BRAKING NEWS

রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে নির্বাচনের দাবি করছে বিজেপি ঃ মানিক সরকার

কলকাতা, ২৮ ডিসেম্বর(হিঃস)৷৷ বামফ্রন্ট সরকারকে রেখে ত্রিপুরার নির্বাচন করা যাবে না৷ রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে নির্বাচন করতে হবে বলে দাবি করছে বি জে পি৷ বৃহস্পতিবার কলকাতায় এই অভিযোগ করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ তিনি এদিন সি পি এমের কলকাতা জেলা কমিটির অফিস প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে ত্রিপুরা সংঘতি দিবস এর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন৷ এদিনের সভাপতিত্ব করেন পশ্চিমবঙ্গ বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু৷ সি পি এমের অন্যান্য নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র৷ সভার শুরুতেই মানিক সরকার বলেন, ত্রিপুরায় সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল ২০১৩ সালের মার্চ মাসে৷ নতুন বিধানসভার প্রথম বৈঠক হয়েছিল ২০১৩ সালের  ৫ মার্চ৷ বিধানসভার মেয়াদ ৫ বছর৷ স্বাভাবিক ভাবেই ২০১৮ সালের ১৫ ই মার্চের মধ্যে নতুন করে বিধানসভা গঠন করতে হবে৷ ২০১৮ সালের ৫ মার্চ থেকে ত্রিপুরা বোর্ড অব এক্সজামিনেশনের মাধ্যমিক এবং দ্বাদশ মানের পরীক্ষা শুরু হবে৷ স্বাভাবিক ভাবেই এর আগে নির্বাচন শেষ করতে হবে৷ কেননা, পরীক্ষা শুরু হলে প্রায় এক মাস লেগে যাবে৷ আর যদি তা হয়, তাহলে ১৫ ই মার্চের আগে নতুন করে বিধানসভা তৈরী করা কঠিন হবে৷ তাই ফেব্রুয়ারির কোনও এক তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ সমস্যা হচ্ছে, আমাদের রাজ্যে বিজেপি দল শ্লোগান তুলেছে, বামফ্রন্ট সরকারকে রেখে ত্রিপুরায় নির্বাচন করা যাবে না৷ রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে হবে৷ তাদের প্রথম অভিযোগ ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো নয়৷ ভেঙ্গে পলেছে৷ তিনি জানান, ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে প্রতিবছর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি রিপোর্ট বের করে৷ তাতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার ঘটনাবলী যেমন তারা দেন, তেমনই সারা ভারতবর্ষের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কিত একটা তুলনামূলক চিত্র তুল্যমূল্য বিশ্লেষণ করে তারা উপস্থাপিত করেন৷ তাতে যা দেখা গেছে গত কয়েক বছরে ক্রমান্বয়ে ত্রিপুরার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তর উত্তর উন্নতি ঘটছে৷ সাধারণ আইনশৃঙ্খলা জনিত ঘটনা তুলনামূলক ভাবে যেমন কমেছে৷ আমাদের মা বোনেদের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঘটনাগুলি তেমন কমেছে৷ সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণ, স্বাধীন ত্রিপুরার স্লোগান দিয়ে তথাকথিত বিদেশী বিতরণের দাবি উত্থাপন করা, বাংলাদেশকে ঘাঁটি গেড়ে আই এস আই এবং সি আই এর মদতপুষ্ট হয়ে ত্রিপুরায় অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করেছিল৷ দাঙ্গা বাঁধিয়েছিল৷ শত শত মানুষ ত্রিপুরায় তাদের হাতে খুন হয়েছিলেন৷ হাজার হাজার বাড়িঘর নষ্ট হয়েছে৷ ব্যবসা বাণিজ্য নষ্ট হয়েছে৷ এই পরিস্থিতির মধ্যে পরিবর্তন এসেছে৷ মানিক সরকার দাবি করেন, ত্রিপুরার ভেতরে সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি আর নেই৷ বলেন, এদের একটা অংশ আত্মসমর্পন করেছে৷ কেন্দ্রীয় সরকার একটা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে৷ ত্রিপুরা সরকারও একটা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে৷ দুটো মিলিয়ে আত্মসমর্পণকারীদের্ পুনঃবাসনের ব্যবস্থা হয়েছে৷ তারা নতুন করে জীবনযাপন শুরু করেছেন৷ গত ৪ মাস যাবদ সন্ত্রাসবাদীরা ত্রিপুরার ভিতরে কোনো আক্রমণ সংগঠিত করতে পারে নি৷ খুন জখমের ঘটনা সংগঠিত হয় নি৷ তার মানে এই নয় যে তারা নির্মূল হয়ে গিয়েছে৷ তাদের কিছু খাঁটি বাংলাদেশে আছে৷ ভারত সরকারের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করেছি৷ বাংলাদেশকে ঘাঁটি করে সন্ত্রাসবাদীরা উত্তর পূর্ব ভারতে সন্ত্রাস চালাত৷ শেষ হাসিনা এই সন্ত্রাস রোধে বড় ভূমিকা নিয়েছেন৷ ফলে বিজেপি-র অভিযোগ ধোপে কেটে না৷ এবং তাদের রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি ভ্রান্ত বলে দাবি করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *