BRAKING NEWS

দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ-পীড়িত হাইলাকান্দিতে কার্ফু, পরিস্থিতি থমথমে

হাইলাকান্দি (অসম), ১০ মে (হি.স.) : বিবদমান দুই গোষ্ঠীর সংঘৰ্ষকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বরাক উপত্যকার হাইলাকান্দি জেলা সদর শহরে অনির্দিষ্টকালীন কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন। কার্ফুর সময় কাউকে ঘর থেকে বের হতে বারণ করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২টায় প্রকাশ্য রাস্তায় পবিত্র জুম্মার নামাজ আদায়ের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের সূত্রে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মারমুখি জনতাতে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে। লাঠির দাওয়াই কাজ না করলে বেশ কয়েক রাউন্ড শূন্যে গুলি ছুঁড়তে বাধ্য হয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে প্রথমে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারা জারি করেছিলেন জেলাশাসক কীর্থি জল্লি। এর কিছুক্ষণ পর বেলা একটায় তাৎক্ষণিকভাবে সদর শহর এলাকায় অনির্দিষ্টকালীন সান্ধ্যআইন বলবৎ করেছেন তিনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও থমথমে। গোটা শহরে সিআরপিএফ টহল দিচ্ছে।ঘটনার সূত্রপাত হাইলাকান্দি শহরের মাড়োয়ারিপট্টি মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে। বেলা বারোটায় শুক্রবারের জুম্মার নামাজ আদায়ে মুসল্লির ভিড় জমিয়েছিলেন বহু ইসলাম ধর্মাবলম্বী। তাঁরা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রকাশ্য রাস্তায় নামাজ আদায়ের জন্য অবস্থান নিলে বিবাদের সূত্রপাত। স্থানীয়রা রাস্তায় নামাজ আদায় না করার আবেদন জানাতে গেলে আচমকা মারমুখি হয়ে ওঠেন নামাজিরা। শুরু হয় মারপিট, ইট পাটকেল ছোঁড়া, ভাঙচুর। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে গোটা শহরে।

এখানে-সেখানে ভাঙচুর করা হয় যাত্রীবাহী ছোট গাড়ি, অটো রিকশা, টোটোয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় যানবাহনে। সাধারণ মানুষ ও পথচারীরা এদিক-ওদিক দৌড়ে পালাতে থাকেন। মরমুখি জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ কর হয়। তাতে কাজ না হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশকে বাধ্য হয়ে শূন্যে কম করেও ১৫ রাউন্ড গুলি চালাতে হয়েছে।উত্তেজনা সামাল দিতে জেলাশাসক কীর্থি জল্লি হাইলাকান্দিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারা জারি করেন। এর খানিক পর বেলা একটা থেকে অনির্দিষ্টকালীন সান্ধ্যআইন জারি করেছেন জেলাশাসক। সংঘর্ষে বহু লোক আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বলা হচ্ছে, একটি মোটর বাইকের সিট কাটার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজকের পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। দিন চারেক আগে তারাবির নামাজের সময় ওই মসজিদের সামনে কেউ একটি বাইকের সিট কেটে দিয়েছিল।

ঘটনার তদন্ত করে দোষীকে শনাক্ত করে গ্রেফতারের দাবি ওঠে। সদর থানায় এফআইআর দাখিল হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয় স্মারকপত্র। এর পরও সিট কাটার সঙ্গে জড়িত দোষীকে আটক করার কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন একাংশ। এরই প্রতিফলন আজকের ঘটনা।এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে হাইলাকান্দি জেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং পরিস্থিতি শান্ত রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল। হাইলাকান্দির পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখতে রাজ্যের পুলিশ-প্রধান এবং মুখ্যসচিবকেও মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *