BRAKING NEWS

প্যাঙ্গং-এর পাহাড়ি এলাকা থেকে সরছে লাল ফৌজ

লাদাখ, ১২ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): প্যাঙ্গং-এর পাহাড়ি এলাকা থেকে শৃঙ্খলা বজায় রেখেই সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। চুসুল সীমান্তে ভারত-চিন নবমতম সেনা কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠকের পরেই এই পদক্ষেপ বলে দাবি করেছে চিনের সংবাদমাধ্যম।

ভারতীয় সেনা সূত্র জানাচ্ছে, স্পর্শকাতর দেপসাং ভ্যালি থেকে সেনা সরানোর প্রশ্নই নেই, বরং গোগরা ও গালওয়ান উপত্যকা থেকে ধাপে ধাপে সেনা সরিয়ে নেওয়া প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত এপ্রিল-মে মাস থেকে পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ঢিল ছোড়া দূরত্বে দাঁড়িয়ে রয়েছে দু’দেশের সেনা। ঘটেছে একাধিক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এর আগে একাধিকবার সেনা সরিয়ে নেওয়া বা ডিসএনগেজমেন্টের কথা বলেছিল দুই দেশই। চিন সেনা সরানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তা হয়নি। বরং সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা ও যুদ্ধাস্ত্র মোতায়েন করে ফের আগ্রাসনের চেষ্টা করেছে। তবে শেষবারের বৈঠকের পরে চিন দাবি করেছে, দু’পক্ষই দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করার প্রশ্নে সম্মত হয়েছে। গোগরা হটস্প্রিং ও গালওয়ান উপত্যকা থেকে ২ কিমি করে মোট ৪ কিলোমিটার এলাকায় তৈরি হবে বাফার জ়োন। ওই এলাকায় টহল দিতে পারবে না কোনও দেশের বাহিনীই। সামরিক অস্ত্রও মোতায়েন করা যাবে না।

ভারতীয় সেনা সূত্র জানাচ্ছে, গালওয়ানের ১৫ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্ট যেখানে দুই দেশের বাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল, সেখান থেকে ধাপে ধাপে সেনা সরাতে রাজি হয়েছে দুই দেশই। তবে দেপসাং ভ্যালি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। প্যাঙ্গং রেঞ্জের পরে এই দেপসাং ভ্যালিতেই নজর চিনের সেনার। তাই সেখানে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে রেখেছে ভারত। আধুনিক যুদ্ধট্যাঙ্ক ও মিসাইলও মোতায়েন করে রেখেছে ভারতের বাহিনী।

পূর্ব লাদাখে এই দেপসাং ভ্যালির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। ভৌগোলিক গুরুত্ব তো বটেই সামরিক দিক থেকেও ওই এলাকা কখনও হাতছাড়া করতে চাইবে না ভারত। ১৬ হাজার ৪০০ ফুট উচ্চতায় ৯৭২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দেপসাং ভ্যালি। উপগ্রহ চিত্র দেখিয়েছে, অগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাস অবধি, নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় নতুন করে সেনা মোতায়েন করছে চিন। রাস্তাও তৈরি করেছে। দেপসাং ভ্যালিতে আধিপত্য বিস্তার করতে পারলে নীচে ডেমচক অবধি এলাকায় কর্তৃত্ব করতে পারবে লাল সেনা।

একদিকে সিয়াচেন গ্লেসিয়ার, অন্যদিকে চিনের নিয়ন্ত্রণে থাকা আকসাই চিন—এই দুইয়ের মাঝে রয়েছে দেপসাং ভ্যালি। ভারতের সাব সেক্টর নর্থ তথা এসএসএনের মধ্যে পড়ে দেপসাং। এই এলাকার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল একদিকে উচ্চতম সিয়াচেনের সীমান্তের নাগাল পাওয়া যাবে, অন্যদিকে আকসাই চিন লাগোয়া দৌলত বেগ ওল্ডি হয়ে ভারতে ঢোকার রাস্তা সহজ। এই দৌলত বেগ ওল্ডি এখন ভারতের সেনার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই দেপসাং কব্জা করতে পারলে চিনের সেনাকে পেরিয়ে ভারত আর এই এলাকায় টহল দিতে পারবে না। ফলে দেপসাং ভ্যালিকে মাধ্যম করে একদিকে গালওয়ান ও অন্যদিকে প্যাঙ্গং হ্রদের পাহাড়ি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের রাস্তা সহজ হবে চিনের বাহিনীর কাছে। ভারতীয় সেনা সূত্র বলছে, দেপসাং এলাকা এখন পুরোপুরি ভারতের নিয়ন্ত্রণে আছে। ওই এলাকায় কোনওভাবেই নাক গলাতে দেওয়া যাবে না চিনকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *