BRAKING NEWS

রাজ্যের এসসি এসটি ছাত্রাবাসগুলি নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে : তপশিলী জাতি কল্যাণমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ জানুয়ারি৷৷ বর্তমান রাজ্য সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাজ্যের তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের হোস্টেলগুলি নতুন করে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে৷ কারণ বিগত সরকারের দীর্ঘ সময়কালে এই হোস্টেলগুলি বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছিল৷ আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তপশিলি জাতি কল্যান মন্ত্রী ভগবান দাস এই কথা বলেন৷ তিনি জানান, রাজ্যের তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতি ছাত্রছাত্রীদের জন্য মোট ১২৫টি হোস্টেল রাজ্যে রয়েছে৷ এরমধ্যে এস সি হোস্টল রয়েছে ২৮টি এবং এস টি হোস্টেল রয়েছে ৯৭টি৷ হোস্টেলগুলির ছাত্রছাত্রীদের ভালো পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে হোস্টেলগুলিতে কুক, কুক কাম হেল্পার, জলবাহক, নাইট গার্ড পদে ইতিমধ্যেই ২৩৮ জন নিয়োগ করা হয়েছে বলে তপশিলি জাতি কল্যান মন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে জানান৷

পশুপাখির সুরক্ষা এবং রোগ সংক্রমণের সমস্যা দ্রত সমাধানের জন্য রাজ্যে মোবাইল ভেটেরিনারী ইউনিট ও কল সেন্টার প্রকল্প চালু হতে চলেছে : প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী
রাজ্যের সমস্ত প্রকার পশুপাখীর সুুরক্ষা এবং রোগ সংক্রমণের সমস্যা দ্রত সমাধানের জন্য রাজ্যে শীঘই মোবাইল ভেটেরিনারী ইউনিট ও কল সেন্টার প্রকল্প চালু হতে চলেছে৷ এই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবর্ষে প্রাথমিকভাবে রাজ্যকে ১ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা অনুদান হিসাবে প্রদান করেছে৷ আজ সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস এই সংবাদ জানান৷ তিনি জানান, এই প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রাণী স্বাস্থ্য সুুরক্ষা প্রদানে ১২টি অ্যাম্বলেন্স প্রদান করা হয়েছে৷ এই ১২টি অ্যাম্বলেন্স পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় বাৎসরিক খরচের ৯০ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার বহন করবে৷ বাকী ১০ শতাংশ রাজ্য সরকার বহন করবে৷ ১২টি অ্যাম্বলেন্স রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পরিভ্রমন করবে৷ প্রতিটি অ্যাম্বলেন্স-এ একজন প্রাণী চিকিৎসক, একজন প্রাণী চিকিৎসা সহায়ক এবং একজন চালক ২৪ ঘন্টা পরিষেবা প্রদানে নিয়োজিত থাকবেন৷ মন্ত্রী শ্রীদাস জানান, এই অ্যাম্বলেন্সগুলি একটি কেন্দ্রীয় কল সেন্টার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে৷ গ্রামের কোন কৃষক (প্রাণী পালক) একটি সুুনির্দিষ্ট টোল-ফ্রি নম্বরে কল করার সঙ্গে সঙ্গে ঐ এলাকায় কর্তব্যরত ভ্রাম্যমান চিকিৎসকের কাছে কল পৌঁছে যাবে এবং সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসক, সহ-চিকিৎসক এবং চালক সহ অ্যাম্বলেন্স কৃষকের (প্রাণী পালকের) বাড়িতে পৌঁছে যাবে এবং অসুুস্থ প্রাণীর চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করবেন৷ সমস্ত প্রকারের আধুনিক প্রাণী চিকিৎসা ব্যবস্থা কৃষকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প চালু করার মূল উদ্দেশ্য বলে মন্ত্রী জানান৷


সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী আরও জানান, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মাধ্যমে রাজ্যের গ্রাম-শহর এলাকার মানুষকে কিভাবে আরও অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল করা যায় তার জন্য বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া হয়েছে৷ পরিকাঠামোগত উন্নয়নে যে সমস্ত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, রাজ্যে ডিম উৎপাদন ব’দ্ধির লক্ষ্যে গান্ধীগ্রামস্থিত রাজ্যিক পোল্টি ফার্মের আধুনিকীকরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এরজন্য ৪ কোটি ৪৩ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা ব্যয় করা হবে৷ অধিক সংখ্যক শুকর ছানা উৎপাদন ও ক’ষকদের মধ্যে বিতরণের লক্ষ্যে সিপাহীজলা জেলার আমতলিতে ২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন পিগ ফার্ম স্থাপন করা হবে৷ তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনার মাধ্যমে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তর সুুবিধাভোগীদের মধ্যে হাঁসের বাঁচ্চা বিতরণ করার কাজ করছে৷ এরমধ্যে অধিকাংশ হাঁসের বাঁচ্চাই রাজ্যের বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে৷ রাজ্যেই অধিক সংখ্যক হাঁসের বাঁচ্চা উৎপাদনের লক্ষ্যে ঊনকোটি জেলার দুধপুর গ্রামে একটি নতুন ডাক ফার্ম স্থাপন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দপ্তর৷ এরজন্য ২ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে৷


প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী শ্রীদাস আরও জানান, রাজ্যে পশুপাখীর চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পসারনের লক্ষ্যে খোয়াই, উদয়পুর, বিলোনীয়া, সাবম এবং ধর্মনগরে ৫টি নতুন পশু হাসপাতাল তৈরী করা হবে৷ এরজন্য ব্যয় হবে ৬ কোটি ৫ লক্ষ টাকা৷ এছাড়াও ১১ কোটি ২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ১৩টি ভেটেরিনারি ডিসপেনসারি তৈরী করা হবে৷ পাশাপাশি পশুপাখীর স্বাস্থ্য সুুরক্ষায় রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ১৭টি ভেটেরিনারি সাব-সেন্টার নির্মাণ হবে৷ এরজন্য ৩ কোটি ১১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা ব্যয় হবে৷
রাজ্যের কৃষকদের পশুপাখীর জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন এবং সরবরাহের জন্য আর কে নগরে একটি ফিড মিি’ং প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে৷ এই প্ল্যান্টের জন্য মোট ২২ কোটি ৬৬ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা ব্যয় করা হবে৷ ক’ত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উন্নতমানের ক্রশবিড শুকর ছানা উৎপাদনের লক্ষ্যে দেবীপুরে ৮৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি পিগ সিমেন ল্যাবরোটরি তৈরী করা হয়েছে, যা শীঘই উদ্বোধন করা হবে৷ এছাড়াও ধলাই জেলার নালিছড়াতে একটি মিনি শ্লটার হাউস তৈরী করা হয়েছে৷ এর শীঘই উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি জানান৷
প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী শ্রীদাস আরও জানান, রাজ্যে মাংস উৎপাদন ব’দ্ধির লক্ষ্যে হাওয়াইবাড়ি পিগ ফার্মকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এরজন্য ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী উন্নত গোধন প্রকল্পের মাধ্যমে সর্টেট সিমেন পদ্ধতিতে পুরুষ বাছুর উৎপাদন ব’দ্ধির লক্ষ্যে উদয়পুর, ধর্মনগর ও আগরতলায় ৩টি লিক্যুয়েড নাইট্রোজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে৷ এরজন্য ১১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে৷ প্রাক’তিক প্রজনন কাজে দক্ষ কর্মী তৈরী করার লক্ষ্যে ২ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে৷ প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী জানান, পশুপাখীর স্বাস্থ্য সুুরক্ষায় প্রাথমিক সম্পর্কে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিতে আর কে নগরে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি ভেটেরিনারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে৷ এছাড়াও আর কে নগরে ১ কোটি ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গোকুল গ্রাম তৈরী করা হবে৷ রাজ্যে দুধ উৎপাদন ব’দ্ধির লক্ষ্যে ক’ষকদের মধ্যে মোট ২৭০টি গাভী বিতরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে দপ্তর৷ এরজন্য ব্যয় হবে ২ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা৷ অসুুস্থ পশুপাখীদের আধুনিকতম চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে অভয়নগরে একটি স্টেট ভেটেনারি হাসপাতাল কাম পলি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে৷ এরজন্য ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে৷
প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী ভগবান দাস জানান, পশুপালনের মাধ্যমে রাজ্যের কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এবং রাজ্যে দুধ, মাংস, ডিম উৎপাদন আরোও বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তর মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনার মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার ৬০টি পরিবারে পোল্টী, পিগারী, গটারি, ডাকারি প্রকল্পে বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করেছে৷ এরজন্য এখন পর্যন্ত ১১ কোটি ৩৪ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে শ্রীদাস সাংবাদিক সম্মেলনে জানান৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *