BRAKING NEWS

মহারাষ্ট্রের জনগণকে রাজ্যের প্রতিটি আসনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে এনডিএ প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান মোদীর

মুম্বই, ৮ এপ্রিল (হি. স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দিয়েছেন এবং মহারাষ্ট্রের জনগণকে রাজ্যের প্রতিটি আসনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে এনডিএ প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়েছেন।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডে, উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী রামদাস আঠাওয়ালে, গড়চিরৌলি লোকসভা আসনের প্রার্থী শ্রী অশোক নেতে এবং চন্দ্রপুর লোকসভা আসনের প্রার্থী শ্রী সুধীর মুনগান্টিওয়ার এবং অন্যান্য কার্যকর্তার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজি উপস্থিত জনগণকে হিন্দু নববর্ষ এবং গুড়ি পরব উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজি, জনগণের সামনে বিজেপি সরকারের ১০ বছরের উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তিগুলি তুলে ধরে আসন্ন নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টিকে বিজয়ী করার আবেদন করেছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন যে, দেশের রাজনৈতিক পারদও বাড়ছে, পাশাপাশি গরমের তাপমাত্রাও বাড়ছে, কিন্তু জনগণের উৎসাহ ও উদ্দীপনায় কোনও ঘাটতি নেই। চন্দ্রপুর সহ গোটা দেশ আবারও মোদী সরকারকে দেশের ক্ষমতায় আনার জন্য মনস্থির করেছে। তিনি বলেন, রাম মন্দির ও নতুন সংসদ ভবন গঠনের কাজে চন্দ্রপুরের কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন আসলে স্থিতিশীলতা বনাম অস্থিরতার লড়াই। একদিকে, বিজেপির এনডিএ সরকার জাতীয় স্বার্থে বড় সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু অন্যদিকে কংগ্রেস এবং ইন্ডি জোটের মূল মন্ত্রই হল ‘যেখানেই ক্ষমতা পাবে, সেখানেই কমিশন খাবে’। ইন্ডি জোটের দলগুলো সবসময় দেশকে অস্থিরতার মধ্যে ফেলেছে। একটি স্থিতিশীল সরকারের গুরুত্ব মহারাষ্ট্রের চেয়ে কেউ ভালো বুঝবে না। যতদিন ইন্ডি জোটের দলগুলি কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিল, ততদিন মহারাষ্ট্র অবহেলিত ছিল। এই ইন্ডি জোটের অন্তর্গত দলগুলোর সরকার কমিশন ছাড়া মহারাষ্ট্রর কোনো প্রকল্প অনুমোদন করেনি। বিরোধী দলগুলি নতুন বিমানবন্দর, শোধনাগার, মুম্বই মেট্রোর কাজ সহ বহু উন্নয়ন প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। এমনকি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বাবদ কেন্দ্র থেকে অনুদান পাওয়া সত্ত্বেও দরিদ্রদের ঘর দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের লক্ষ্য একটাই, কমিশন পাওয়া, নয়তো কাজ বন্ধ করা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেন, বিজেপি সরকার মহারাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্য এই সমস্ত প্রকল্প আবার শুরু করেছে। মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডে, উপমুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস এবং শ্রী অজিত পাওয়ার সহ মহারাষ্ট্র সরকারের সবাই এই নিয়ে দিনরাত কাজ করছে। উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সঠিক হলে ফলাফলও ভাল আসে। আজ দেশের দলিত, অনগ্রসর শ্রেণী, উপজাতি ও দরিদ্ররা মোদী সরকারকে তাদের নিজেদের সরকার বলে মনে করে। তিনি বলেন, মোদী কোনও ধনী পরিবারে জন্ম নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হননি, মোদীর জন্ম দরিদ্র পরিবারে এবং আপনারাই তাকে এই প্রধানমন্ত্রী পদে পৌঁছে দিয়েছেন। আগে দলিত, অনগ্রসর শ্রেণী, উপজাতি ও দরিদ্রদের পাকা ঘর ছিল না, তাদের জল, বিদ্যুৎ সংযোগ ও পাকা রাস্তা ছিল না। মোদীর গ্যারান্টি ছিল যে, বিজেপি সরকার দলিত, উপজাতি এবং অনগ্রসর পরিবারের জীবন পরিবর্তন করতে কাজ করবে। আজ দেশের ৪ কোটি গরিব মানুষ যারা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মাধ্যমে বাড়ি পেয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই দলিত, অনগ্রসর শ্রেণী, উপজাতি সম্প্রদায়ের। যে ১০ কোটি পরিবার বিনামূল্যে উজ্জ্বলা যোজনার গ্যাস সংযোগ পেয়েছেন এবং পাকা শৌচালয় করে দেওয়া হয়েছে, ৮০ কোটি মানুষ যারা বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন, তাদের মধ্যে অধিকাংশই দলিত, উপজাতি এবং অনগ্রসর পরিবারের। ৫০ কোটিরও বেশি দরিদ্র মানুষ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে স্বাস্থ্যবীমা পাচ্ছেন এবং কিষাণ সম্মান নিধির টাকা ১১ কোটি কৃষকের অ্যাকাউন্টে সরাসরি পৌঁছচ্ছে। আজ দলিত ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ মাথা উঁচু করে জীবনযাপন করছে। এটা মোদীর কারণে নয়, দেশের মানুষের একটি ভোটের কারণে সম্ভব হয়েছে। জনগণ মোদীকে আশীর্বাদ করেছে, তাই দেশের উন্নয়নের জন্য দেশের মানুষ সমান ভাগিদার। রাজনৈতিক দলগুলোর কাজই হলো জনগণের সমস্যা সমাধান, কিন্তু কংগ্রেস নিজেই সমস্যার জন্মদাতা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেন, ধর্মের নামে দেশকে বিভক্ত করা এবং কাশ্মীর সমস্যা তৈরি করার পেছনে কংগ্রেসেরই সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল। ভারতের সমসাময়িক সময়ে স্বাধীনতা পাওয়া অন্যান্য দেশ এগিয়ে গেল, অথচ আমাদের দেশ পিছিয়েই রইলো। আমাদের দেশ কয়েক দশক ধরে সন্ত্রাস হামলার শিকার হয়েছে। আগে প্রায় প্রতিদিনই বোমা বিস্ফোরণ হতো। কংগ্রেস তোষণের রাজনীতির জন্য সন্ত্রাসীদের সুরক্ষা দিয়ে এসেছে। দেশে নকশাল সমস্যা গুরুতর হয়েছিল, এই সমস্যার মূলেও কংগ্রেসের ভূমিকা আছে। স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও কংগ্রেস আমলে ৫০০ বছরের পুরনো রাম মন্দির পুরনো বিতর্ক বজায় ছিল এবং কংগ্রেস অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণেও বাধা সৃষ্টি করেছিল। কংগ্রেস আদালতে ভগবান শ্রীরামের অস্তিত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল। রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানও বয়কট করেছিল কংগ্রেস। কয়েক দশক কংগ্রেস দেশ শাসন করলেও বাবা সাহেব ভীমরাও আম্বেদকরকে ভারতরত্ন দেয়নি। কংগ্রেস অনগ্রসর শ্রেণীর কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদা না দিয়ে অনগ্রসর শ্রেণীর সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।

