BRAKING NEWS

ভারত-নেপাল সম্পর্ক জোরদার করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

জনকপুর, ১১ মে (হি.স.) : ভারত ও নেপাল দুটি আলাদা দেশ হলেও দুদেশের সম্পর্ক ত্রেতা যুগ থেকে। রাজা জনক ও রাজা দশরথ দুদেশের মধ্যে এই বন্ধুত্ব ও জোট বন্ধন তৈরি করে গিয়েছেন বলে ব্যাখ্যা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার দুদিনের নেপাল সফরে গিয়ে এদিন সকালে জানকী মন্দির দর্শন করে পুজো দেন তিনি। এদিন জনকপুরে জানকি মন্দিরে সম্পূর্ণ নিয়ম অনুসারে পুজো করেন। পুজোর সময়ে মন্দিরের পুরোহিত প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ‘পাগ’ (মৈথিলি সংস্কৃতির এক বিশেষ ধরনের মস্তক পরিধান) পরিয়ে সম্মান জানান। পরে জনকপুর-অযোধ্যা বাস পরিষেবার সূচনার পর এক জনসভায় তিনি ভারত-নেপাল সম্পর্কে জোরদার করার আহ্বান জানান|
তিনি বলেন, “জানকী মন্দিরে পুজো দিয়ে বহুদিনের ইচ্ছে আজ পূরণ হল। দুদেশের সম্পর্ক ত্রেতা যুগ থেকে। এই বন্ধুত্ব ও জোট বন্ধন তৈরি করে গিয়েছেন রাজা জনক ও রাজা দশরথ। আর এই বন্ধুত্ব ও জোট রাম-সীতার। নেপালের সঙ্গে রাম-সীতার মতই বুদ্ধ ও মহাবীরের বন্ধন রয়েছে, যা দক্ষিণের রামেশ্বরম থেকে শুরু হয়ে পশুপতিনাথ মন্দির পর্যন্ত এসেছে। আবার লুম্বনী থেকে বুদ্ধগয়া পর্যন্ত এই সম্পর্ক নিয়ে গিয়েছে। আর এই বন্ধন, আস্থা ও স্নেহ আজ জনকপুরে এনেছে।”
এদিন তিনি আরও বলেন, ভারত-নেপাল সম্পর্ক এক ভাষাতে বাধা রয়েছে। এই ভাষা বিশ্বাস ও আত্মিকের। এটি মা জানকীর স্থান, যার ছাড়া অযোধ্যা অসম্পূর্ণ। ইতিহাস জানে যখন দুদেশের মধ্যে কখনও কোন সংকট এসেছে, দুদেশের একসাথে তার মোকাবিলা করছে। আর আমরাও যে কোনও কঠিন পরিস্থিতিতেও একে অপরে পাশে থেকেছি। আর এই সময়েও দুই দেশ একত্রিত হয়ে শান্তি, শিক্ষা, সুরক্ষা, সমৃদ্ধি ও সংস্কার-এর পঞ্চবটী রক্ষা করতে হবে বলেও তিনি এদিন জনসভায় জানান। তিনি অারও বলেন, সীতা মা অর্থাৎ ত্যাগ, তপস্যা, সমর্পন অার সংঘর্ষ-র এক মূর্তি। এটি এমন একটি জায়গা যেখানে মেয়েদের কেমন সম্মান দেওয়া হয়। মেয়েদের প্রতি সম্মান দেওয়ার শিক্ষা অাজ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। তিনি বলেন, মিথিলার চিত্রকারীর পরম্পপরা এখানকার মহিলারাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। মিথিলার এই শিল্পকলা গোটা বিশ্বে সুপ্রসিদ্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, যখন “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ” এই কথা শুধু ভারতের জন্য বলে থাকি না, সব প্রতিবেশি দেশের জন্যও এই কামনা করি। অার নেপালে যখন “সমৃদ্ধ নেপাল, সুখী নেপালি” এই স্লোগান শুনি, তখন অামার মন অানন্দিত হয়। নেপালের সার্বিক বিকাশের মধ্যেই রয়েছে আঞ্চলিক বিকাশের সূত্র। আর এর প্রথম শর্ত হল গণতন্ত্র। আর খুশির বিষয় এই গণতন্ত্র এখানে শক্তিশালী হচ্ছে। নির্বাচনের মধ্যে দিয়েই এখানকার জনগণ সরকার নির্বাচন করেছেন। দুদেশের এই গণতান্ত্রিক কাঠামো ভারত-নেপালের সম্পর্ককে সুদৃঢ় করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের এই শক্তি ছোটো ছোটো প্রতিবন্ধকতা বিনা বাধায় নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। ভারত এই শক্তিকে অনুভব করছে বলেই আজ ভারতবাসী এই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। তিনি বলেন, মিথিলার সংস্কৃতি ও সাহিত্যর পাশাপাশি এখানকার স্বাগত সম্মান সবার চেয়ে আলাদা। এজন্য বিশ্বে মিথিলা সংস্কৃতির স্থান সবচেয়ে উপরে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
দুই দিনের সফরে শুক্রবার নেপাল পৌঁছলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ জনকপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করে প্রধানমন্ত্রীর বিমান। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। নেপাল প্রশাসনের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী উপর পুষ্পবৃষ্টি করা হয়। নেপালে বারহাবিঘা ময়দানে প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অভিবাদন জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই নিয়ে তৃতীয়বার নেপালে এলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *