BRAKING NEWS

মিশন জিরো পোল ভায়োলেন্স, নিরপেক্ষভাবে আধিকারিকদের তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে : মুখ্যসচিব

আগরতলা, ৩১ ডিসেম্বর : আসন্ন রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন সুষ্ঠ ও অবাধভাবে সম্পন্ন করা এবং রাজ্যে সর্বোচ্চ ভোটদানের যে ঐতিহ্য রয়েছে তা বজায় রাখার লক্ষ্যে রাজ্য নির্বাচন দপ্তরের উদ্যোগে আজ “মিশন জিরো পোল ভায়োলেন্স’ ও ‘মিশন ৯২৯’ চালু হয়েছে। বিকালে প্রজ্ঞাভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা এই দুটি মিশনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। এই দুটি মিশনের আনুষ্ঠানিক সুচনা করে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বলেন, রাজ্যে ভোট মানে উৎসব। একে উৎসবের আকারেই দেখতে হবে। গণতন্ত্রকে রক্ষা করার এটাই যথাযথ সময়। ভোটের কাজে যেসমস্ত আধিকারিকগণ যুক্ত রয়েছেন তাদের উদ্দেশ্য করে মুখ্যসচিব বলেন, গণতন্ত্রকে রক্ষা করার মহান দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে। নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সব ধরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশা প্রকাশ করে মুখ্যসচিব বলেন, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে আধিকারিকদের এই সময়ে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি অমিতাভ রঞ্জন বলেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সমস্ত ভোটাররাই যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তা সুনিশ্চিত করা হবে। সম্পূর্ণ ভয়মুক্ত পরিবেশে যাতে গণদেবতারা তাদের রায় জানাতে পারেন সেজন্য সমস্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাবাহিনীর কোন সমস্যা হবেনা বলে উল্লেখ করে ডিজিপি বলেন, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় রোড পেট্রোলিং শুরু হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজ্যে উৎসবের মেজাজে যাতে ভোট হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন সম্পর্কিত কোন অভিযোগ এলেই সঙ্গে সঙ্গে সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। সিআরপিএফ-এর ত্রিপুরা সেক্টরের আইজি রথিদ্বীপ সিং সাহী বলেন, সিআরপিএফ এবং অন্যান্য আধা সামরিক বাহিনী দেশের যেকোন নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেও আধাসামরিক বাহিনী তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে প্রশাসনের যথাযথভাবে সমন্বয় সাধন করতে হবে। এই ছোট্ট রাজ্যে অন্য অনেক রাজ্যের তুলনায় ভোটাররা অধিক সংখ্যায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করে থাকেন। এটা খুবই প্রশংসার দাবী রাখে। এই ঐতিহ্য এবারও বজায় থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

স্বাগত ভাষণে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক কিরণ গিত্যে বলেন, মিশন মুডে রাজ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতিপর্ব চালানো হচ্ছে। নির্বাচন সম্পর্কিত কোন হিংসাত্বক ঘটনা যাতে না ঘটে তা সুনিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য রাজ্যের ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্রেই কর্মশালা আয়োজন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই কর্মশালাগুলিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, পুলিশ আধিকারিকগণ থাকবেন।

উভয় পক্ষের সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে যাতে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় থাকে এই উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ডিসেম্বর মাস থেকেই বহির্রাজ্য থেকে নিরাপত্তাবাহিনী আসা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০ কোম্পানী আধাসামরিক বাহিনী এসে পৌঁছে গেছে। আরও ৫০ কোম্পানী আধাসামরিক বাহিনী রাজ্যে আসছে। রাজ্যে সর্বোচ্চ হারে ভোটদানের যে রেকর্ড রয়েছে তা এবারও অক্ষুন্ন থাকবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এবিষয়ে সবাইকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। সব কয়টি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রেই যাতে ভোটারদের জন্য সব ধরণের সুযোগ সুবিধা থাকে তা সুনিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে হুইল চেয়ার থাকবে। কোন ভোটারই যাতে তাদের ভোটদানে বঞ্চিত না হন তা সুনিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় সব ধরণের উদ্যোগ নিচ্ছে।

অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি সৌরভ ত্রিপাঠি, রাজ্য পুলিশের আইজি ওয়েলফেয়ার গৌরব চক্রবর্তী, স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী প্রমুখ। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, বিভিন্ন বিধানসভা আসনের আরও, এআরও, আরক্ষা দপ্তরের অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *