BRAKING NEWS

সিপিএমের পদযাত্রায় যাওয়ার অপরাধে ছেলের হাতে বেধড়ক মার খেলেন মা

মাড়গ্রাম, ১৯ নভেম্বর (হি. স.) : গ্রামে সিপিএমের পদযাত্রায় সামিল হয়েছিলেন মা। এই ছিল হতদরিদ্র বৃ্দ্ধার ‘অপরাধ’। তারই খেসারতে বেধড়ক মার খেয়ে কোমড়ে, পায়ে গুরুতর জখম নিয়ে হয়েছেন শয্যাশায়ী।অসহ্য যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন বৃদ্ধা। হামলাকারি নিজের ছেলেই। তার মায়ের উপর করেছে এমন আচরন। কারন ছেলে গ্রামের তৃণমূলের পঞ্চায়েত মেম্বার। শারিরীক ও মানসিক যন্ত্রণা নিয়েই ছেলের বিরুদ্ধে মা দ্বারস্থ হয়েছেন পুলিশের কাছে। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের মাড়গ্রাম থানার দুনিগ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামে।

ওই গ্রামে গত বৃহস্পতিবার সিপিএমের উদ্যোগ ‘চোর তাড়াও, গ্রাম জাগাও’ পদযাত্রার আয়োজন হয়েছিল । ওই মিছিলে স্বামী ও ছোট ছেলেকে নিয়ে সামিল হয়েছিলেন বৃ্দ্ধা শিখা লেট। শিখা লেটের বড় ছেলে বিধান লেট এই খবর পেতেই মার মুখী হয়ে ওঠে। কারন সে যে তৃণমূলের পঞ্চায়েতের মেম্বার। অথচ সেই পঞ্চায়েতের চুরির প্রতিবাদে পদযাত্রায় সামিল হয়েছেন তারই ঘরের লোকেরা। মানতে পারেননি বিধান লেট।
শনিবার দুপুরে আচমকাই মা এর উপর চড়াও হয় বিধান। মদ্যপ অবস্থায় এই মারধর করেছে বলেই অভিযোগ মায়ের। ছেলের হাতে মার খাওয়ার পর যন্ত্রনায় কাতরাতে কাতরাতে মাড়গ্রাম থানায় হাজির হন শিখা লেট। মাকে নিয়ে থানায় যাওয়া বৃদ্ধার ছোট ছেলে শ্রীধন লেট বলেন, ”দাদা দুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের মেম্বার হয়ে এলাকায় দাপট দেখিয়ে বেড়ায় । মা কে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। মা আমার কাছেই থাকে। কষ্ট করেই মা ও অসুস্থ বাবাকে নিয়েই আমাদের সংসার চালাতে হয়। এদিন দুপুরে হঠাৎ আমার বাড়িতে এসে মা এর উপর চড়াও হয়। ”
থানায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বৃদ্ধা বলেন, ”সিপিএমের মিছিল হচ্ছে দেখে চলে গিয়েছিলাম। এরজন্যই আমার বড় ছেলে আমার গলা টিপে ধরে , লাথি মারে তারপর তুলে আছাড় মারে।আমার কোমড়, পায়ে খুব যন্ত্রনা করছে। আমি দাঁড়াতে পারছি না। সোজা হতে পারছি না।” থানা থেকেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বসোয়া ব্লক প্রাথমিক ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা হয়েছে শিখা লেটের। সিপিএম নেতা সঞ্জীব বর্মন বলেছে, ”ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। এর বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত থেকে ব্লক, মহকুমা পর্যন্ত প্রতিবাদ হবে। তৃণমূল মেম্বারের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি।” অভিযুক্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েতের মেম্বার বিধান লেট অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ”সিপিএম-তৃণমূলের কোনও ব্যাপারই নয়। আমার বউয়ের সাথে অশান্তি হচ্ছিল মায়ের। আমি দুজনকেই বকাবকি করে চুপ করতে বলি। তারপর হয়ত মা ঘরে ঢুকতে গিয়ে পড়ে গিয়েছে। মা মিছিল করেছে আমি জানিই না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *