গুয়াহাটি, ১৮ জুন, (হি.স.) : দেশের অন্যতম প্রাচীন শক্তিপীঠ কামাখ্যাধামে আসন্ন অম্বুবাচি মেলার প্রস্তুতি পর্ব শেষ পর্যায়ে। ২২ থেকে ২৫ জুন রাত একটা পর্যন্ত গুয়াহাটির নীলাচল পাহাড়ের কামাখ্যাধামে অনুষ্ঠেয় অম্বুবাচি মেলাকে এবারও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে জোরদার প্রচারাভিযান চালানো হচ্ছে। মেলায় এবার কুড়ি লক্ষ ভক্ত সমাগম হবে বলে ধারণা করছে মেলা পরিচালন সমিতি ও পর্যটন দফতর। তাই ভক্তদের নিরাপত্তা ও আনাগোনাকে মসৃণ করতে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল এবং পর্যটনমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার কড়া নির্দেশে প্রশাসন নানা পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। জানিয়েছেন গুয়াহাটি মহানগর জেলাশাসক ড. এম অঙ্গমুথু।
জানান, ভক্ত-দর্শনার্থীকে সুরক্ষা দিতে বিভিন্ন দেওয়াল, গম্বুজ ইত্যাদিতে ৩০০টি সিসি ক্যামেরা সংস্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্ছিদ্র করতে কমপক্ষে এক হাজার অতিরিক্ত সুরক্ষাকর্মী নিয়োগ করা হবে। মন্দির চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ২১০ জন স্থায়ী এবং ২০০ জন অস্থায়ী সাফাইকর্মীকে ইতিমধ্যে নিয়োজিত করা হয়ে গেছে। তাছাড়া মেলা উপলক্ষে ২৪ ঘণ্টা বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা উপলব্ধ হবে বলেও জানান তিনি। এবার নীচের সড়ক থেকে পাহাড়ে মন্দির প্রাঙ্গণ পর্যন্ত গোটা রাস্তায় কোনও ধরনের খাদ্য সামগ্রী বিতরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলেও জানান জেলাশাসক।
জানান, মেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত পূর্ত বিভাগ, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, বিদ্যুৎ কোম্পানি, গুয়াহাটি পুর নিগম, পুলিশ বিভাগ, পুলিশ ও স্বাস্থ্যের আপৎকালীন বিভাগ, পরিবহণ, এনডিআরএফ-এসডিআরএফ ইত্যাদি বিভাগের প্রস্তুতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। মেলাকে সর্বাঙ্গসুন্দর ও নির্ঝঙ্ঝাট করতে সকল বিভাগের কর্তাদের সংঘবদ্ধভাবে কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছেন জেলাশাসক।
মেলায় দেশ-বিদেশের ভক্তবৃন্দের সম্ভাব্য আগমনের প্রতি লক্ষ্য রেখে তাঁদের যাতায়াত ব্যবস্থা, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, অনাময় (শৌচাদি ক্রিয়া) ব্যবস্থা ইত্যাদি সব বিষয়ে এক বিস্তৃত সরকারি পরিকল্পনার কথাও তিনি জানান। জানান, মেলায় আগত ভক্তবৃন্দের থাকা-খাওয়ায় স্বাচ্ছ্ন্দ্য আনতে এবারও ছয়টি বিশাল বিশাল শিবির তৈরি করা হয়েছে। ১০০-এর বেশি বাস এবং ফেরি ব্যবস্থা থাকবে যাতে নীলাচল পাহাড়ে ওঠে মা কামাখ্যা মন্দিরে ভক্তকুল যেতে পারেন।
এদিকে ইতিমধ্যে অম্বুবাচির সময় দেবী কামাখ্যামন্দিরে এসে জপতপ করে সাধনা সিদ্ধির জন্য দেশ , বিদেশের অসংখ্য ভক্ত, সন্ন্যাসী, সাধুসন্ত, নাগাসাধু, মহাপুরুষরা এসে ভিড় জমিয়েছেন। তাঁরা দেবীর প্রবৃত্তির আগে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্দিরে প্রবেশ করে পূজা-অর্চনা করেছেন।