মোদী বলেছেন, সমগ্র দেশবাসী এনডিএ-কে পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে আশীর্বাদ করেছে এবং বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার বড় সমস্যাগুলির স্থায়ী সমাধান করেছে। এখন শুধু মহারাষ্ট্রে নয়, গোটা দেশেই নকশালবাদ দুর্বল হয়ে পড়েছে। গড়চিরৌলি, যা নকশাল হিংসার জন্য পরিচিত ছিল, এখন উন্নয়ন এবং ইস্পাত কোম্পানির জন্য আলোচিত হচ্ছে। গড়চিরৌলি এখন ইস্পাত শহরে পরিণত হতে চলেছে। একটি মারাঠি প্রবাদ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করলাকে ঘিতে ভাজুন বা চিনিতে গলিয়ে ফেলুন না কেন, এটি যেমন তিক্ত তেমনই তিক্ত থাকবে। এই কথাটি কংগ্রেসের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। নিজস্ব ত্রুটির জন্য এখন কংগ্রেস পার্টি দেশের অভ্যন্তরে জনসমর্থন হারিয়েছে। তাই এখন কংগ্রেস প্রকাশ্যেই ডিভাইড এন্ড রুল খেলা শুরু করেছে। কংগ্রেসের ইস্তেহারকে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেস নিজস্ব ইস্তেহারে মুসলিম লীগের ভাষাও লিখেছে। কংগ্রেস সাংসদরা ভারত ভাগের কথা বলছেন। ইন্ডি জোটের লোকেরা দক্ষিণ ভারতকে আলাদা করার হুমকি দিচ্ছে, ডিএমকে পার্টি ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়া বলে সনাতনকে নির্মূল করার কথা বলে, কিন্তু কংগ্রেস এবং নকল শিবসেনার লোকজন তাদের দিয়ে সমাবেশ করায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সম্প্রতি কংগ্রেস অধ্যক্ষ কাশ্মীরকে অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এটা কংগ্রেসের বিভেদমূলক চিন্তাভাবনা। কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। যখন কাশ্মীর সন্ত্রাসের আগুনে পুড়ছিল এবং কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বাড়িঘর পোড়ানো হচ্ছিল, তখন প্রয়াত বালা সাহেব ঠাকরে প্রকাশ্যে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নেমেছিলেন। তখন তিনি মনে করেননি মহারাষ্ট্রের সঙ্গে কাশ্মীরের কোনও সম্পর্ক নেই। মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিন্ডের সরকার পূর্ণ শক্তিতে বালা সাহেবের ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী উপস্থিত জনগণকে আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির পক্ষে ব্যাপকভাবে ভোট দেওয়ার এবং টানা তৃতীয়বারের মতো বিজেপি সরকার গঠনে অবদান রাখার জন্য আহ্বান করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *