনা সবসময়ই উন্নয়ন বিরোধী এবং কৃষক বিরোধী। যে কারণে কয়েক দশক ধরে দেশের কৃষকদের অবস্থা এমন খারাপ। পরিবারের নামে ভিত্তিপ্রস্তর তো স্থাপন হতো কিন্তু কয়েক প্রজন্ম পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ হত না। কংগ্রেস সরকারের এই মনোভাবের জন্য বিদর্ভকে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে, কিন্তু বিজেপি সরকার বিদর্ভকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডে, উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস এবং শ্রী অজিত পওয়ার জনসাধারণের সেবায় নিয়োজিত আছেন। এনডিএ সরকার বালা সাহেব ঠাকরে সমৃদ্ধি হাইওয়ে নির্মাণ করছে এবং প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয়ে নাগপুর ও গোয়ার মধ্যে একটি গ্রিন হাইওয়ের কাজও চলছে। ওয়ার্ধা, সেবাগ্রাম, পুলগাঁও এবং হিঙ্গন ঘাটের মতো এলাকায় উন্নত রেল পরিষেবা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ধা, ইয়াভাতমাল এবং নান্দেদের মধ্যে রেললাইনের প্রকল্প এবং ওয়ার্ধা থেকে বল্লারশাহ পর্যন্ত রেললাইন এই অঞ্চলের সংযোগ বাড়াচ্ছে এবং দমনগাঁও রেলওয়ে স্টেশন পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। সিঙ্গেল রেললাইনকে ব্রডগেজে রূপান্তর করতে বিজেপি সরকার পৃথক তহবিলের ব্যবস্থা করেছে। ওয়ার্ধার সিদ্ধিতে ড্রাইভ পোর্টের কাজও শেষ হয়েছে। বিজেপি সরকার অমরাবতীতে একটি টেক্সটাইল পার্কও তৈরি করছে। এর অর্থ হল কংগ্রেসের ছড়িয়ে পড়া পশ্চাৎপদতা থেকে বিদর্ভ বেরিয়ে আসবে। পরিকাঠামো এবং শিল্পের অনগ্রসরতার কারণেই বিদর্ভের কৃষকদের এত দশক ধরে অর্থনৈতিক ধ্বংসের মুখে পড়তে হয়েছে। রেলপথ, মহাসড়ক ও আকাশপথ হয়ে উঠবে দেশের কৃষকদের সমৃদ্ধির মহাসড়ক।

বিদর্ভ অঞ্চলের উন্নয়নে এনডিএ সরকারের অবদান নিয়ে আলোচনা করে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ওয়ার্ধা এবং অমরাবতীতে সেচের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে কৃষকদের জন্য দুর্দশার কারণ। কিন্তু বিগত সরকারগুলি কখনোই এদিকে সততার সাথে কাজ করেনি। ২০১৪ সালে ৯৯টি সেচ প্রকল্প ছিল, যা বছরের পর বছর ধরে আটকে ছিল। এই প্রকল্পগুলির বেশিরভাগই ছিল মহারাষ্ট্রের জন্য। এনডিএ সরকার এই সব সম্পূর্ণ করার জন্য কাজ করেছে। এখন লোয়ার ওয়ার্ধা সেচ প্রকল্প এবং অমরাবতীর নিম্ন পেডি সেচ প্রকল্প কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হতে চলেছে। সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি সম্ভাবনা তৈরিতেও কাজ করছে বিজেপি সরকার। বিজেপি সরকার অমরাবতীর কমলা এবং ওয়ার্ধার হলুদকে ওয়ান ডিস্ট্রিক্ট ওয়ান প্রোডাক্টের অধীনে আলাদা স্বীকৃতি দিয়েছে যাতে এখানকার কৃষকরা উপকৃত হতে পারেন। বিজেপি সরকার প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধির অধীনে ওয়ার্ধার কৃষকদের ৩০০ কোটি টাকারও বেশি সুবিধা দিয়েছে।

কংগ্রেস এবং ইন্ডি জোটকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, এখন ইন্ডি জোট বিজেপির উন্নয়নের সামনে ইস্যুর অভাব নিয়ে সংগ্রাম করছে। সেই কারণেই এখন বিরোধী নেতারা কুকথা এবং অপমানের রাজনীতির আশ্রয় নিয়েছে। যে নেতারা তামিলনাড়ুতে সনাতন ধ্বংসের কথা বলেন, ইন্ডি জোটের মহারাষ্ট্র দলগুলি একই নেতাদের নিয়ে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের ভূমিতে সমাবেশের আয়োজন করে। কংগ্রেস সহ ইন্ডি জোটের দলগুলিও ৫০০ বছরের অপেক্ষার পরে বিশাল রাম মন্দিরে স্থাপিত রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা মহোৎসব বয়কট করেছে। ভগবান রামের মন্দিরে প্রথমবারের মতো আয়োজিত রামনবমীর সময়, সূর্য তিলক সমস্ত রাম ভক্তকে ভক্তিতে সিক্ত করেছিল, কিন্তু ইন্ডি জোটের এক নেতা ভগবান রামের সূর্য তিলককে ভণ্ডামি বলে সারা দেশের বিশ্বাসকে অপমান করেছিলেন। এটাই কংগ্রেস ও তাঁদের সহযোগীদের আসল চেহারা। মহারাষ্ট্রে শ্রী একনাথ শিন্ডের সরকার লানু জি মহারাজ দেবস্থান পুনর্নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইন্ডি জোটের নেতারা শক্তিশালী হলে এরও বিরোধিতা করবে। তাই ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের ভূমিতে কংগ্রেসের এই পাপের জবাব দিতে হবে জনসাধারণকে। কংগ্রেসও জানে যে তারা নির্বাচনে জিততে পারবে না, তাই কংগ্রেসের শেহজাদা রাহুল গান্ধী ফলাফলের পর দেশে আগুন লাগানোর হুমকি দিচ্ছেন। সংবিধানকে বন্দী করে জরুরি অবস্থা জারি করার মানসিকতা এখনও বদলায়নি। কিন্তু এখন দেশ ফের একবার মোদী সরকারের প্রতি মনস্থির করেছে। দেশের জনগণ একটি শক্তিশালী, সিদ্ধান্তমূলক ও স্থায়ী সরকার চায়। তাই কংগ্রেস বা ইন্ডি জোটকে ভোট দেওয়া আপনার ভোটের অপচয়। মহারাষ্ট্রের প্রতিটি ভোট হবে উন্নয়নের জন্য।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজি আগামী ২৬ এপ্রিল প্রতিটি ভোটদান কেন্দ্র জিতে এবং স্থানীয় প্রার্থীদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে বিজয়ী করে দেশে ফের একবার মোদী সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। ৩৭০ টিরও বেশি আসনে বিজেপিকে বিজয়ী, একটি বিকশিত ভারত গঠনে অবদান রাখতে এবং জনগণের কাছে বিজেপির বার্তা পৌঁছে দেওয়ার আবেদন করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *