সুদের হার নির্ধারণ না করে নির্মাণ সংস্থাকে বেআইনীভাবে অগ্রিম দিয়েছে বাম সরকার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ অক্টোবর৷৷ বাম জমানায় পূর্ত ঘোটালায় প্রাক্তন পূর্ত মন্ত্রী বাদল চৌধুরী এবং প্রাক্তন পূর্ত কর্তা সুনীল ভৌমিক গ্রেপ্তার হয়েছেন৷ ওই ঘোটালা সংক্রান্ত নতুন তথ্য সামনে আনলেন আইন মন্ত্রী রতন লাল নাথ৷ কোন সুদ না নিয়েই ওই সময়ে নির্মাণকারী সংস্থাকে কোটি কোটি টাকা অগ্রিম দিয়েছে তদানিন্তন বামফ্রন্ট সরকার৷ যা সম্পূর্ণ বেআইনী বলে দাবি করেছেন আইনমন্ত্রী রতনলাল নাথ৷ তাঁর কথায়, সিপিডব্লিউডি এবং সেন্ট্রাল ভিলিল্যান্স কমিশনের নির্দেশিকা মোতাবেক নির্মাণ সংস্থাকে অগ্রিম দেওয়া হলে সুদের হার অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে৷ কিন্তু, ওই সময়ে পূর্ত দপ্তর কয়েক কোটি টাকা নির্মাণকারী সংস্থাকে সুদের হার নির্ধারণ না করেই বরাদ্দ করেছে৷


আজ মহাকরণে আইনমন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে পূর্ত দপ্তরে কাজের বন্টনে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে৷ কস্ট প্লাস ভিত্তিতে কাজের বরাত দেওয়া হলেও বহু কাজ আজও অসমাপ্ত রয়ে গিয়েছে৷ তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গস্থিত নির্মাণকারী সংস্থাগুলিকে বেছে বেছে কাজ দিয়েছে তদানিন্তন বামফ্রন্ট সরকার৷ অথচ তারা নির্দিষ্ট সময়ে সমাপ্ত করেনি৷ শুধু তাই নয়, কাজ সমাপ্ত করার বদলে সাব-কন্ট্রাক্টরদের হাতে সেই কাজ তুলে দেওয়া হয়েছে৷


তিনি জানান, পূর্ত দপ্তরে কাজের প্রত্যেকটি প্যাকেজে ৪৭টি ব্রীজ, ২৩টি বিল্ডিং এবং ৭টি রাস্তা নির্মাণের জন্য তালিকা তৈরি করা হয়েছিল৷ তাতে, পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি নির্মাণকারী সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল৷ তিনি জানান, রামকি ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ব্রীজ নির্মাণে ৫৩.৫০ কোটি এবং বিল্ডিং বানাতে ২১.৭০ কোটি ও ১৯.৩৭ কোটি টাকা পেয়েছে৷ তেমনি, রয়েল ইনফ্রা কন্সট্রাক্সন লিমিটেড ব্রীজ নির্মাণে ৭০.৬৫ কোটি টাকা পেয়েছে৷ এছাড়া, জিপিটি গ্রপকেও ব্রীজ নির্মাণে ৩৮.৮৮ কোটি এবং রাস্তা নির্মাণে ৩১.৭০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে৷ তাছাড়াও, অন্য আরেকটি ব্রীজ নির্মাণে জিপিটি গ্রুপ ২৯.৩৬ কোটি টাকা পেয়েছে৷ তিনি জানান, পূর্ত দপ্তরের কাজের জন্য রামকি ইনফ্রাসট্রাকসার লিমিটেড এবং কোল মাইন লিমিটেড যৌথভাবে ২৩৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে৷ অবশ্য, একটি রাস্তা নির্মাণে ২৫.৭ কোটি টাকা, তিনটি বিল্ডিং নির্মাণে ১৪.২৬ কোটি টাকা, ৪২.৮৭ কোটি টাকা এবং ২৪ কোটি টাকা ন্যাশনাল প্রজেক্টস কনস্ট্রাকসন কর্পোরেশনকে বরাদ্দ করেছিল বামফ্রন্ট সরকার৷


আইনমন্ত্রী বলেন, একাধিক নির্মাণকারী সংস্থাকে সমস্ত নিয়ম নীতি উলঙ্ঘন করে সুদের হার নির্ধারণ ছাড়াই কোটি কোটি টাকা অগ্রিম দিয়েছিল তদানিন্তন বামফ্রন্ট সরকার৷ তাতে, সিপিডব্লিওডি এবং সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনের সমস্ত নির্দেশিকা অমান্য করেছিল পূর্ত দপ্তর৷ ওই কাজ গুরুতর অপারাধের সমান বলে দাবি করেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *