Improving medical services in the state : রাজ্যে চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতি, বহিঃরাজ্যে রোগী পাঠানো কমেছে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ অক্টোবর৷৷ ত্রিপুরা থেকে বহিরাজ্যে রোগী পাঠানোর সংখ্যা দিনে দিনেই কমছে৷ স্বাস্থ্য পরিষেবায় উন্নতির মাধ্যমে অসম্ভব এখন সম্ভব হচ্ছে৷ আজ রাজধানীর মুক্তধারা প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান দিবস অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে দৃঢ় প্রত্যয়ের সুরে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তাঁর কথায়, স্বাস্থ্য পরিষেবার পাশাপাশি সমস্ত ক্ষেত্রেই উন্নয়নের মাধ্যমে দ্রুতগতিতে স্বয়ম্ভরতার পথে এগিয়ে চলেছে ত্রিপুরা৷


এদিন তিনি বলেন, রক্তদান এখন আমাদের রাজ্যে উৎসবে পরিণত হয়েছে৷ ক্লাব, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ রক্তদানে এগিয়ে আসছেন৷ রক্তদানের মাধ্যমে সংগৃহীত এই রক্ত মুমূর্ষু রোগীদের জীবন রক্ষায় কাজে লাগছে৷ তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় নিয়মিত রক্তদান শিবির আয়োজিত হচ্ছে৷ তবুও এই রক্ত সংগ্রহ পর্যাপ্ত নয়৷ তাই উচিত রক্তগ্রহীতাদের পরিবার পরিজনদের কাছ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে রাখা৷ এজন্য প্রয়োজন সঠিক ব্যবস্থাপনা৷ তিনি আরও বলেন, রাজ্যের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত রক্ত অন্যান্য স্থানে প্রয়োজন রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সাহায্যার্থে পাঠাতে প্রয়োজন সবার সম্মিলিত প্রয়াস৷


অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে রক্তের চাহিদা মেটাতে দিনপঞ্জির মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে৷ সেই ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব সহ অন্যান্য রক্তগ্রহীতাদের পরিজনদের কাছ থেকে স্বেচ্ছায় রক্ত সংগ্রহের মাধ্যমে রক্তের চাহিদার সামঞ্জস্য রাখার ব্যবস্থা নিতে হবে৷ তিনি বলেন, একটা সময়ে মুমূর্ষ রোগী বা প্রয়োজন রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য রাজ্যের বাইরে থেকেও রক্ত আনতে হতো৷ কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনা ও জনজাগরণের মাধ্যমে বিভিন্ন বাহিনীর জওয়ান সহ সমস্ত অংশের মানুষকে এই মহৎ কাজে আরও উদ্বুদ্ধ করতে পারলেই সাফল্য মিলবে৷ এর মধ্য দিয়ে রাজ্যের চাহিদার অতিরিক্ত রক্ত অন্যান্য স্থানে প্রয়োজন রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য হাত বাড়িয়ে দিতে পারে ত্রিপুরা৷


তাঁর দাবি, কার্ডিও, নেফ্রোলজি সহ বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসার পরিষেবা উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণে পরিকল্পনা নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার৷ ইতিমধ্যেই নিউরো সহ বিভিন্ন জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সফলতা মিলেছে৷ স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে আপোষহীনভাবে কাজ করে চলেছে সরকার৷ জিবিপি সহ সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পর্কে মানুষের ধারণার বদল এসেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি নিজেও রোগ নির্ণায়ক পরীক্ষা সরকারি হাসপাতাল থেকেই করান৷ এমনকি কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসাই গ্রহণ করেছেন৷ সাথে তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন, যদি, কিন্তু, পরন্তু এই শব্দগুলি আমাদের লক্ষ্য অর্জনে মানসিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে৷


তাঁর মতে, এই ধরনের বিরূপ মানসিকতাকে দূরে সরিয়ে মাইক্রো ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে আরও গতি আনা সম্ভব৷ তার পাশাপাশি মাতৃত্বকালীন অবস্থায় বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের বিভিন্ন রোগ প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে আরও বেশি সজাগ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন৷ সঠিক রূপরেখা লক্ষ্য অর্জনের অন্যতম শর্ত৷ প্রসঙ্গক্রমে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন কোভিড পরিস্থিতিকে সামনে রেখে ১৮ অনূর্ধ ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন রোগ প্রাদুর্ভাব থেকে মুক্তি ও প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গৃহীত মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব ও সুস্থ কৈশোর প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য সফলতা মিলেছে৷ এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে ১৫ দিনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিলো বলেই দ্রুততার সাথে লক্ষ্য পূরণে সফলতা মিলেছে৷

এদিন তিনি বলেন, বিগত দিনে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার জন্য বহির্রাজ্যে গিয়ে ভালো সংখ্যায় অর্থ ব্যয় করতে হতো৷ কিন্তু বর্তমানে সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্যক্ষেত্রে উন্নয়নের ফলে এর থেকে পরিত্রাণ পাচ্ছেন রাজ্যের মানুষ৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবার পাশাপাশি সমস্ত ক্ষেত্রেই উন্নয়নের মাধ্যমে দ্রুতগতিতে স্বয়ম্ভরতার পথে এগিয়ে চলেছে ত্রিপুরা৷ এক্ষেত্রে পরনির্ভরশীলতাকে দূরে সরিয়ে নিজের এবং রাজ্যের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলা প্রয়োজন৷ কোভিড আচরণবিধি ও সরকারি নীতি নির্দেশিকা যথাযথ প্রতিপালনের মধ্য দিয়ে শারদোৎসবের আনন্দ উপভোগ করার লক্ষ্যে সমস্ত রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী৷