দুর্নীতি ও দলবিরোধী কাজে লিপ্ত থাকায় এক বছরে সিপিএম থেকে বহিসৃকত ৫৩৫ জন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ জুন৷৷ দুর্নীতি ও দল বিরোধী কাজের অভিযোগে গত এক বছরে সিপিএম থেকে ৫৩৫ জনকে বহিস্কার করা হয়েছে৷ ৫০১১ জন সদস্য পদ নবিকরণ করেননি৷ উল্লেখিত বছরে ৫৬১ জন সদস্য মারা গিয়েছেন৷ এই অবস্থাতেও সিপিএমের সদস্য সংখ্যা বেড়েছে ২২৪ শতাংশ৷ গত বছর সদস্য সংখ্যা ছিল ৮৯ হাজার ৫৭০ জন৷ এবছর বেড়ে হয়েছে ৯১ হাজার ৫৭৮ জন৷ রবিবার সিপিএম রাজ্য দপ্তরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য দিয়েছেন সম্পাদক বিজন ধর৷
DSC_5239রাজ্যের রাজনৈতিক শক্তি বিন্যাসের ক্ষেত্রে সিপিএম দলের সঙ্গে সাংগঠনিক জোর দেখানোর মতো দল এখনও সেভাবে দেখা যাচ্ছে না৷ প্রতিবছরই সিপিএম দল সাংগঠনিক পর্যালোচনা রিপোর্ট প্রকাশ করে৷ যদিও অন্য কোন দলে তা একেবারেই উপেক্ষিত৷ ইতিমধ্যেই সিপিএম দল রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপির শক্তি বিন্যাসের বিষয়ে পর্যালোচনা শুরু দিয়েছে৷ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার সুবাদে সিপিএম দলে অবক্ষয়, দুর্নীতি গ্রাস করে তা সাংগঠনিক রিপোর্টেই স্পষ্ট হয়েছে৷ এক বছরে দল বিরোধী ও দুর্নীতির কারণে ৫৩৫ জন বহিস্কারের ঘটনা উল্লেখযোগ্য সেই বিষয়ে সন্দেহ নেই৷ অন্যদিকে ৫০১১ জন সিপিএম সদস্য পার্টির সদস্য পদ নবিকরণ না করার ঘটনা ছোট করে দেখার উপায় নেই৷ এই বিষয়ে দলের রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, গত এক বছরে রাজ্যে বেশ কয়েকটি নির্বাচন হয়েছে৷ ঐসব নির্বাচনে দলের নেতা, কর্মী তথা সদস্যদের কাজকর্ম পর্যালোচনা করে দেখা হয়েছে৷ পার্টির কাছে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও দলবিরোধী কাজের অভিযোগ এসেছে, তা তদন্ত করে দেখা হয়েছে৷ তারপরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে৷ আগামী দিনেও যারা দুর্নীতি ও দল বিরোধী কাজের সাথে যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বিজনবাবু জানিয়েছেন৷ তিনি জানান, সিপিএম দলে মহিলা সদস্যার সংখ্যা বেড়েছে৷ গত বছর মহিলা সদস্যার সংখ্যা ছিল ২৬৪৯ শতাংশ৷ এবছর তা হয়েছে ২৬৯২ শতাংশ৷ পার্টির সদস্যপদ যারা নবিকরণ করেননি তাদের প্রসঙ্গে তিনি জানান, অনেকেই নবিকরণ করতে চাইলেও বিভিন্ন অশুভ শক্তির চাপে পড়ে তারা নবিকরণ করেননি৷ তবে সদস্যপদ নবিকরণ না করার পেছনে আর কি কি কারণ রয়েছে সেগুলি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷ অন্যদিকে, পার্টি প্লেনামে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল সেগুলিকে বাস্তব রূপ দেওয়ার জন্য পার্টি রাজ্যে নানা কর্মসূচী গ্রহণ করবে বলেও বিজনবাবু জানিয়েছেন৷
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে, সাংবাদিকদের এক প্রশ্ণের জবাবে বিজনবাবু জানান, রাজ্যে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ঘটনা নতুন নহে৷ এই খেলা অনেক পুরনো৷ আর প্রধান বিরোধী দল হিসেবে কোন দলকে সিপিএম মনে করছে এই প্রশ্ণের জবাবে বিজন ধর জানান, তা সময়ই বলে দেবে৷ অন্যদিকে, রাজ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ এই প্রসঙ্গে বিজনবাবু বলেন, রাজনৈতিকভাবে ঐ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিহত করার জন্য রাজ্যের সমস্ত অংশের মানুষকে নিয়ে আগামী দিনে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে৷