BRAKING NEWS

ভারতীয় পরম্পরা ও সংস্কৃতি আমাদের একসূত্রে বেঁধে রেখেছে: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ১৭ জানুয়ারি : ভারতীয় পরম্পরা ও সংস্কৃতি আমাদের একসূত্রে বেঁধে রেখেছে। ত্রিপুরা ও মণিপুরের মধ্যে বৈবাহিক ও আত্মিক সম্পর্ক সুপ্রাচীন। আজ অভয়নগরে পুঁথিবা লাই-হারাওবা উৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। এদিন মণিপুরীদের চিরাচরিত রীতি অনুসারে মুখ্যমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। রাজ্যের প্রথম মণিপুরী ক্যালেন্ডারের আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ। অনুষ্ঠানে মণিপুর সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি সদস্য মুতুম মানিতানকে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। এরপর ঐতিহ্যবাহী মণিপুরী নৃত্য পরিবেশিত হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে উত্তর পূর্বের মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে সর্বোপরি রাজ্যগুলির মধ্যে গড়ে উঠেছে এক পারস্পরিক সুসম্পর্ক। বিগত দিনে যা অনেকাংশেই ঘাটতি ছিলো। এর ফলশ্রুতিতে উত্তর পূর্বের আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যা নিজেদের মধ্যে আলোচনাক্রমে দ্রুততার সঙ্গে সমাধানসূত্র বের করা সম্ভব হচ্ছে। যাতে লাভবান হচ্ছেন এই অঞ্চলের জনগণ। বিগত দিনে এই ধরনের আন্তরিকতার ঘাটতির ফলে বিভিন্ন সমস্যার দীর্ঘসূত্রিতা অনেকাংশেই মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজন্য শাসিত ত্রিপুরা থেকেই মণিপুরের সঙ্গে এই রাজ্যের সুসম্পর্ক বিদ্যমান। ভাষা, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যের মধ্যেও এক ঐক্যের ছবি উত্তর পূর্বাঞ্চলের। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় উন্নয়নের এক নতুন দিশা পেয়েছে উত্তর পূর্ব ভারত। সদ্য চালু হওয়া আগরতলা থেকে মণিপুরের জিরিবাম পর্যন্ত রেল সংযোগ এই দুই প্রদেশের মানুষের সাংস্কৃতিক ও বহুমুখী আদান প্রদানে সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করবে।

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরাতে অবস্থানরত জনসংখ্যাগত দিক থেকে তুলনামূলক কম ও সমস্ত অংশের জাতিগোষ্ঠীর নিজস্বতা অনুসারে তাদের স্বাধীনভাবে ধর্মীয় ও পরম্পরাগত চর্চার সুযোগ সুনিশ্চিত হয়েছে। বৈচিত্র্যের মধ্যেও ত্রিপুরার মধ্যে এক ঐক্যের ছবি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা সময়ে ভারতীয় সংস্কৃতিতে আঘাত হানার চেষ্টা হয়েছিলো। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে ঐতিহ্য ও পরম্পরাকে সঙ্গে নিয়ে সমৃদ্ধির পথে এগুচ্ছে ভারত। এরই ফলশ্রুতিতে উত্তর পূর্বাঞ্চলেও সার্বিক উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। দেশব্যাপী মহিলা স্বশক্তিকরণের যে কর্মযজ্ঞ চলছে তাতে মণিপুরী সমাজের মহিলারাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতার নজির রাখছেন। উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিকাশের পাশাপাশি এই অঞ্চলের কৃষ্টি সংস্কৃতি ও নিজস্ব ঐতিহ্যপূর্ণ চিরাচরিত সাংস্কৃতিক চর্চাগুলিও যোগ্য সম্মান ফিরে পেয়েছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সচেতনতার পাশাপাশি করোনা আচরণবিধি যথার্থ প্রতিপালনের লক্ষ্যে আহ্বান করেন মুখ্যমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া বলেন, বহুকাল ধরেই ত্রিপুরা এবং মণিপুরের মধ্যে সুসম্পর্ক বিদ্যমান। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সর্বাঙ্গীন বিকাশে গতি এসেছে। রাজন্য আমল থেকে চলে আসা এই সম্পর্ক বর্তমানে এক নতুন রূপ পেয়েছে। এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, খাদি ও গ্রামোদ্যোগ পর্ষদের চেয়ারম্যান রাজীব ভট্টাচার্য, কাউন্সিলার হীরালাল দেবনাথ, পুঁথিবা লাই-হারাওবা কমিটির সভাপতি নিরঞ্জন দত্ত, সম্পাদক দীপক কুমার সিনহা প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *