নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ জানুয়ারি৷৷ ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশকে ৫.৫০ টাকা প্রতি ইউনিট দরে বিদ্যুৎ বিক্রি করা হবে৷ শনিবার ঢাকায় সোনারগাঁও হোটেলে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে সূত্র অনুসারে জানা গেছে৷ পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিক্রির ক্ষেত্রে কোন ধরনের ক্যাপাসিটি চার্জ নেওয়া হবে না বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ সূত্র অনুসারে জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিক্রির ক্ষেত্রে আরো অনেক ব্যয় জড়িত থাকলেও বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ বিক্রয়ে সেসব ধরা হয়নি৷ তাতে বাংলাদেশ যখন যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ক্রয় করবে সে পরিমাণ অর্থ তাদের দিতে হবে৷ বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে যতদূর জানা গেছে, এই ক্যাপাসিটি চার্জ নিয়ে জটিলতার কারণেই বিদ্যুতের বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ সম্ভব হয়ে উঠছিল না৷ বিদ্যুৎ ক্রয় করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্যতম দাবি ছিল ক্যাপাসিটি চার্জ বিক্রয় মূল্যের সাথে যাতে যুক্ত না থাকে৷ মূলত, ক্যাপাসিটি চার্জ হল বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ব্যতিত বিভিন্ন আনুষঙ্গিক খরচ৷
এদিন, ঢাকায় ত্রিপুরার তরফে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে৷ তাঁর সাথে ছিলেন বিদ্যুৎ দপ্তরের প্রধান সচিব এস কে রাকেশ, বিদ্যুৎ নিগমের সিএমডি এস কে রায় এবং এজিএম মহানন্দ দেববর্মা৷ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রকের অধিকর্তা ঘনশ্যাম প্রসাদ৷ এদিকে, বাংলাদেশের তরফে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেদেশের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ৷ তাঁর সাথে ছিলেন সেদেশের বিদ্যুৎমন্ত্রকের সচিব মনোয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব ড আহমেদ কায়কাউ সহ উ পদস্থ আধিকারিকরা৷ এদিন ত্রিপাক্ষিক ঐ বৈঠকে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়৷ তাতে উভয়পক্ষের তরফেই বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করা হয়৷ সূত্র অনুসারে জানা গেছে, বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ বিক্রয়ের ক্ষেত্রে দুই রাষ্ট্রের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্বমূলক সম্পর্ককে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷
সূত্র অনুসারে জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অনেক কিছু ব্যয় ধরা থাকে৷ কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এবিষয়ে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ সূত্র অনুসারে আরো জানা গেছে, বাংলাদেশকে বিদ্যুতের বিক্রয় মূল্য নিয়ে যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তাতে কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদন দিয়েছে৷ তবে কিছু প্রক্রিয়াগত বিষয় এখনো বাকি রয়েছে৷ সমস্ত কিছু চূড়ান্ত হয়ে গেলে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে৷
বিদ্যুৎ দপ্তর সূত্রে খবর, খুব শীঘ্রই বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে৷ কারণ, ইতিমধ্যে ত্রিপুরার অংশে এবং বাংলাদেশের অংশে বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে৷ পরীক্ষামূলকভাবে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেও দেখা হয়ে গেছে৷ দুই পারের প্রযুক্তিগত খঁুটিনাটিও পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়ে গেছে৷ তাতে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহে কোন সমস্যা নেই বলে পিজিসিআইএলের তরফে সবুজ সংকেত মিলেছে৷ মূলত, মূল্য নির্ধারণ নিয়ে জটিলতার কারণেই বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছিল না৷ এনিয়ে বহুবার বৈঠক হয়েছে৷ কিন্তু তাতে কোন সুরাহা বের হচ্ছিল না৷ অবশেষে সিদ্ধান্ত হয় ঢাকায় গিয়ে ভারত সরকার, বাংলাদেশ সরকার এবং ত্রিপুরা সরকারের প্রতিনিধিদের এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করা হবে৷ আশা করা হচ্ছিল এই বৈঠকে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারিত হয়ে যাবে৷ সে মোতাবেক এই বৈঠকেই শনিবার বাংলাদেশকে বিদ্যুতের বিক্রয়মূল্য চূড়ান্ত হয়েছে বলে সূত্র অনুসারে জানা গেছে৷ তবে, এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে বাংলাদেশকে বিদ্যুতের বিক্রয় মূল্য নিয়ে কোন ঘোষণা হয়নি৷
2016-01-10