আগরতলা, ০৬ অক্টোবর (হি. স.) : স্থানীয় সামগ্রী ক্রয় করুন। সেই দীশায় হস্ততাঁত, হস্তকারু এবং খাদিতে উৎপাদিত সামগ্রী ক্রয় করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন উপরাষ্ট্রপতি এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু। আজ বিকালে হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণে উত্তর পূর্বাঞ্চলে হস্ততাঁত ও হস্তকারু শিল্পের উৎপাদিত সামগ্রীর প্রদর্শনী ও বিক্রয় মেলার উদ্বোধন করে আজ তিনি এই আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, এমন সুন্দর, স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশ বান্ধব সামগ্রী আর কোথাও পাওয়া যাবে না। আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অঙ্গ হিসেবে তিনদিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর ও বিক্রয় মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া, খাদ্য ও জনসংভরণ দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব, মুখ্যসচিব কুমার অলক, এনইসি-র সেক্রেটারি কে মোসেস চেলাই।
আজ উপরাষ্ট্রপতি অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব, মুখ্যসচিব কুমার অলক প্রমুখ উপরাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান। প্রদর্শনী ও বিক্রয় মেলার উদ্বোধন করে উপরাষ্ট্রপতি উত্তর পূর্বের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা স্টলগুলি ঘুরে দেখেন। মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণও উপরাষ্ট্রপতির সাথে ছিলেন। পরে প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া বিভিন্ন রাজ্যের হস্তকারু শিল্পীদের সাথে শ্রীনাইডু মতবিনিময় করেন। উপরাষ্ট্রপতি তাদের কাজ, সমস্যা, আয়ের বিষয়ে খোঁজখবর নেন। বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিগণ তাদের অভিজ্ঞতার কথা উপরাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরেন।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানের পর উপরাষ্ট্রপতি বলেন, এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে আমি খুশি হয়েছি। আপনাদের কাজ দেখে আমার মনে হয়েছে উত্তর পূর্বাঞ্চলে প্রতিভার কোনও অভাব নেই। এই প্রতিভাকে আরও বেশি উৎসাহিত ও সহায়তা করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, হস্ততাঁত ও হস্তকারু শিল্প আমাদের সংস্কৃতির অংশ। আমরা সবাই জানি স্বাধীনতা সংগ্রামে খাদি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। সারা বিশ্বেই হস্তকারু শিল্পের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং এই শিল্প কর্মসংস্থানেরও অনেক সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। উপরাষ্ট্রপতি বলেন, এক্ষেত্রে অনেকে নিজে স্বাবলম্বী হয়ে অন্যকেও রোজগারের পথ করে দিচ্ছেন। এটা খুব সহজ বিষয় নয়। এজন্য তিনি উদ্যোগীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
উপরাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের জনগণের মধ্যে প্রতিভা এবং পরাদর্শিতার কোনও অভাব নেই। এক্ষেত্রে সবথেকে বেশি প্রয়োজন তাদের খুঁজে বের করা এবং প্রশিক্ষিত করা। এজন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্কিল ডেভেলপমেন্ট নামে আলাদা মন্ত্রণালয় চালু করেছেন।
তিনি বলেন, ১৩০ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষ ২৫ বছরের কম বয়সী। তাদের প্রশিক্ষিত করতে পারলে তারা নিজেও স্বাবলম্বী হবেন, অন্যদেরও স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করতে পারবেন। তাঁর দাবি, যারা আজ এখানে কথা বললেন তাদের আত্মবিশ্বাস আছে বলেই তারা ভারতের উপরাষ্ট্রপতির সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পেরেছেন। আমি খুব খুশি এই আত্মবিশ্বাস আমাদের দেশকে শক্তিশালী করবে।
তাঁর মতে, তাদের উৎসাহিত ও সহায়তা করা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। উভয়েই আন্তরিকভাবে এই কাজ করছে। এই ক্ষেত্রকে আরও উৎসাহিত করতে হবে। উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশেই সবকিছু আছে। আপনারা সবাই হস্ততাঁত হস্তকারু শিল্পের উৎপাদিত সামগ্রী, খাদির উৎপাদিত সামগ্রী কিনুন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ভোকাল ফর লোকালের কথা বলেছেন। আমাদের সবার স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সামগ্রী ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে।