BRAKING NEWS

সোস্যাল মিডিয়া সাহায্য না করায় ছাড় পেয়ে যাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা

কলকাতা,১৪ ডিসেম্বর,( হি.স.): সোস্যাল মিডিয়া কোম্পানি গুলো সাহায্য না করায় সহজেই ছাড় পেয়ে যাচ্ছে সাইবার ক্রাইমের অপরাধীরা। ভবানীভবনে রাজ্য সি আই ডি-র তদন্তকারীদের অভিযোগ, তদন্ত করতে গিয়ে নূন্যতম তথ্য মিলছে না ফেসবুক বা হোয়াটস উপ কর্তৃপক্ষের তরফে । ফলে অপরাধীকে শনাক্ত করা গেলেও, তথ্যের অভাবে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে অপরাধী । থমকে যাচ্ছে মামলা ।
ইদানিংকালে খুন-জখম, নারীঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে একটা অংশ জড়িয়ে থাকছে ফেসবুক, হোয়াটস আপ বা অন্য কোনও সোশাল মিডিয়ার সঙ্গে । ফলে, রাজ্যের বিভিন্ন সাইবার ক্রাইম থানায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অভিযোগ । কিন্তু, তদন্তে গতি আসছে না । সাইবার ক্রাইম থানাগুলির তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত অভিযোগের ক্ষেত্রে গড়ে ৯০ শতাংশ অভিযোগ আসে ফেসবুক থেকেই ।
তদন্তকারী অফিসারদের মতে , কিছু ক্ষেত্রে মহিলাদের সম্পর্কে কুৎসা বা অশালীন ছবি পোস্ট করার অভিযোগ আসছে । অভিযোগকারীর বয়ানের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে আটক বা গ্রেফতার করা হচ্ছে । বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে ইলেকট্রনিক ডিভাইসও মোবাইল, ল্যাপটপ ও কম্পিউটারও । কিন্তু, অভিযুক্তকে শাস্তি দিতে হলে ফেসবুকের তরফে একটি রিপোর্টের প্রয়োজন হয় । যে ডিভাইস থেকে এই ঘটনাটি ঘটানো হচ্ছে তার আই পি অ্যাড্রেসও দরকার । কিন্তু,সি আই ডি অফিসারদের নাভিযোগ, ফেসবুক সেই তথ্য দিচ্ছে না । তবে শুধু ফেসবুক নয় । অন্য সংস্থাও তথ্য দিতে অস্বীকার করছে । যেসব ক্ষেত্রে তারা দিচ্ছে । সেখানে তদন্ত দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে । তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেসরকারি সংস্থার থেকে সেই সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না । ফলে মামলা সংক্রান্ত সামান্য তথ্য না মেলায় জামিন পেয়ে যাচ্ছে অভিযুক্ত।
ফেসবুক পোস্ট, কমেন্ট, মেসেজ বা হ্যাকিং সংক্রান্ত নানা অভিযোগের ক্ষেত্রে কার্যত মামলার পাহাড় জমলেও নিষ্পত্তি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সি আই ডি কর্তারা। রাজ্যের সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞ ও সরকারি আইনজীবী বিভাস চ্যাটার্জি জানান, গোটা রাজ্যে বহু সাইবার ক্রাইমের মামলা ঝুলে রয়েছে শুধুমাত্র তথ্যের জোগান না মেলায় । ফলে বুক ফুলিয়ে ঘুরছে অপরাধীরা । এ নিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন অভিযোগকারী এক মহিলা । তার শুনানি চলাকালীন হাইকোর্ট তদন্তে অগ্রগতির কথা জানতে চায় । তার জবাবে বেসরকারি সংস্থা যে তদন্তে সহযোগিতা করেনি বলে হাইকোর্টে জানায় পুলিশ। এই নিয়ে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপও চাওয়া হয় । বিচারপতি দেবাংশু বসাক আমাদের কাছে ফেসবুকের অফিশিয়াল অ্যাড্রেস জমা দিতে বলেন । হাইকোর্টে তা জমা দেওয়া হয়েছে ।
গোয়েন্দা অফিসারদের দাবি, ব্যাঙ্ক বা এ টি এম সংক্রান্ত অভিযোগের ক্ষেত্রে তথ্য দিয়ে থাকে মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডার সংস্থাগুলি । কিন্তু, আধুনিক যুগে বহু মামলাতেই শুধু মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডার নয়, ফেসবুক বা অন্য সোশাল মিডিয়া অপরাধের একটা অংশ হয়ে দাঁড়াচ্ছে । এক্ষেত্রে সোস্যাল মিডিয়া কর্তৃপক্ষের সহায়তা ছাড়া তদন্ত এগোন যায় না । ফলে ছাড়া পেয়ে যান অভিযুক্ত । কখনও আবার তথ্যপ্রমাণের অভাবে গ্রেপ্তার করা যায় না অভিযুক্তকেই । তাই সাইবার ক্রাইমের অপরাধীদের ক্ষেত্রে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে বিপাকে পড়েছেন গোয়েন্দারা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *