বিহারে নৃশংসতা : পাটনার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গোপাল খেমকার হত্যাকাণ্ডে তদন্তে নামলো এসআইটি, রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে

পাটনা, ৫ জুলাই : পাটনার খ্যাতনামা ব্যবসায়ী ও মগধ হাসপাতালের মালিক গোপাল খেমকার হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে গান্ধী ময়দান এলাকার প্যানাশ হোটেলের কাছে দুর্বৃত্তদের গুলিতে খেমকা নিহত হন। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিহারের ডিজিপি বিনয় কুমার জানান, সিটি এসপির নেতৃত্বে একটি এসআইটি গঠন করা হয়েছে এবং ঘটনাস্থল তদন্তে ফরেনসিক টিম উপস্থিত হয়েছে। ডিজিপি আরও জানান, স্টেট টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-কেও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য যুক্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এটি সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গোপাল খেমকার মৃত্যুতে বিহারজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তিনি ছিলেন মগধ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যাংকিপুর ক্লাবের ডিরেক্টর। ২০১৮ সালে তার ছেলে গুঞ্জন খেমকাও একইভাবে বাইক আরোহী আততায়ীদের হাতে খুন হন, যার তদন্ত আজও অমীমাংসিত। গতরাতের ঘটনার সময় খেমকা নিজের বাড়ির সামনে গাড়ি থেকে নামছিলেন। সেই সময় অজ্ঞাতপরিচয় বাইক আরোহীরা কাছ থেকে গুলি চালায়।

খেমকার ভাই শংকর খেমকা পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন। তিনি জানান, রাত ১১টা ৪০ মিনিটে ঘটনা ঘটে, কিন্তু পুলিশ আসে রাত ২:৩০ নাগাদ। প্রায় তিন ঘণ্টা লেগে যায়। এটা চূড়ান্ত অবহেলা। পাটনার সিটি এসপি (সেন্ট্রাল) দীক্ষা কুমারী জানান, ঘটনার খবর পেয়ে আমরা রাতেই পৌঁছাই। ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলা হয়েছে। গুলির খোল উদ্ধার হয়েছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোপাল খেমকার শরীরে একটি গুলির আঘাত পাওয়া গেছে। ফরেনসিক দল প্রমাণ সংগ্রহ করেছে।

ঘটনার জেরে বিহার বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। পূর্নিয়া লোকসভার সাংসদ রাজেশ রঞ্জন ওরফে পাপ্পু যাদব খেমকার বাড়ি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ‘সুশাসন’ এর দাবিকে চ্যালেঞ্জ করেন। তিনি বলেন, এই রাজ্যে এখন কেউ নিরাপদ নয়। একজন ব্যবসায়ী পরিবারে দুইজন সদস্যকে একইভাবে খুন করা হয়েছে। প্রশাসনের ব্যর্থতা স্পষ্ট।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে গোপাল খেমকার পুত্র গুঞ্জন খেমকা(৩৮) বাইক আরোহী দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়েছিলেন। ওই সময় তিনি পাটনার বাইরের বৈশালীর একটি কটন ফ্যাক্টরির বাইরে গাড়ি থেকে নামছিলেন। সেই মামলা আজও অমীমাংসিত, আর এবার গোপাল খেমকা নিজেই ঠিক একইভাবে খুন হলেন। গোপাল খেমকার হত্যাকাণ্ড বিহারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে। এই হত্যার ঘটনা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী পক্ষের বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।

Leave a Reply