BRAKING NEWS

মুকুল রায় চাইলে রাজ্য থেকে তৃণমূলকে হঠানো কোনও ব্যাপার নয় : জেটলি

কলকাতা, ৬ নভেম্বর ( হি.স.): সোমবার সাত সকালে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা বি জে পি-র শীর্ষ নেতা অরুণ জেটলির বাড়িতে পৌঁছে যান সদ্য বি জে পি-তে যোগদান করা এরাজ্যে সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে আলোচিত রাজনীতিক মুকুল রায় ৷ মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠদের সুত্রে জানা গেছে, এদিন সকালে জেটলির বাড়িতে প্রায় এক ঘণ্টা ছিলেন মুকুল রায় ৷ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বি জে পি-র শীর্ষ নেতৃত্বর আর্শীবাদ মাথায় নিয়েই বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বধ করতে এসেছেন মমতারই একসময়ের রাজনৈতিক সঙ্গী মুকুল রায় ৷ আসলে তাকে বি জে পি-তে যোগ দেওয়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশী আগ্রহী ছিলেন অরুণ জেটলি ৷ তিনিই শুরু থেকে কথাবার্তা চালিয়ে যান অমিত শাহের সঙ্গে ৷
গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীতে অমিত শাহ থেকে অরুণ জেটলি, কৈলাস বিজয়বর্গীর মতো শীর্ষ নেতৃত্বর সঙ্গে দফায় দফায় একাধিকবার বৈঠক করেছেন মুকুল রায় ৷ যা থেকে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আগামীদিনে বাংলায় বি জে পি-র মুখ হতে চলেছেন মুকুল রায় ৷ তাঁকে সামনে রেখেই মমতা বধের রূপরেখা তৈরি করছেন অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদী ৷
সোমবার দুপুরে বেলা ১২টা ১৫-র ফ্লাইটে দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেরেন মুকুল রায় ৷ রাজ্যে ফেরার আগে এদিন সকালে ফের অরুণ জেটলির বাড়িতে যান তিনি ৷ বি জে পি সূত্রের খবর, অরুণ জেটলি নিজে ফোন করে মুকুলকে নিজের বাড়িতে ডেকে নেন ৷ এদিন সকাল সওয়া আটটা নাগাদ তাঁর বাড়িতে যান তৃণমূলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ৷ রাজ্যে বি জে পি-র সাংগঠনিক বিস্তার কোন পথে সম্ভব তা নিয়ে দু-জনের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় ৷ পরে জেটলির সঙ্গে নিজের তোলা ছবি ফেসবুকে নিজের ওয়ালে পোস্টও করেন বি জে পি নেতা মুকুল রায় ৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে জহর কোর্ট, মতান্তরে মোদী কোর্ট পরে জেটলির সঙ্গে একই সোফায় বসে গল্প করছেন তিনি ৷
মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, বাংলায় তৃণমূলকে হঠিয়ে বি জে পি-র ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্রে মুকুল কার্যকারী ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে আশাবাদী বি জে পি-র শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ মুকুল ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের দাবি, ‘এদিন জেটলি মনে করিয়ে দিয়েছেন যে সি পি এমের মতো আদ্যান্ত শক্তিশালী সংগঠনে মোড়া দলকে রাজ্যের ক্ষমতা থেকে চ্যুত করার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য ৷ স্বাভাবিকভাবে তিনি চাইলে তৃণমূলকে এরাজ্য থেকে হঠানো কোনও ব্যাপারই না ৷ প্রত্যুত্তরে মুকুলও জেটলিকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘বাংলার মানুষ আমার সঙ্গে আছে ৷ তৃণমূলের দাম্ভিকতার বিরুদ্ধে নিচুতলার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন৷ একটু ধৈর্য্য ধরুন, দেখতে পাবেন বাংলায় কিভাবে তৃণমূলে ধস নামাই ‘ ৷
বি জে পি-র কেন্দ্রীয় স্তরের এক নেতার কথায়, ‘বাংলার বি জে পি-তে দক্ষ সাংগঠনিকের অভাব ছিল ৷ মুকুলবাবু বি জে পি-তে আসায় সেই অভাব পূরণ হল ৷ অমিতজিও ওঁনাকে নিয়ে ভীষণই আশাবাদী৷ আশাকরি এবার, বাংলায় পরিবর্তন ঘটবে ‘৷ওই নেতার কথায়, ‘মুকুলবাবু শুধু দক্ষ সংগটকই নন, উনি ভীষণ বিনয়ী, ভদ্র ও নম্র ৷ সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলার মানসিকতা রয়েছে ওঁনার৷ যা সংগঠন বিস্তারের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ‘৷
গতকাল রাতেই ফের বি জে পি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন মুকুল রায় ৷ দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্যে বি জে পি-র সাংগঠনিক বিস্তার নিয়ে এদিন সন্ধেয় অমিত শাহর বাসভবনে বৈঠকে বসেন মুকুল রায় ৷ মুকুল ঘনিষ্ঠ শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, বি জে পি-তে যোগ দিতে যাওয়ার সময় এরাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিস্তারিত তথ্য সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলের এক সময়ের ‘সেকেন্ড ইন কম্যান্ড ’৷ রাজ্যের বুথ ভিত্তিক ফলাফল ধরে কোথায় তৃণমূল শক্তিশালী, কোথায় তৃণমূল অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী ও কোথায় তৃণমূল দুর্বল তার তালিকা তৈরি করে রেখেছিলেন ৷ গতরাতে সেই তালিকা ধরেই বি জে পি সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করেন মুকুল ৷
অমিত শাহের কাছ থেকে তিনি জেনে নেন, রাজ্যের কোন কোন পয়েন্টে বি জে পি ও আর এস এসের কি ধরণের সংগঠন রয়েছে ৷ সূত্রের খবর, মুকুলবাবু এদিন অমিত শাহকে আশ্বস্ত করেছেন যে তাঁর বি জে পি-তে যোগদানের জেরে চলতি বছরের মধ্যেই তৃণমূলে বড়সড় ভাঙন নিশ্চিত ৷ ফলে এরাজ্যে বি জে পি-র সাংগঠনিক বিস্তার এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা ৷ রাজ্যের কোন জেলার কোন বিধানসভা থেকে কারা কারা তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন, সম্ভাব্য সেই তালিকাও অমিত শাহর হাতে তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক সময়ের রাজনৈতিক ছায়া সঙ্গী ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *