কলকাতা, ৩১ ডিসেম্বর৷৷ পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস-সিপিএমে জোট জল্পনা তুঙ্গে৷ পাঁচদিনব্যাপী সিপিএমের প্লেনাম শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক কংগ্রেসের সাথে জোটের প্রশ্ণে সম্ভাবনা জিইয়ে রাখলেন৷ পাশাপাশি বামেদের সাথে জোটের প্রস্তাব সরাসরি সোনিয়ার কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠালেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওমপ্রকাশ মিশ্র৷
এদিন, প্লেনাম শেষে ইয়েচুরি জানান, পরিস্থিতি বিচার করে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেবে পশ্চিমবঙ্গ সিপিএম রাজ্য কমিটি৷ তারপর কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটব্যুরো আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে৷ এদিকে, বামেদের সাথে জোটের প্রশ্ণে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেছেন দলের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওমপ্রকাশ মিশ্র৷ বামেদের সাথে জোটের প্রশ্ণে তাঁর ব্যাখ্যা, ২০১৪ বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে আগামী নির্বাচনে কংগ্রেস-বাম জোট নিশ্চিতভাবে তৃণমূলকে পরাস্ত করতে সক্ষম হবে৷ তিনি চিঠিতে কংগ্রেস-বামজোট আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ১৭০’র অধিক আসনে জয়লাভ করবে বলে দাবি করেছেন৷ এবিষয়ে তাঁর বক্তব্য, রাজ্যে যেভাবে তৃণমূল বিরোধী হাওয়া বইছে তাতে কংগ্রেস-বাম জোট নিশ্চিতভাবে ভালো ফলাফল করবে৷
শ্রীমিশ্র’র জোট নিয়ে সওয়ালকে ঘিরে তৃণমূল এবং বিজেপিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে৷ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় কটাক্ষের সুরে বলেছেন, কংগ্রেস ও বামেদের এই জোট রাজ্যবাসী প্রত্যাখ্যান করবে৷ এদিকে বিজেপির রাজ্যসভাপতি এই জোট প্রসঙ্গে কংগ্রেস ও সিপিএম সুবিধাবাদী রাজনীতির পরিচয় দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন৷
জোট প্রশ্ণে দ্বিধাবিভক্ত বামেদের কাছে সবচেয়ে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ফ্রন্টের বড় শরিক দল সিপিএম কোন পথে হাঁটে৷ কেরল লবি যেখানে পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের কংগ্রেসের সাথে জোট প্রশ্ণে বিরোধিতা করছে অন্যদিকে সিপিএমের কান্ডারিরা এরপক্ষে সওয়াল করছেন৷
তবে, সিপিএমের প্লেনামে শুধু কংগ্রেসের সাথে জোটের পাশাপাশি বৃদ্ধতন্ত্র নিয়েও ঝড় বইয়ে গেছে৷ সিপিএমের যুব নেতৃত্ব এবারে প্লেনামে নবীনদের বড় কোন পদে নিয়ে আসা হচ্ছে না৷ এই ইস্যুতে রীতিমত প্রবীণদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন৷ যেখানে প্রকাশ কারাত কিংবা সীতারাম ইয়েচুরিদের অল্প বয়সে পলিটব্যুরোতে জায়গা করে দিয়েছিল তাদের পূর্বসূরীরা৷ কিন্তু তাঁরা নবীন প্রজন্ম থেকে কাউকেই আর তেমনভাবে দলের উঁচু তলায় জায়গা করে দিচ্ছেন না৷ ত্রিপুরায় নৃপেন চক্রবর্তীর দৌলতে পলিটব্যুরোতে স্থান পেয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ কিন্তু এরপর থেকে আর কোন সিপিএমের মুখ পলিটব্যুরোতে ত্রিপুরা থেকে স্থান পাননি৷
এবারের প্লেনামে সিপিএমের যুব ব্রিগেড দলের উঁচু তলায় স্থান পাওয়ার প্রশ্ণে প্রবীণদের রীতিমত সমালোচনা করেছেন৷ একই সাথে যেখানে প্লেনামে যুব শক্তিকে বিশেষভাবে একত্রিত করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, অপরদিকে বৃদ্ধতন্ত্র নিয়ে দলের প্রবীণরা সমালোচিত হয়েছেন৷
2016-01-01