কলকাতা, ৬ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের ‘মা-মাটি-মানুষ’ স্লোগানের এখন পরিবর্তন হয়েছে| স্লোগানের তিন ‘ম’-‘ম্যায়’(স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়), ‘মানি’ (অর্থ বা টাকা) ও ‘মুসলিম’-দের বাঁচাতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ময়দানে নেমে পড়েছেন| তৃণমূল কংগ্রেসের ‘মা-মাটি-মানুষ’ স্লোগানকে এভাবেই কটাক্ষ করলেন বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়| সোমবার শহিদ মিনারে রাজ্য বিজেপির ডাকে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও, পশ্চিমবঙ্গ বাঁচাও’ এক জনসমাবেশে রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেন, বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাদ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকারের মুসলিম তুষ্টিকরণের জন্য আজ বাংলার মাটিতে বাংলা ভাষা, বাংলার সংস্কৃতি ও সংস্কারের অবলুপ্তি ঘটছে| এরাজ্যে প্রথমবার কোন সরকার হিন্দুদের পুজোপাঠের উপর নানা ধরনের নির্দেশ জারি করেছে| আর রাজ্যে ভোট রাজনীতির জন্য মুসলিমদের তোষণ নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন| এজন্য নিজে হিজাব পরিধান করে নমাজ পড়ার ঢঙে ছবি দিয়ে শহরে ছেয়ে ফেলেছেন| আর এতেই বাংলার মাটিতে বাংলার সংস্কৃতি ও সংস্কার ধ্বংস হচ্ছে|
এদিন জনসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকারের এই মুসলিম তোষণ নীতিকে তুলোধনা করে তিনি বলেন, সরকারের এই নীতির কারণে সীমান্তবর্তী জেলাগুলো থেকে এখন হিন্দুরা পালিয়ে যাচ্ছে| কার্যত সীমান্তবর্তী জেলাগুলো এখন হিন্দুহীন হয়ে পড়ছে| তিনি আরও বলেন, যে বাংলায় ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আত্মবলিদানের ইতিহাস রয়েছে, সেই বাংলাকে বাঁচাতে ভারতীয় জনতা পার্টির বীর সৈনিকরা ফের প্রাণ দিতেও পিছপা হবেন না| এজন্য বাংলার ৱুদ্ধিজীবীদের ফের সোচ্চার হয়ে ওঠার জন্য তিনি আহ্বান জানান| তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিজেপি রাজ্য সরকারের বিরোধীতা করছে বলে পুলিশ প্রশাসনকে হাতিয়ার করে সরকার বিজেপির কর্মী-নেতাদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চক্রান্ত করছে| তবে পুলিশ প্রশাসনকে ‘বেচারা’ বলে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে পুলিশ এখন নিজেরাই সুরক্ষিত নয়, রাজ্যবাসীর সুরক্ষার দায়িত্ব তারা পালন করবে কীভাবে|
সারদা-রোজভ্যালির মত চিটফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্তে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা গ্রেফতার হওয়াকে কেন্দ্র করে তিনি বলেন, এটা গরিব মানুষের টাকা আত্মসাত্ করার ফল| গরিবের কষ্টের টাকা আত্মসাত্ করলে তাদের অভিশাপে একে একে ধরা পড়ছে| তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়ই দাবি করে পরবর্তীতে কাদের ধরা হতে পারে, তাদের নাম গড়গড় করে বলে দেন| তিনি আসলে জানেন সারদা-রোজভ্যালি বা নারদার টাকা কারা কারা নিয়েছেন| তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দিদি যদি সবাই জানেন, তাহলে চোর ভাইদের সঙ্গে নিজেও একদিন জেলে যেতে হবে| আর ওই ভাইদের সঙ্গে জেলে বসেই পরবর্তী বৈঠক করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন| একই সঙ্গে সভামঞ্চে বসেই দলের রাজ্য নেতাদের সিবিআই দফতরে গিয়ে মামলার গতি বাড়ানো ও দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য অভিযান আন্দোলন করার নির্দেশ দিয়েছেন|
2017-02-07