BRAKING NEWS

বকেয়া ডিএ–এর দাবিতে শিল্পাঞ্চলে ধর্মঘটে মিশ্র প্রভাব

দুর্গাপুর, ১০মার্চ (হি. স.) দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা(ডিএ) দাবিতে রাজ্যজুড়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশের লড়াই চলচ্ছে। রাজধানী কলকাতায় শহিদ মিনারে ৪০ দিন ধরে অবস্থানে বসেছে উস্থি প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন। তার মধ্যে শুক্রবার রাজ্যব্যাপী সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ধর্মঘটে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে রাজ্য সরকারী অফিসে হাজিরায় মিশ্র প্রভাব ছিল। কয়েকজন কর্মচারী হাজির থাকলেও দুর্ভোগে পড়েন সাধারন মানুষ। আবার হুমকিকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠন জারি থাকলেও শিক্ষক শিক্ষিকাদের হাজিরা ছিল হাতে গোনা।

প্রসঙ্গত, বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা(ডিএ) সহ তিন দফা দাবীতে রাজ্যের ৪২ টি সংগঠন আন্দোলনে নেমেছে। শুক্রবার ছিল রাজ্যব্যাপি রাজ্য সরকারিকর্মীদের ধর্মঘট। তাদের দাবিগুলি হল অবিলম্বে বকেয়া মহার্ঘ্যভাতা মেটাতে হবে। রাজ্যের সমস্ত শূন্য পদে যোগ্য ব্যক্তিদের সচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ করতে হবে। এবং অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরন করতে হবে। মূলত এই তিনটি দাবীকে সামনে রেখেই শুক্রবারের ধর্মঘট। শুক্রবার ধর্মঘটের সমর্থনে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে একটি মিছিল সংগঠিত হয়। বিভিন্ন সরকারি অফিসের সামনে সাময়িক বিক্ষোভ প্রদর্শন ও অবস্থান বিক্ষোভ হয় ধর্মঘটিদের। দুর্গাপুর মহকুমার খাদ্য, শ্রম দফতরে হাজিরা ছিল হাতেগোনা। আর তাই সরকারি অফিসে এদিন কাজকর্ম কার্যত লাটে ওঠে। একইরকমভাবে দুর্গাপুর, কাঁকসা ও অন্ডালে বিভিন্ন প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকাদের হাজিরা তেমন ছিল না। চরম অচলাবস্তার সৃষ্টি হয়। বেশ কয়েকটি স্কুলে এক প্রকার বন্ধ ছিল বলে দাবী আন্দোলনকারীদের।

উস্তি প্রাইমারি শিক্ষক সংগঠনের পক্ষে রঞ্জিত সাহা দাবি করে বলেন,” অবিলম্বে বকেয়া মহার্ঘ্যভাতা মেটাতে হবে। রাজ্যের সমস্ত শূন্য পদে যোগ্য ব্যক্তিদের সচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ করতে হবে। এবং অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরন করতে হবে।” তিনি আরও বলেন,” গতকাল স্কুলে স্কুলে শাসকদলের পক্ষে হুমকি দিয়ে এসেছিল। তবুও দুর্গাপুরে তিনটি সার্কেলের প্রায় ৩০০ র বেশী শিক্ষক শিক্ষিকা ধর্মঘটে সামিল হয়েছে। দুর্গাপুর নর্থ সার্কেলে ৪৬ টি, দুর্গাপুর-২ সার্কেলে ১৪ টি, কাঁকসা-১ ও ২ মিলিয়ে ১০ টির মত স্কুল এক প্রকার বন্ধ ছিল। সব মিলিয়ে গড়ে ৫০ শতাংশ হাজিরা ছিল শিক্ষক শিক্ষিকাদের।” তবে এদিন পান্ডবেশ্বর ও দুর্গাপুর ফরিদপুর ব্লকে ধর্মঘটের তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। এদিন ধর্মঘটে ঝান্ডা ছাড়া রাম-বাম সব দলই মিলে মিশে ময়দানে নেমেছিল। বিজেপির কিষান মোর্চার পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক তথা আন্দোলনকারী শিক্ষক বুদ্ধদেব মন্ডল বলেন,” দাবিতে অনড়। দলমত নির্বিশেষে রাজ্য সরকারী কর্মচারীরা এই ধর্মঘটে সামিল হয়েছে। পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে আগাম শিক্ষা দফতরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ধর্মঘটের জন্য কোন এক রবিবার স্কুল চালু রেখে পঠনপাঠন করানো হবে।”
তবে আন্দোলনের দাবীকে নৈতিক সমর্থন করলেও ধর্মঘটে সামিল ছিল না সঙ্ঘ পরিবারের বঙ্গিয় নবউন্মেষ প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন। এদিন সংগঠনের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক জয়দেব পাঁজা জানান,” বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা(ডিএ)আন্দোলনে রয়েছি। দাবিগুলিতে নৈতিক সমর্থন রয়েছে। তবে পড়ুয়াদের পঠন পাঠনে কোন ক্ষতি হোক এটা চাই না। তাই ধর্মঘটে সমর্থন নেই।”

আবার পশ্চিম বর্ধমান তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি কলিমূল হক্ বলেন,” ডিএ র দাবী থাকতে পারে। পড়ুয়াদের ক্ষতি করে আন্দোলন করা উচিত নয়।”
এদিন জেলায় প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের হাজিরা প্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) দেবব্রত পাল বলেন,” জেলায় ১০১৩ টি স্কুল। এদিন ৯০ শতাংশ হাজিরা ছিল। স্কুল বন্ধের কোন খবর নেই।”

উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পশ্চিম বর্ধমান জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) সুনীতি সাঁপুই জানান,” জেলায় ৩০৩ টি স্কুল। এদিনের রিপোর্ট অনুযায়ী শিক্ষক শিক্ষিকাদের ৭৬ শতাংশ হাজিরা ছিল। স্কুল বন্ধ থাকার কোন খবর নেই।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *