BRAKING NEWS

বিশ্ববাংলা বিতর্কে প্রথমবার মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা, ২৯ নভেম্বর, ( হি.স.): বিশ্ববাংলা বিতর্কে প্রথমবার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বুধবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, তাঁর নিজের হাতে তৈরি লোগো, তিনি বিনামূল্যে রাজ্য সরকারকে দিয়েছেন । সরকার যতদিন চাইবে, ততদিন এই লোগো ব্যবহার করবে । আগামীদিনে রাজ্য ব্যবহার না করলে লোগো তাঁর কাছেই ফিরে আসবে বলে জানান তিনি ।
বিশ্ববাংলার বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্কেও এদিন সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, বিশ্বভারতী বাংলার গর্ব । বিশ্বভারতীর মতো উচ্চতায় পৌঁছাতে না পারলেও, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে বাংলাকে বিশ্বের দরবারে নিয়ে যাওয়াই তাঁর স্বপ্ন । সেই চেষ্টাই করছেন তিনি । মমতা জানান, গাড়িতে যেতে যেতে ‘১ সেকেন্ডে’ এই লোগো তৈরি করেছিলেন তিনি ।
বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী আজ বলেন, ‘বিশ্ববাংলা লোগো আমার স্বপ্ন। স্বপ্ন কখনও বিক্রি হয় না । স্বপ্নের কোনও মূল্য হয় না’। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিশ্ববাংলা নিয়ে কুত্সা রটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে । তাঁকে অপমান করা হচ্ছে । এরপরই তাঁর হুমকি, ‘কুত্সা যারা ছড়াচ্ছে, তাদের কাউকে ছাড়ব না’। বিশ্ববাংলাকে অপমান করা হলে, বাংলার মানুষও ক্ষমা করবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী ।
প্রসঙ্গত, বিজেপিতে যোগদানের পর রানি রাসমনি রোডের সভা থেকে বিশ্ববাংলা নিয়ে তোপ দাগেন মুকুল রায় । অভিযোগ করেন, বিশ্ববাংলা কোনও সরকারি সম্পত্তি নয় । অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মালিকানাধীন একটি সংস্থা । সঙ্গে সঙ্গেই নবান্নের তরফে স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য ও অতিরিক্ত মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা সংবাদিক বৈঠক করে সে দাবি খারিজ করা হয় ।
এ দিন বিধানসভায় মুকুলের নাম না করেই মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, জেনে না জেনে কেউ কেউ বিশ্ববাংলার লোগো নিয়ে কুৎসা ছড়াচ্ছে । ২০১৩ সালে এই লোগো তৈরি করে তিনি তাঁর নাম ‘বিশ্ববাংলা’ দেন বলে এ দিন দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । মমতা জানান, ২০১৩ সালের মার্চ মাসে এই লোগো সরকারের নামে রেজিস্ট্রি করা হয় । বিশ্ববাংলা নামটিও তাঁরই দেওয়া ।
বিশ্ববাংলা মালিকানা বিতর্কের জবাব দিতে গিয়ে মমতা বলেন, কোনওদিন সরকার এই লোগো এবং নাম ব্যবহার না করলে তা তাঁর কাছেই ফেরত আসবে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই লোগো এবং ব্র্যান্ড তাঁর তৈরি হলেও তিনি তা রাজ্য সরকারকে বিনামূল্যে ব্যবহার করতে দিয়েছেন । এর জন্য তিনি সরকারের থেকে কোনও পয়সা নেন না । পয়সা নেওয়ার কথা তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেন না ।
মুখ্যমন্ত্রী আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, বিশ্ববাংলা লোগো এবং ব্র্যান্ড তাঁর স্বপ্ন। নিজের প্রাক্তন সতীর্থ মুকুল রায়ের নাম না করে মমতা বলেন, ‘শুধু একটা লোগো নিয়ে কেউ যদি বিশ্ববাংলাকে অপমান করে, তাহলে বাংলার মানুষ তাঁকে ক্ষমা করবেন না’। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘জেনে না জেনে কেউ কেউ বিশ্ববাংলার লোগো নিয়ে কুৎসা ছড়াচ্ছে’।
ট্রেড মার্ক বিতর্কে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানিয়ে ছিলেন বি জে পি নেতা মুকুল রায় ।গত শনিবারই বি জে পি-র রাজ্য দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল বলেন,’আদালতে হলফনামা দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে মমতার সম্মতিতেই ট্রেডমার্কের স্বত্ত্বের আবেদন করেছিলেন তিনি’।
মুকুলের কথায়,’জাগো বাংলা, মা-মাটি-মানুষ ও জাগো বাংলার ট্রেডমার্কের আবেদন করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । দু’টিরই ঠিকানা ৩০ বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট । আমার কথার সত্যতা ছিল । সেজন্যই আমি ১০ তারিখে বলার পর ১৩ নভেম্বর তড়িঘড়ি আবেদন প্রত্যাহার করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়’। তাঁকে কোনও আইনি নোটিশ পাঠানো হয়নি বলেও দাবি মুকুলের ।
রাজনৈতিক নেতা সাংবাদিকদের ফোনে আড়িপাতা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মুকুল রায়ের। তিনি দিল্লির আদালতে মামলাও করেছেন। মুকুল রায়ের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ৯জন আইনজীবী দাঁড় করিয়েছিল রাজ্য সরকার । ফোনে আড়িপাতা হচ্ছে না, তা লিখিতভাবে রাজ্যের কাছে চেয়েছিল আদালত । তবে, রাজ্য সরকার তা দিতে পারেনি । একমাস সময় দিয়েছে আদালত । এটা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয় ।
চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যোগ নিয়েও বিঁধেছেন মুকুল রায় । তিনি বলেন, ‘প্রয়াগ কর্তার প্রশংসা করেছিলেন পার্থ । গ্রামগঞ্জের মানুষকে সর্বস্বান্ত করেছে এই প্রয়াগ চিটফান্ড’।-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *