BRAKING NEWS

বিশেষ অধিবেশন ডেকে কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী

তিরুবনন্তপুরম, ৩১ ডিসেম্বর (হি. স.): তড়িঘড়ি বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডেকে কেন্দ্রের নতুন তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন প্রস্তাব পেশের সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে কৃষি ক্ষেত্র যখন তীব্র সংকটের মধ্য দিয়ে চলেছে সেই সময় কেন্দ্র সংসদে তিনটি কৃষি বিল পাশ করায়। এতে দেশের কৃষি ক্ষেত্রের উপর প্রভাব পড়তে বাধ্য। রাজধানী ক্রমাগত সাক্ষী থাকছে কিংবদন্তি কৃষক আন্দোলনের। কৃষক আন্দোলনের পেছনে বিপুল ইচ্ছাশক্তি কাজ করেছে যা এতদিন পর্যন্ত অদেখায় থেকে গিয়েছিল।

দি ফার্মার (এম্পাওয়ার্মেন্ট এন্ড প্রটেকশন) এগ্রিমেন্ট অন প্রাইস অ্যাসুরেন্স এন্ড ফার্ম সার্ভিস অ্যাক্ট ২০২০, দ্য ফার্মার প্রডিউস ট্রেড এন্ড কমার্স (প্রমোশন এন্ড ফেসিলিটেশন) অ্যাক্ট ২০২০, দি এসেনশিয়ালস কমোডিটি (আমেন্ডমেন্ট) বিল সংসদে পাশ করা হয়েছে। এই আইনগুলি বিরুদ্ধে কৃষকরা অনবরত বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেছে। কৃষকদের দাবি এই আইনগুলো বাতিল করতে হবে। কৃষকদের প্রতি সমবেদনা ব্যক্ত করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে ৩৫ দিন ধরে কৃষকরা বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেছে। এর মধ্যেই ৩২ কৃষক প্রাণ হারিয়েছে। যখন কোন আইন জনমানস সন্দেহের উদ্রেক করে তখন পরিষদীয় (সংসদীয়) গণতন্ত্রের কর্তব্য বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে দেখা। দেশের ৪৩.৩ শতাংশ কর্মশক্তি কৃষিতে নিয়োজিত। ভারতের মতন দেশে কৃষি শুধুমাত্র উৎপন্নকারী ক্ষেত্র নয় এটি ভারতের সংস্কৃতি। ফলে কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কার সতর্ক ভাবে করা উচিত। কেরল সফলভাবে ভূমি সংস্কার করে দেখিয়েছে। ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষকরা উদ্বেগে  যে তারা ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য হারিয়ে ফেলবেন। শক্তিশালী কর্পোরেট অস্তিত্বের সামনে খাদ্যশস্য নিয়ে কৃষকদের দরদাম করার ক্ষমতা হ্রাস পাবে।

নতুন কৃষি আইন কৃষকদের আইনি কোনো সুরক্ষা কবচ দেয়নি। আইনি লড়াইয়ে কর্পোরেটদের বিরুদ্ধে পিছিয়ে পড়বে কৃষকরা। কৃষিজাত পণ্য সরকারের ক্রয় করার একটা পরিসর থাকা দরকার। ফসলের ন্যায্য দাম নিয়ে কৃষকদের মনে সন্দেহের দানা বেঁধেছে। অন্যদিকে খাদ্য নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খাদ্য শস্য মজুত এবং বন্টন করার থেকে যদি সরকার হাত তুলে নেয় তবে কালোবাজারি দানা বাঁধবে। সময় চাহিদা বলে দিচ্ছে কৃষকদের এই আন্দোলন চলতে থাকলে প্রভাব এসে পড়বে কেরলে। খাদ্যশস্য কেরলের না এসে পৌঁছলে খাদ্যের অভাব দেখা দিতে বাধ্য। কৃষি রাজ্য সরকারের এক্তিয়ার ভুক্ত। স্ট্যান্ডিং কমিটিতে  না পাঠিয়েই নতুন তিনটি কৃষি আইন পাশ করিয়ে নেয় কেন্দ্র। সেই কারণেই দেশের মেরুদন্ড কৃষকরা প্রতিবাদে সরব হয়েছে। তাই কেরল বিধানসভা অবিলম্বে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানাচ্ছে অবিলম্বে এই কৃষি আইন বাতিল করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *