BRAKING NEWS

সরকারী জমি বেআইনি দখলমুক্ত করার অভিযান, কর্মচারী ফেডারেশনের অফিস ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিল পুর নিগমের টাস্ক ফোর্স

আগরতলা, ৩১ ডিসেম্বর (হি. স.) : সরকারী জমি বেআইনি দখলের অভিযোগে ইংরেজী বর্ষ বিদায়ের অন্তিম দিনের ভোরে ত্রিপুরা সরকারী কর্মচারী ফেডারেশনের কার্যালয় ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে পুর নিগমের টাস্ক ফোর্স। এ-বিষয়ে পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন, বাম জমানায় বেআইনি দখলকৃত জমি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। কিন্ত, এখন সেই প্রথা ভেঙ্গে সরকারী জমি দখলমুক্ত করার দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছে পুর নিগম। এর পেছনে কোন রাজনৈতিক অভিসন্ধি নেই।


প্রসঙ্গত, বর্তমানে ওই জমিটি বিজেপি বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা এবং তৃণমূল স্টেট স্টিয়ারিং কমিটির কনভেনর সুবল কুমার ভৌমিক সহ আট জনের দখলে রয়েছে। ২০১৭ সালেও বামফ্রন্ট সরকার ওই অফিস ঘরটি ভেঙ্গে দিতে উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্ত, তাতে সফল হতে পারেনি। শিশু উদ্যান এলাকায় ওই জমি নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। দাবি, কংগ্রেস-টিইউজেএস জোট সরকারের আমলে ওই জমি তাঁদের নামে নথিভূক্ত করা হয়েছিল। তবে তার সত্যতা কতখানি তা নিয়ে নানা মহলে নানা প্রশ্ন রয়েছে।


শুক্রবার সকালে আগরতলা পুর নিগমের টাক্সফোর্স বাহিনী কমিশনার ডা: শৈলেশ কুমার যাদবের নেতৃত্বে এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় ত্রিপুরা সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের অফিস ঘরটি বুল ডোজার দিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ-বিষয়ে পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার জানিয়েছেন, ইতিপূর্বে ওই জমি বেআইনি দখলমুক্ত করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্ত, দখলদার জমি খালি করে দেননি। তাই, আজ ওই জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। সাথে তিনি যোগ করেন, পুর নিগমের ওই নোটিশের প্রেক্ষিতে ত্রিপুরা হাইকোর্টে রিট পিটিশন জমা দিয়েছিলেন দখলদাররা। কিন্ত, আদালতে জমির মালিকানা সংক্রান্ত নথি দেখাতে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছে। তাই, ওই আবেদন আদালত খারিজ করে দিয়েছে।


এদিন পুর নিগমের মেয়র বলেন, আগরতলায় সমস্ত সরকারী জমি দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সেখানে নাগরিক পরিসেবা সুনিশ্চিত করার সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে। তাঁর কথায়, আগরতলা শহরে বহু সরকারী জমি বেআইনিভাবে দখল হয়ে রয়েছে। সেই সমস্ত জমি পুনরুদ্ধার করাই এখন নিগমের লক্ষ্য। তাঁর দাবি, শিশু উদ্যানের পাশে দখলকৃত ওই জমিতে বেকারদের কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা হবে। সাথে তিনি যোগ করেন, ওই জমির পাশে স্থিত ৯টি দোকানের মধ্যে দুইটি দোকানের তৌজি রয়েছে। কিন্ত, তাঁরা খাজনা দিচ্ছেন না। তাই, ৯টি দোকান শীঘ্রই উচ্ছেদের ব্যবস্থা হবে।


এদিন দৃঢ়তার সাথে বলেন, রাজধানী আগরতলার ফুটপাথও হকারদের বেআইনি ব্যবসার কবল থেকে মুক্ত করা হবে। শুধু মাত্র সরকার অনুমোদিত স্থানে ব্যবসার অনুমতি দেওয়া হবে। কারণ, ফুটপাতে হকারদের দৌলতে রাজধানীর রাজপথে তীব্র যানজট দেখা দিচ্ছে প্রায়সই। তাছাড়া, নিত্যযাত্রীদের হাটাচলাতেও নানা সমস্যা হচ্ছে। তাঁর দাবি, নাগরিক পরিসেবা ১০০ শতাংশ সুনিশ্চিত করার অঙ্গীকার নিয়েই পুর নিগম নির্বাচনে বিপুল জয় মিলেছে। সেখানে একাংশ মানুষের বেআইনি কার্যকলাপে নাগরিক পরিষেবায় বিঘ্ন হোক, তা কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
এদিকে, ত্রিপুরা সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের মহাসচিব সমর রায় অফিস জমি বেআইনি দখলমুক্ত করার নাম অফিস ঘর ভেঙ্গে দেওয়ার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই সংগঠনের প্রত্যেক কার্যকর্তা বিজেপির সমর্থক। বিগত নির্বাচনের আগে থেকেই বামফ্রন্ট সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সংগঠন আন্দোলন করেছে। কিন্ত, বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের অফিস ভেঙ্গে দেওয়ার ঘটনায় আমরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছি। এধরনের ঘটনা তাদের কাছে অপ্রত্যাশিত বলেও সমর বাবু অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *