BRAKING NEWS

মোতেরায় বিশ্বের বৃহত্তম স্টেডিয়ামের উদ্বোধন, ক্রীড়াক্ষেত্রের ভুমিপুজো

মোতেরা (গুজরাট), ২৪ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের শুভ উদ্বোধন করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, গুজরাটের মোতেরার এই স্টেডিয়াম এখন থেকে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামে ১ লক্ষ ৩২ হাজার দর্শক একসঙ্গে ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে পারবেন। ৬৩ একর এই স্টেডিয়াম আগে মোতেরা স্টেডিয়াম হিসেবে পরিচিত ছিল। এই স্টেডিয়ামকে ঘিরে একটি ক্রীড়াক্ষেত্র তৈরি হবে। নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম উদ্বোধন করার প্রাক্কালে এদিনই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং তাঁর স্ত্রী সবিতা কোবিন্দ সর্দার বল্লবভাই প্যাটেল স্পোর্টস এনক্লেভেরও ভূমিপুজো করেছেন। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু এবং গুজরাটের উপ-মুখ্যমন্ত্রী নীতিন প্যাটেল। 

১ লক্ষ ৩২ হাজার দর্শকাসন বিশিষ্ট মোতেরার এই স্টেডিয়াম এবার থেকে পরিচিত হবে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম নামে। বুধবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ উদ্বোধন করেন মোতেরার নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের। যদিও ক্রিকেট স্টেডিয়াম-সহ গোটা স্পোর্টস এনক্লেভের নামকরণ করা হয় সর্দার প্যাটেলের নামে। স্পোর্টস এনক্লেভের ভূমি পূজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেন রিজিজু, বিসিসিআই সচিব জয় শাহ প্রমুখ। বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সশরীরে হাজির থাকতে না পারলেও সোস্যাল মিডিয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু নিয়ে।

রাষ্ট্রপতি : 

নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম উদ্বোধন করার পর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলেছেন, “২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে আমি যখন অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলাম, তখন জানতে পারি ৯০ হাজার আসনের মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়াম বিশ্বের মধ্যে বৃহত্তম। ভারতের কাছে আজকের দিন অত্যন্ত গর্বের, মোতেরায় ১ লক্ষ ৩২ হাজার আসনের স্টেডিয়ামটি বিশ্বের বৃহত্তম স্টেডিয়ামে উন্নীত হয়েছে।” স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ বলেন, ‘গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় এই স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা করেন নরেন্দ্র মোদী। সেই সময় তিনি গুজরাট ক্রিকেট সংস্থার সভাপতিও ছিলেন।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : 

নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম উদ্বোধনের পর গান্ধীনগরের সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি (নরেন্দ্র মোদী) সর্বদা বলতেন, খেলা এবং সশস্ত্র বাহিনী এই দু’টি ক্ষেত্রে গুজরাটিদের উন্নতি করতে হবে। তিনি মনে করতেন বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি গুজরাটে তৈরি করা উচিত। ১ লক্ষ ৩২ হাজার আসনের এই স্টেডিয়াম এখন থেকে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম।” স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম-সহ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল স্পোর্টস এনক্লেভের পাশাপাশি নারানপুরেও একটি স্পোর্টস কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে। তিনিটি জায়গাই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খেলাধুলো আয়োজন করতে পারবে।”

ক্রীড়ামন্ত্রী :  

কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু বলেছেন, শুধুমাত্র ক্রিকেট নয়, ভারতের জন্য গর্বের মুহূর্ত। বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম হওয়ার পাশাপাশি এটি বিশ্বের অন্যতম আধুনিক স্টেডিয়াম। আহমেদাবাদ দেশের ‘স্পোর্টস সিটি’ হিসাবে পরিণত হয়েছে।

নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের বৈশিষ্ট্য :

বুধবার নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তার পরেই ওই স্টেডিয়ামে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ শুরু হয়, ভারত বনাম ইংল্যান্ডের তৃতীয় টেস্ট। টসে জিতে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করতে নামে। নতুন করে তৈরি হওয়া মোতেরা স্টেডিয়াম ৬৩ একর জমির ওপর বিস্তৃত৷ এটা সারা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ক্রিকেট স্টেডিয়াম৷ এতে ১,৩২,০০০ মানুষ একসঙ্গে বসে খেলা দেখতে পারেন৷ এর পর দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড৷ 

এই স্টেডিয়ামে দু’টি অনুশীলনের মাঠ রয়েছে৷ যাতে ৯ টি পিচ রয়েছে৷ আর মূল স্টেডিয়ামে ১১ টি পিচ রয়েছে৷ যার ৬ টি লাল মাটি দিয়ে তৈরি আর ৫ টি কৃষ্ণমৃত্তিকা দিয়ে তৈরি৷ এটাই প্রথম স্টেডিয়াম যেখানে দুই রকম মাটির তৈরি পিচই থাকছে৷ ড্রেসিংরুম গুলি জিমের সঙ্গে সংযুক্ত৷ পাশে থাকছে ওয়ার্মআপের জায়গা৷ ট্রেনার, ফিজিও ও কোচদের জন্য আরও আলাদা জায়গা রয়েছে৷ এই স্টেডিয়ামটি স্পোর্টস কমপ্লেক্স হিসেবে তৈরি হয়েছে যেখানে ফুটবল, বাস্কেটবল, হকিও খেলা হবে৷ প্রতিটা দর্শক যাতে কোনওরকম বাধা ছাড়া খেলার প্রতিটা অ্যাঙ্গেল দেখতে পারেন তার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে৷ ফ্লাডলাইট, টাওয়ার, পিলার সব দৃষ্টির এলাকা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে৷ এই স্টেডিয়ামে এলইডি লাইট লাগানো হয়েছে৷ মাঠের ড্রেনেজ সিস্টেম অত্যন্ত উন্নত৷ তাই বর্ষাকালে বৃষ্টি থামার আধঘণ্টার মধ্যেই খেলা শুরু করা যাবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *