BRAKING NEWS

৩৫ হাজার কোটি টাকার আমানত লুটে নিয়েছে চিটফান্ড অবশেষে প্রকৃত তথ্য দিলেন অর্থমন্ত্রী, দাবি রতন নাথের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৭ নভেম্বর৷৷ চিটফান্ড সংস্থাগুলি রাজ্য থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা লুট করে পালিয়েছে, অবশেষে এই কথা বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা৷ এই দাবি করে শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিধায়ক রতন লাল নাথ কটাক্ষের সুরে বলেন, রাজ্যের ৩০ বছরের আয় যোগ করলেও ঐ টাকা একত্রিত করা সম্ভব নয়৷ সাথে যোগ করেন, অর্থমন্ত্রী চাপের মুখে বিধানসভায় প্রকৃত সত্য বলে ফেলেছেন৷ অথচ অতীতে রাজ্য সরকার বিধানসভায় বিভিন্ন সময় কি পরিমান অর্থ চিটফান্ড সংস্থাগুলি রাজ্য থেকে লুঠ করে পালিয়েছে তা সঠিকভাবে জানায়নি৷
এদিন বিধায়ক শ্রীনাথ বলেন, চিটফান্ড সংস্থাগুলি রাজ্য থেকে ১২০০ কোটি টাকা লুঠ করে পালিয়েছে বলে অর্থমন্ত্রী সর্বশেষ তথ্য দিয়েছিলেন৷ কিন্তু, এবার বিধানসভায় চাপের মুখে অবশেষে স্বীকার করেছেন, চিটফান্ড সংস্থাগুলি রাজ্য থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা লুঠ করে পালিয়েছে৷ শ্রীনাথ বলেন, এই টাকা রাজ্যের নিজস্ব আয়ের মাধ্যমে সঞ্চয় করা খুবই কঠিন৷ এক তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, এবছর রাজ্যের নিজস্ব আয় ১৭৪২ কোটি টাকা হবে বলে বাজেটে ধরা হয়েছে৷ তিনি জানান, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে ১৪০৬ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৫৭০ কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৬৩২ কোটি টাকা এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৭৩৭ কোটি টাকা রাজ্যের নিজস্ব আয় হয়েছে৷ তাতে পরিস্কার ৩০ বছরের রাজ্যের নিজস্ব আয় যোগ করলেও চিটফান্ড সংস্থাগুলি যে টাকা লুঠ করে পালিয়েছে তার সমান হবেনা৷
এদিন তিনি বলেন, বামফ্রন্ট সরকার চিটফান্ড সংস্থাগুলিকে সব রকম ভাবে সহায়তা করেছে৷ ২০১৩ সালে মে মাসে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, রাজ্য সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে আমানতকারীরা যাতে কোনভাবে প্রতারিত না হন৷ কিন্তু, সম্প্রতি সরকারী পোর্টালে অভিযোগের স্পষ্টিকরণ দিতে গিয়ে রাজ্য সরকার যে তথ্য তুলে ধরেছে তাতে স্পষ্ট চিটফান্ড কাণ্ডে রাজ্য সরকার জড়িত রয়েছে৷
বিধায়ক শ্রীনাথ বলেন, বিধানসভার শীতকালিন অধিবেশনে চিটফান্ড কাণ্ডে সিবিআই কাদের নোটিশ দিয়েছে এবং কাদের জেরা করেছে সেই প্রশ্ণ জমা দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, সেই প্রশ্ণ গ্রহণ করা হয়নি এবং বাতিল হয়েছে বলেও জানায়নি৷ তিনি বলেন, তাতে প্রমানিত হয়েছে চিটফান্ড নিয়ে রাজ্য সরকার গোপনিয়তা অবলম্বন করতে চাইছে৷ রতনবাবু আরো বলেন, চিটফান্ড সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ২০১০ সালে ২২টি, ২০১১ সালে ৯টি, ২০১২ সালে ১০টি, ২০১৩ সালে ৭৪টি, ২০১৪ সালে ২০টি এবং ২০১৫ সালে ৩টি মামলা হয়েছে৷ এসআইটি বর্তমানে ৭৮টি মামলার তদন্ত করছে৷ এরমধ্যে ১৮টি মামলায় চার্জশিট জমা দিয়েছে৷ কিন্তু, বাকি মামলাগুলি কি পর্যায়ে রয়েছে সে বিষয়ে কোন তথ্য জানাচ্ছে না রাজ্য সরকার৷ তাঁর বক্তব্য, চিটফান্ড সংস্থাগুলিকে বাচানোর উদ্দেশ্যেই বাকি মামলাগুলির কোন তথ্য জানা যাচ্ছেনা৷ তাঁর এই অভিযোগের পেছনে যুক্তি, চিটফান্ড সংস্থা জীবন সমৃদ্ধির মালিকের সাথে মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে৷ তাই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে৷ তাঁর মতে, চিটফান্ড কাণ্ডে শাসকদলের হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রিরা আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে পরেছেন৷ কারণ, বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের সাথে জীবন সমৃদ্ধি চিটফান্ডের মালিকের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ যখন তোলা হয়েছিল তখন খোদ মুখ্যমন্ত্রী সহ মন্ত্রিসভার কোন সদস্যই এর প্রতিবাদ জানাননি৷ তাঁর দাবি, আগামী দিনে চিটফান্ড সংস্থাগুলির সাথে ঘনিষ্ঠতার বহু প্রমাণ মিলবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *