প্রবাসী ভারতীয়রা আমাদের গর্ব, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে ভারতীয় কমিউনিটি অনুষ্ঠানে প্রশংসায় মুখর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

পোর্ট অফ স্পেন, ৪ জুলাই : প্রবাসী ভারতীয়রা আমাদের গর্ব। ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে ভারতীয় কমিউনিটি অনুষ্ঠানে এভাবেই প্রশংসায় মুখর হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি প্রবাসী ভারতীয়দের সংস্কৃতির প্রতি নিষ্ঠা, সংগ্রামী মনোভাব ও ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে তাদের বিশাল অবদানের জন্য ভূয়সী প্রশংসা করেন।

আজ ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ ভারতীয় প্রবাসী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ-বিসেসর, তাঁর মন্ত্রিসভা ও সংসদের সদস্যগণ এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে ভারতীয় প্রবাসীদের তরফে ঐতিহ্যবাহী ও বর্ণময় ‘ইন্দো-ত্রিনিদাদিয়ান’ অভ্যর্থনা জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কমলা প্রসাদ-বিসেসর ঘোষণা করেন, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর সর্বোচ্চ জাতীয় সম্মান “অর্ডার অব দ্য রিপাবলিক অব ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো” প্রধানমন্ত্রী মোদীকে প্রদান করা হবে। এই সম্মানে ভূষিত হওয়ার ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রী মোদী কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর জনগণ ও সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে যখন ভারতীয় অভিবাসনের ১৮০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপিত হচ্ছে, সেই সময়ে আমার এই ঐতিহাসিক সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।” তিনি প্রবাসী ভারতীয়দের সংস্কৃতির প্রতি নিষ্ঠা, সংগ্রামী মনোভাব ও ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে তাদের বিশাল অবদানের জন্য ভূয়সী প্রশংসা করেন।

প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, এখন থেকে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের ষষ্ঠ প্রজন্ম পর্যন্ত ওসিআই (ভারতের বিদেশী নাগরিক) কার্ড প্রদান করা হবে। এই ঘোষণায় উপস্থিত প্রবাসীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ও জোর করতালির সৃষ্টি হয়।

তিনি আরও জানান, ভারত সরকার ‘গিরমিটিয়া’ উত্তরাধিকার রক্ষায় বিভিন্ন প্রকল্পে সহায়তা প্রদান করবে। প্রধানমন্ত্রী ভারত ও ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর মধ্যে বিশেষ সম্পর্ক জোরদারে কমলা প্রসাদ-বিসেসরের ভূমিকাকে ধন্যবাদ জানান।

নিজের ভাষণে তিনি ভারতের অভাবনীয় উন্নয়নের কথাও তুলে ধরেন। অবকাঠামো, ডিজিটাল প্রযুক্তি, উৎপাদন, সবুজ শক্তি, মহাকাশ বিজ্ঞান, উদ্ভাবন ও স্টার্টআপ ক্ষেত্রে ভারতের সাফল্যের উপর তিনি আলোকপাত করেন। তিনি জানান, গত এক দশকে ২৫ কোটি মানুষকে চরম দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, অচিরেই ভারত বিশ্বের শীর্ষ তিনটি অর্থনীতির মধ্যে একটি হয়ে উঠবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), সেমিকন্ডাক্টর ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিং-এ জাতীয় মিশন ভারতের নতুন অগ্রগতির ইঞ্জিন হয়ে উঠছে। ভারতের ইউপিআই-ভিত্তিক ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার সফলতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতেও এটি সফলভাবে কার্যকর হবে।

‘বসুধৈব কুটুম্বকম’—“বিশ্ব এক পরিবার” এই প্রাচীন ভারতীয় দর্শনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারির সময় ভারত বিশ্বকে সহায়তা করার যে ভূমিকা নিয়েছে, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর উন্নয়ন যাত্রায় ভারত আগামীতেও পাশে থাকবে।

৪০০০-রও বেশি মানুষ এই অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। সেখানে মহাত্মা গান্ধী ইনস্টিটিউট ফর কালচারাল কো-অপারেশন ও অন্যান্য সংগঠনের শিল্পীরা মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপন করেন।

Leave a Reply