BRAKING NEWS

কল্যাণপুরের বিভিন্ন গ্রামে দেখা গেল চিরাচরিত বুড়ির ঘর

নিজস্ব প্রতিনিধি, কল্যাণপুর, ১১ জানুয়ারি৷৷ পৌষ সংক্রান্তি হিন্দু বাঙালির চিরাচরিত সংস্কৃতির বিশেষ উৎসব৷ বলা চলে বাঙালির তেরো পার্বণের অন্যতম পার্বণ৷ বাংলা পৌষ মাসের অন্তিমদিনে এই উৎসবকে অনেকে মকর সংক্রান্তি হিসাবেও পালন করে থাকেন৷ সভ্যতার বিকাশে মানুষ যতোই এগিয়ে যাচ্ছে হারিয়ে যেতে বসেছে চিরাচতি সংস্কৃতির৷ হারিয়ে যাচ্ছে পুরনো রীতি রেওয়াজ৷ আগেকার মতো এখন আর পৌষ সংক্রান্তির তেমন জৌলুস, আমেজ নেই৷


তবু গ্রামাঞ্চলে আবেগ উচ্ছ্বাসকে অনেকটাই আগলে রেখে প্রতিটি ঘরে ঘরে রাত জেগে পিঠেপুলি বানানো হয়৷ কচিকাঁচার জমির পাকাধান কাটা শেষে নাড়া কেটে বুড়ির ঘর বা ভেলাঘর তৈরি করে৷ বুড়ির ঘরেই রান্নাবান্না করে খাবার বানিয়ে পিকনিক করা, নাচ গানের আসর বসানো হয়ে থাকে৷ পুরোনো রীতি রেওয়াজ সংস্কৃতির টানে আজও চোখে পড়ে গ্রামীণ এলাকায় নানাবিধ কর্ম প্রচেষ্টার৷ বুধবার পঞ্জিকা মতে মকর সংক্রান্তি৷ কিন্তু সোমবার কল্যাণপুর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে দৃশ্যায়িত হচ্ছে চিরাচরিত বুড়ির ঘর৷ পৌষ পার্বণে বুড়ির ঘর বানানোর আনন্দ উল্লাসে কল্যানপুর ব্লক এলাকার ঘিলাতলি, শান্তিনগর, কল্যাণপুর, কুঞ্জবন, সংলগ্ন অঞ্চলে প্রায় দেড় শতাধিক বুড়ির ঘর বানানো হয়েছে৷ কচিকাচা থেকে কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতীরাও বুড়ির ঘর তৈরি করে চলেছে৷

বুধবার দিবারাত্র এই বুড়ির ঘরে নাচ-গান, খাওয়া-দাওয়ার কোনো খামতি থাকবে না৷ অনেক এলাকাতেই বয়স্করাও বুড়ির ঘরে কীর্তনের আসর, হরির লুঠ বসায় বলে প্রবীণরা জানিয়েছেন৷ কনকনে শীতের মরশুমে এই পার্বণে বিভিন্ন প্রকৃতির বুড়ির ঘর সাজিয়ে তোলা হয়েছে৷ বর্তমানের আধুনিকতার ছোঁয়ার মাঝেও হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতির বাহারিয়ানায় গ্রামীণ মানুষের অবদান ও ভূমিকা অপরিসীম তা বলাই বাহুল্য৷
পৌষ পার্বণ মানেই আলাদা একটা অনুভূতি৷ এই পার্বণের সাথে জড়িয়ে রয়েছে বাঙালির আলাদা বন্ধন, একাত্ম হয়ে বুড়ি ঘর, নগর কীর্তন, লুট ধরা, বাড়ি বাড়ি পিঠে পুলির নিমন্ত্রণ, আরো কত কি আনন্দ৷ বুড়ি ঘরে সারারাতব্যাপী হৈ-হুল্লোড় শেষে রাত্রিযাপনের পরদিন ভোরে বুড়ি ঘর পুড়িয়ে সবাই পূণ্যস্নান করা৷ মকর সংক্রান্তির সকালে পূর্বপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ করা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *