BRAKING NEWS

বিলকিস বানোর প্রতি সংহতি জানাতে প্রতিবাদ

কলকাতা, ২৭ আগস্ট (হি. স.): গুজরাটের ‘খুনি-ধর্ষক’দের সাজা পুনর্বহালের দাবিতে প্রতিবাদে শামিল হল বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগঠন। শনিবার বিকেলে মৌলালি মোড়ে মহিলা স্বরাজ, পশ্চিমবঙ্গ-সহ বেশ কয়েকটি গণতান্ত্রিক সংগঠন যৌথভাবে এই প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছিল।

বিলকিস বানোর গণধর্ষক ও পরিকল্পিত গণহত্যার অপরাধে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীর সাজা মকুব করে যেভাবে তাদের ‘মুক্তি’ দিয়েছে গুজরাত সরকার, তার প্রতিবাদেই এই সমাবেশ।

এই সমাবেশে মহিলা স্বরাজ, পশ্চিমবঙ্গ-এর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভানেত্রী সুফিয়া খাতুন। তিনি বলেন, “ধর্ষক, খুনিদের গুজরাটে এভাবে মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় আবারও প্রমাণ হচ্ছে এই বিজেপি সামগ্রিকভাবে নারীবিদ্বেষী। ওদের শুধু মুসলিমবিদ্বেষী বলা যায় না। হাথরাস, উন্নাও আর গুজরাতের এই ঘটনা যুক্ত করলে বোঝা যায় এরা সার্বিকভাবে নারীবিদ্বেষী, বর্ণবিদ্বেষী, দলিত ও সংখ্যালঘু বিদ্বেষী।”

মহিলা স্বরাজের আরেক নেত্রী ডঃ রত্না পাল বলেন, ‘গান্ধিজির রাজ্যে গুজরাতে গণহত্যা, গণধর্ষণ গোটা দেশবাসীকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছিল। আর এবার ধর্ষক-খুনিদের জেলে থেকে মুক্তি দিয়ে দ্বিতীয়বার ভারতবাসীকে কলঙ্কিত করেছে গুজরাটের বিজেপি সরকার।”

এদিন স্বরাজ ইন্ডিয়ার রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি কল্যাণ সেনগুপ্ত বলেন, “বিজেপির এই অপশাসনে নাগরিক অধিকার ও গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে নিজেদের তৎপরতা বাড়ানোই এখন দেশের প্রত্যেকটি মানুষের কর্তব্য।”

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর পিপলস্‌ মুভেন্টস্‌ (এনএপিএম)-এর অভিষেক রায়, স্বরাজ ইন্ডিয়ার রাজ্য কমিটির সভাপতি রাম বচ্চন, লেখক অমিতাভ চক্রবর্তী, আইডিয়াল এডুকেশন সোসাইটির পক্ষ থেকে সমাজকর্মী সিরাজ নুমানি প্রমুখ। প্রত্যেকটি সংগঠনই দোষীদের শাস্তি পুনর্বহাল করার দাবি তোলে। একই সঙ্গে গুজরাট সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের নারীঘাতী, শিশুঘাতী ও সাম্প্রদায়িক-হিংসাত্মক তৎপরতার বিরুদ্ধে সকলেই গর্জে ওঠে। সমাবেশে সঞ্চালনা করেন ডঃ রত্না পাল ও পৌলমী ঘোষ। এদিন দর্শক হিসেবে প্রায় ১০০ জন সচেতন নাগরিক হাজির ছিলেন সংহতি জানানোর উদ্দেশ্যে।

প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে হিন্দুত্ববাদীদের সংগঠিত গুজরাট গণহত্যার সময় অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করে বিজেপি তথা সংঘ পরিবারের ছত্রছায়ায় থাকা একদল দাঙ্গাবাজ। বিলকিসের ৩ বছরের মেয়ে-সহ পরিবারের ৭ জন সদস্যকেও হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় খুন ও গণধর্ষণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে মহারাষ্ট্র হাইকোর্ট একই সাজা বহাল রাখে। কিন্তু গুজরাত সরকার এ বছর স্বাধীনতা দিবসে এই ১১ জনকে জেল থেকে ‘মুক্ত’ করে। শুধু তাই নয়, রীতিমতো ফুল-মালা দিয়ে এদের সংবর্ধনা অবধি দেওয়া হয় গেরুয়া শিবির থেকে। এহেন ঘটনায় মনুবাদী রাজনীতির ধারক-বাহক বিজেপি ও তাদের নেতৃত্বে পরিচালিত গুজরাট সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে দেশের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন সকল মানুষ, সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগঠন।    

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *