আগরতলা, ২১ অক্টোবর (হি. স.) : বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় ত্রিপুরায় গর্জে উঠল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সহ একাধিক হিন্দু সংগঠন। আজ শহর কাঁপিয়ে মিছিল নিয়ে বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনারের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে ডেপুটেশন দিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এদিনের মিছিলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ছাড়াও ইসকন মিশন, অযাচক আশ্রম সহ বহু সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ অংশ নিয়েছেন। পরিষদের পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার সভাপতি ডা: শংকর সরকারের দাবি, এদিনের মিছিলে দশ সহস্রাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল।
ইতিপূর্বে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উপ প্রান্তের সম্পাদক শংকর রায় বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জনের খুন হয়েছে। বহু বাড়িঘরে লুটপাঠ হয়েছে যা এখনো সমানে চলছে। মৌলবাদিদের বর্বরোচিত আক্রমণের প্রতিবাদে আওয়াজ তেজি করার জন্যই প্রস্তুতি নিয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তিনি জানিয়েছিলেন,প্রত্যেক জেলায় প্রতিবাদ জানানো হবে। ২১ অক্টোবর ১০ হাজার মানুষের সমাগমে রেলির মাধ্যমে আগরতলা স্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশন কার্যালয়ে ডেপুটেশন দেওয়া হবে। তিনি দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশে হিন্দুরা সুস্থ থাকার জন্য প্রতিবাদের তীব্র ধ্বনি সে দেশের সরকারের কানে পৌছে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে তাঁর আবেদন, হিন্দুদের উপর আক্রমনে দোষীদের ফাঁসির ব্যবস্থা হোক। সাথে তিনি কড়া ভাষায় বলেন, হিন্দুদের উপর আরও অত্যাচার হলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সরাসরি মোকাবিলায় নামবে। এদিন তিনি জানান, ইতিমধ্যে প্রতিবাদের সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা স্তরে প্রতিবাদ শুরু হয়ে গেছে।
সে মোতাবেক আজ শংকর চৌমুহনী গীতা ভবনের সামনে থেকে মিছিলের সূচনা হয়। প্রতিবাদ মিছিলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ত্রিপুরা মন্ত্রিসভার সদস্য রামপ্রসাদ পাল। এদিনের মিছিল থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আবেদন জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধ না হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে বলেও হুশিয়ারী দেওয়া হয়েছে। আজকের ওই প্রতিবাদ মিছিলে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলের সমান অংশিদারিত্ব লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে মহিলাদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পরার মতো।
এদিকে, আজ ডেমোক্রেটিক রাইটস প্রটেকশন অর্গানাইজেশন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে স্মারকলিপি পাঠিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি দিলীপ কুমার দাস চৌধুরী বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানান, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সার্বিক নিরাপত্তা ও নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালনের গণতান্ত্রিক, মৌলিক ও মানবাধিকার সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হোক। সংগঠন মনে করে, হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিংবা বিক্ষিপ্ত নয়। এই উপমহাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের আর্থিক উন্নতি বিঘ্নিত করার বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অঙ্গ। সংগঠন আশা প্রকাশ করেছে, বাংলাদেশ সরকার, জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলি বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সহিষ্ণুতা ও সৌহার্দ্যতার সুমহান ঐতিহ্যের সুরক্ষার্থে সময়োচিত কর্তব্য পালনে দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে এবং আরো অধিক যত্নবান হবে।

