BRAKING NEWS

মনে র বি ষয়: প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘মন কি বাত’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সর্বজনীনভাবে একজন ব্যতিক্রমী প্রতিভাবান সংযোগকারী হিসাবে স্বীকৃত, যিনি জনসাধারণের সাথে তাৎক্ষণিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন । তাঁর এই দর্দুর্দান্ত বক্তৃতার দক্ষতা অনন্য দক্ষতার ব্যাখ্যাগুলির মধ্যে একটি মাত্র । তিনি যে আন্তরিকতার সাথে কথা বলেন, যে সততার জন্য তিনি পরিচিত এবং গত আট বছরে জনগণের সাথে তিনি যে আস্থা-ভিত্তিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন তা একজন গণযোগাযোগকারী হিসাবে সাফল্যের অন্যতম অবদান ৷
তাঁর অন্তর্ভুক্তিমলকূ দষ্টিৃ ভঙ্গি দেশজড়েু অভূতপূর্ব গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে । এটি প্রধানমন্ত্রী মোদীর জনকেন্দ্রিক উন্নয়নের মডেল যা তাকে বিপুল সংখ্যক মানষেু র কাছে প্রিয় করে তুলেছে৷ ২০১৪ সালের অক্টোবরে চালু হওয়া জনগণের সাথে নিরবচ্ছিন্ন মত বিনিময়ের এই অনভিজাত ধারণা আজ ‘মন কি বাত’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে৷ বছরের পর বছর ধরে এটি মাসের শেষ রবিবারের একটি নির্দিষ্ট দিনে পরিণত হয়েছে । একটি রেডিও বক্তৃতা হিসাবে শুরু হয়েছিল এটি; যা এখন একযোগে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে একাধিক ভাষায় সম্প্রচারিত হয় ।

‘মন কি বাত’-এ দেখা যাচ্ছে, দ’জন ু মোদী রয়েছেন- একজন, শক্তিশালী, ক্ষমতাশালী, উদ্দেশ্যপূর্ণ প্রধানমন্ত্রী
মোদী । এবং অন্যজন, কোমল, দয়াল, ভু দ্র পরিবারের একজন কর্তা রূপে মোদী । আপনি যদি চোখ বন্ধ করে ‘মন কি বাত’ শোনেন, তাহলে আপনি ভাববেন যে মোদীজি গ্রামের চৌপালে বসে মানষেু র সঙ্গে কথা বলছেন- তাঁদের কথা শুনছেন, যেখানে প্রয়োজন সেখানে ঋষিদের মত পরামর্শ দিচ্ছেন, অথবা দষ্টৃ ান্তমলকূ কাজের জন্য কারোর প্রশংসা করছেন । সম্প্রতি তিনি দর্ঘুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সাথে তার কথোপকথনের বিষয়টি ভাগ করেছেন যারা সাহসের সাথে তাদের প্রিয়জনের অঙ্গ দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । মোদীজি অঙ্গদানের মহৎ ধারণাটি প্রচারের জন্য সেই আলোচনাপর্বটিকে ব্যবহার করেছিলেন । জলবায়ুর চরম পরিস্থিতি মোকাবেলা করা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি থেকে শুরু করে সাধারণ মানষুকে তাদের ভাল কাজের জন্য অসাধারণ হৃদয় দিয়ে প্রশংসা করা- এমন অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে । প্রধানমন্ত্রী মোদির ‘মন কি বাত’ মলতূ বাস্তব জীবনের গল্প এবং অভিজ্ঞতার এমন কিছু গল্প যা লটিু য়েনস দিল্লির সংকীর্ণ সীমানা ছাড়িয়ে বিদ্যমান প্রকৃত ভারতকে উদ্ভাসিত করে । এটাই তুলে ধরে যে কেন ‘মন কি বাত’-এর প্রতিটি পর্ব অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং হাজার হাজার মানষেু র সাড়া পাচ্ছে । এই মন কি বাত জনগণের মনের সাথে অনরুণিত হয় কারণ এটি তাদের নিয়ে ।
মন কি বাতের প্রথম পর্বটি ২০১৪ সালের ৩ অক্টোবর প্রচারিত হয়েছিল। এটি ৩০ এপ্রিল, ২০২৩ এ ১০০ তম পর্ব পূর্ণ করবে । মন কি বাত তার বিষয়বস্তু, নকশা, সম্মিলন এবং সামগ্রিকভাবে মানষু এবং সমাজের সাথে যোগাযোগের উদ্ভাবনী উপায়ের দিক থেকে একটি অনন্য । ২৬২টি রেডিও স্টেশন এবং ৩৭৫টিরও বেশি বেসরকারি ও কমিউনিটি রেডিও স্টেশন নিয়ে বিশ্বের বহৃ ত্তম রেডিও নেটওয়ার্ক ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’র মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশে পৌঁছে গেছেন৷ কেবল সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ইস্যুতেই নয়, বরং বিশ্ব আজ যে চ্যালেঞ্জিং সমস্যার মখু োমখিু হচ্ছে, যেমন জলবায়ু পরিবর্তন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি সংকট ইত্যাদি সম্পর্কে তাদের অনপ্রুাণিত ও উজ্জীবিত করেছেন ।
ভারতীয় সরকারি প্রচার সংস্থা প্রসার ভারতী ১১ টি বিদেশী ভাষা সহ ৫২ টি ভাষা / উপভাষায় মন কি বাতের অনবাদ ু সম্প্রচার করছে, যা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে পৌঁছে দিচ্ছে এবং ভারতীয় প্রবাসীদের কাছেও নিয়ে যাচ্ছে । মন কি বাত ভারতের প্রথম ভার্চুয়াল সমদ্ধৃ রেডিও প্রোগ্রাম যা একই সাথে টিভি চ্যানেলগুলির মাধ্যমেও সম্প্রচারিত হয় । দরদূ র্শন নেটওয়ার্কের ৩৪ টি চ্যানেল এবং ১০০ টিরও বেশি বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল এই উদ্ভাবনী অনষ্ঠু ানটি দেশের সর্বত্র সম্প্রচার করে, যোগাযোগের এই ঐতিহ্যবাহী মাধ্যম সম্পর্কে নতুন করে আগ্রহ এবং সচেতনতা তৈরি করছে । ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি মাসে ৬০ মিলিয়নেরও বেশি মানষেু র কাছে ডিজিটালভাবে পৌঁছানোর এই বিষয়টি নিয়ে একটি কেতাদরূন্ত পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়েছে যেখানে বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন স্তরের চেঞ্জমেকারদের নিবন্ধও উল্লেখ রয়েছে ৷
এত বিশাল প্রভাবের সাথে, মন কি বাতকে ব্যাপকভাবে (এবং সঠিকভাবে) একটি সামাজিক বিপ্লব হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে এবং জন অংশীদারিত্বে এর শক্ত ভিত্তি খুজেঁ পাওয়া গেছে । অনষ্ঠু ানের নাম প্রণয়ন করা থেকে শুরু করে বিষয় নির্বাচন পর্যন্ত এবং প্রধানমন্ত্রীর এই কর্মসর্ম ূচিতে অন্তর্ভুক্ত পদক্ষেপের আহ্বান পর্যন্ত নাগরিক যুক্ত করা এবং তাদের অংশগ্রহণের ধারণাকে কেন্দ্র করে এই প্রোগ্রামটি কল্পনা ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে । প্রতিটি পর্বই নাগরিকদের রূপান্তরকারী শক্তির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অবিচল বিশ্বাসের কথা প্রত্যেক মাসে স্মরণ করিয়ে দেয় এবং প্রশাসনে জন অংশীদারিত্বকে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে । ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী সারা দেশের লক্ষ লক্ষ মানষেু র কাছে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছেন । তিনি দেশের জন্য তার দষ্টিৃ ভঙ্গির কথা মানষেু র কাছে তুলে ধরার জন্য প্ল্যাটফর্মটির্ম কে ব্যবহার করেন এবং জাতি গঠন প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ চান ।
‘মন কি বাত’-এর মলূ উদ্দেশ্য হল ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং এদেশের নাগরিকদের মধ্যে সরাসরি সংযোগ গড়ে তোলা । প্রতি মাসে প্রধানমন্ত্রী সারা দেশ থেকে লক্ষ লক্ষ চিঠি পান, যা তিনি অনষ্ঠু ানের সময় আলোকপাত করেন । শো চলাকালীন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে জনগণের টেলিফোনে কথোপকথন হওয়াও অস্বাভাবিক নয় । নির্বাচিত নেতা ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগের এ ধরনের মাধ্যম গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থার প্রতি জনগণের বিশ্বাসকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করে ।
৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে ৯৯ টি পর্বের সফল কোর্স জড়েু , মন কি বাত কেবল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টাই করেনি বরং সামাজিক ও জাতীয় কারণগুলিতে পদক্ষেপ নিতে তাদের অনপ্রুাণিত করেছে । এই প্রোগ্রামের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হ’ল
পরিবর্তনকারীদের অনপ্রেু রণামলকূ গল্প তুলে ধরা, যারা মাঠে নিরলসভাবে এবং নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছেন এবং যা কেবল তাদের কাছে এই কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনপ্রেু রণার উৎসই নয় বরং লক্ষ লক্ষ মানষুকে অনপ্রুাণিত করে ।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে মন কি বাত জন আন্দোলনের একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে যা সারা দেশ জড়েু বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাথে জড়িত সামাজিক আন্দোলনকে অনপ্রুাণিত করছে । অনষ্ঠু ানে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সামাজিক বার্তা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ট্রেন্ডে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই গণআন্দোলন (জনআন্দোলন) হয়ে ওঠে। স্বচ্ছ ভারত অভিযান, বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও, কোভিড টিকাকরণ এবং হর ঘর তিরঙ্গার মত কয়েকটি কর্মসর্ম ূচী এর কয়েকটি গৌরবময় উদাহরণ। সম্প্রতি ‘মন কি বাত’-এর ৮৮তম পর্বে প্রধানমন্ত্রী জল সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন এবং নাগরিকদের তাঁদের এলাকায় অমতৃ সরোবর গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন । কয়েক মাসের মধ্যে, বার্তাটি জনআন্দোলনে রূপান্তরিত হয়েছিল এবং এরফলে দেশজড়েু অসংখ্য অমতৃ সরোবর তৈরি হয়েছিল যা এই অঞ্চলের সরকারি সংস্থার সহায়তায় স্থানীয়দের দ্বারা তৈরি হয়েছিল । পরবর্তীতে, ৯২ তম পর্বে প্রধানমন্ত্রী উত্তর প্রদেশের ললিতপুরে ভগত সিং অমতৃ সরোবর এবং কর্ণাটর্ণ কের বিলকেরুরের অমতৃ সরোবরের মতো বিভিন্ন অমতৃ সরোবরের কথা উল্লেখ করে নাগরিকদের দ্রুত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছিলেন৷

‘সশক্ত ভারত’ গড়ে তোলার দষ্টিৃ ভঙ্গিকে আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়ে মন কি বাত দেশের জাতীয় ও বৈশ্বিক সাফল্যকে তুলে ধরার প্রতি নজর দিয়েছে এবং নাগরিকদের মধ্যে গর্ব, স্বকীয়তা এবং জাতীয়তাবাদের অনভুূতি জাগিয়ে তোলার পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে অংশ নেওয়ার জন্য জনগণকে আহ্বান জানিয়েছে । ৮৯তম পর্বে প্রধানমন্ত্রী ভারতে ইউনিকর্নের সংখ্যা ১০০-এ পৌঁছানোর বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন; ৯১তম পর্বে হর ঘর তিরঙ্গা অভিযানের গণঅংশগ্রহণ এবং দেশব্যাপী সাফল্য উদযাপন করা হয়েছে, এতে প্রতিটি ভারতীয়ের হৃদয় গর্বে ভরে উঠেছে এবং এই জাতীয় আরও অনেক উদাহরণ রয়েছে যাতে মনে হয়েছে যে মন কি বাত কেবল একটি রেডিও প্রোগ্রাম নয়, এটি ভারতের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণের একটি প্রতিফলন।
‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি স্তরের মানষেু র কাছে কল্যাণমলকূ প্রকল্প ও নীতিগুলি পৌঁছে দেওয়ার এবং এ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করার জন্য সফলভাবে একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন । শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পগুলি কীভাবে তৃণমলূ স্তরের মানষুকে উপকৃত করে এবং আরও বেশি মানষুকে সুবিধাভোগী হতে অনপ্রুাণিত করে তার সাফল্যের গল্পগুলিও প্রধানমন্ত্রী সকলের সামনে তুলে ধরেছেন । এমনকি কোভিড মহামারীর মতো সঙ্কটের সময়েও, মানষুকে অবহিত রাখতে এবং তাদের টিকা নিতে অনপ্রুাণিত করতে এই প্রোগ্রামটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে । ‘মন কি বাত’-এর কারণেই ভারতের ভ্যাকসিনের সাফল্যের কৃতিত্ব রয়েছে । ‘মন কি বাত’-এর প্রাসঙ্গিকতা এবং আমাদের জীবনে এর তাৎপর্যের প্রতি এটাই উৎকৃষ্ট শ্রদ্ধাঞ্জলি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *