BRAKING NEWS

দ্রুত বাড়ছে লিভারের ব্যামো, সতর্ক করলেন চিকিৎসকরা

কলকাতা, ২৬ মে (হি. স.): নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। ফাস্ট ফুড খাবেন না। ধুমপান নৈব নৈব চ। দুরে রাখুন অ্যালকোহল- এভাবেই শনিবার সতর্ক করলেন অভিজ্ঞ চিকিৎসক।
প্রতি বছর ভারতে প্রায় ১০ লক্ষ লোক লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হচ্ছেন। মারা যাচ্ছেন প্রায় আড়াই লক্ষ। শনিবার এই তথ্য জানিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মহম্মদ নাইম বলেন, “গোড়ায় ধরা পড়লে এই রোগে আক্রান্তদের অধিকাংশর বাঁচার আশা থাকে। কিন্তু সতর্কতা আর সচেতনতার অভাবে অনেকের রোগ গভীরে চলে যায়।”
গত দু’দশকে অ্যালকোহলে আসক্তর সংখ্যা ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। এই তথ্য দাখিল করে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা জানান, এখন ১৫ বছর বয়স থেকেই পানীয়ে আসক্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। বাড়ছে মেয়েদের মধ্যে এই প্রবণতা। রোগাক্রান্ত মৃতদের ২ শতাংশের মৃত্যুর কারণ লিভারের অসুখ।
চিকিৎসক নঈমের মতে, হালে লিভারের রোগ দ্রুত বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ জীবনধারার পরিবর্তন। হেপাটাইটিস ভাইরাস এবং স্থূলতা থেকে ফ্যাটি লিভার, ডায়াবেটিস— এ সবও বাড়ছে।
এই সঙ্গে প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে লিভার প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা। চিকিৎসকরা জানান, ভারতে এ কারণে বছরে ২০ হাজার লিভার দরকার। সেখানে প্রতিস্থাপিত হচ্ছে এর ১০ শতাংশের মত। অঙ্গদানের পরেও মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে, এমন ব্যক্তির লিভার অনেক ক্ষেত্রেই পাওয়া যাচ্ছে না। এর একটা কারণ, মৃতের পরিবারের লোকেদের আগ্রহের অভাব। অঙ্গগ্রহণের পরিকাঠামোর অভাব আর একটি কারণ।
এপেলো হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ডক্টর নঈমের দাবি, “কেবল সাধারণ মানুষই নয়, চিকিৎসকদেরও অনেকে সঠিক জানেন না এই লিভার প্রতিস্থাপনের প্রতিক্রিয়া কেন এবং কতটা হতে পারে।“ কত খরচ পড়তে পারে লিভার প্রতিস্থাপনে? তাঁর জবাব, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হলে পাঁচ কোটি টাকা। ভারতে একটু ভাল জায়গায় হলে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। গত দশ বছরে এই খরচ অনেকটা কমেছে।”
প্রতিস্থাপনের পর সুস্থ জীবন ফিরে পাওয়ার নিশ্চয়তা কতটা? চিকিৎসকদের জবাব, “কেউ যদি এক বছর বেঁচে যান, তাঁর ৮৫-৯০ শতাংশ স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়া মোটামুটি নিশ্চিত| আর প্রতিস্থাপনের পর পাঁচ বছর কাটিয়ে দিলে একদম নিশ্চিন্ত। যদি না তিনি অন্য রোগ বাঁধিয়ে বসেন।
তবে, কলকাতায় এ রকম জায়গার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি| এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিশেষ পরিকাঠামো লাগে। গোটা টিমে থাকে জনা ছয় শল্যবিদ-সহ নানা ধরণের অন্তত পঞ্চাশ জন। দক্ষিণ ভারতে এ রকম পরিষেবা বেশ কিছু হাসপাতালে আছে| এখন কলকাতাতেও আমরা শুরু করছি।”
অস্ত্রপচার-পরবর্তী পর্যবেক্ষনটাও গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান চিকিৎসকেরা। তাঁদের মতে, “প্রথমদিকে বেশ ক’টি ওষুধ খেতে হবে। আসতে আসতে রোগীর শারীরিক অবস্থা বুঝে কমবে এর প্রয়োগ। মাসে হাজার পাঁচ টাকা লাগতে পারে এর জন্য়”।
কিন্তু এত অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পাওয়ার সরল রাস্তা কী? “ওই যে উত্তরটা প্রথমেই দিয়ে দিয়েছি!” জানালেন চিকিৎসক নঈম ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *