BRAKING NEWS

ম্যায় ভি চৌকিদার’, এই স্লোগানেই এবার ভোটে লড়বেন মোদী, রাহুলকে খোঁচা অরুণ জেটলির

নয়াদিল্লি, ১৬ মার্চ (হি.স.) : ‘ম্যায় ভি চৌকিদার’ ক্যাম্পেনিং শুরুর মধ্যে দিয়ে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার টুইটারে ‘দেশসেবার কাজে আপনাদের চৌকিদার দৃঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে’ এই শিরোনামে একটি ভিডিও পোস্ট করে দলের প্রচার শুরু করলেন তিনি। রাফালে চুক্তি নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর লাগাতার আক্রমণ ও ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগানের পালটা জবাবে এই ক্যাম্পেনিং শুরু করা হল। এই ক্যাম্পেনিং-এর সৌজন্যে ২০১৪-র ফলাফলের পুনরাবৃত্তি চাইছে বিজেপি। অন্যদিকে রাফাল সহ একাধিক বিষয়ে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করেছে রাহুল গান্ধী। শনিবার ট্যুইট করে এমনই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। রাফাল নিয়ে কেন্দ্রকে খোঁচা রাহুলের।

রাহুল গান্ধীর অস্ত্রকে ঢাল করেই ভোটের ময়দানে নামছে বিজেপি। যদিও ‘চৌকিদার’ শব্দটি গতবার লোকসভা নির্বাচনে উদ্ভাবন করেছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদীই। সে সময় মোদী বলেছিলেন, দেশবাসীর টাকা বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে কিনা নজর রাখবে আপনাদের চৌকিদার। রাফাল কাণ্ডে পাল্টা রাহুল গান্ধী স্লোগান তোলেন, “চৌকিদার চোর”। গত দেড় বছর রাহুল যে স্লোগানে মোদীকে অহরহ বিদ্ধ করেছেন, সেই স্লোগানের পাল্টা এ বার বিজেপি বলছে, প্রত্যেক দেশবাসীই এখন চৌকিদার।তিনিই দেশের ‘পরিত্রাতা’ বোঝাতে শনিবার সকালে ওই স্লোগান দিয়ে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর টুইটে। সেই ভিডিয়োয় রয়েছে একটি গান। আর সেই গানের সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীকে কখনও দেখা যাচ্ছে কোনও জনসমাবেশে, কখনও বা কোনও যুদ্ধের ট্যাঙ্কের উপরে। নানা রকমের কর্মকাণ্ডে। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বলতে দেখা যাচ্ছে, ‘‘আপনাদের পাহারা দেওয়ার জন্য দেশের সেবার জন্য এই চৌকিদার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’’ সেই ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, গানের সুরে সুর মিলিয়ে আমজনতাও বলছে ‘ম্যায় ভি চৌকিদার হুঁ’।‘ম্যায় ভি চৌকিদার’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে করা সেই টুইটে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘আমি একা নই। যাঁরাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছেন, সমাজের কলুষ, ত্রুটিবিচ্যুতির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তাঁরা সকলেই চৌকিদার। ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যাঁরা লড়াই করে চলেছেন, তাঁরাও চৌকিদার। আজ প্রতিটি ভারতীয় নাগরিক বলছেন, ম্যায় ভি চৌকিদার।’’টুইটারে এই ভিডিওটি পোস্ট করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী টুইট করেন, “কিন্তু, আমি একা নই। যাঁরা দেশ থেকে দুর্নীতি, অপরিচ্ছন্নতা ও সামাজিক অন্যায় দূর করার জন্য লড়াই করছেন তাঁরা প্রত্যেকেই চৌকিদার। ভারতের উন্নতির জন্য যাঁরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন তাঁরা চৌকিদার।” টুইট করা ভিডিওটিতে মোদী সরকার মুদ্রা যোজনা, উজ্জ্বলা যোজনা ও স্বচ্ছ ভারত-সহ বিভিন্ন যে উন্নয়ন প্রকল্প চালু করেছে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। আর একদম শেষে রয়েছে ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে চলা প্রধানমন্ত্রীর ‘ম্যায় ভি চৌকিদার’ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আবেদন।২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নেমে নরেন্দ্র মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁকে যদি দেশ শাসনের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহলে তিনি একজন চৌকিদারের মতো দেশের মানুষের টাকা ও বিশ্বাস রক্ষা করবেন। এই প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে কয়েকদিন আগে রাহুল গান্ধী একটি জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন। বলেন, “পাঁচ বছর আগে চৌকিদার বলেছিলেন তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান। কংগ্রেসমুক্ত ভারত চান। কিন্তু, আজ আচ্ছে দিন আয়েঙ্গে স্লোগানটি বদলে গিয়ে চৌকিদার চোর হ্যায়-তে পরিণত হয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী রাফালে চুক্তিতে দুর্নীতি করে অনিল আম্বানিকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন বলেও বারবার অভিযোগ করতে থাকেন তিনি।যদিও তাঁর এই স্লোগান দেশবাসীর মনকে স্পর্শ করেনি বলেই উঠে এসেছে বিজেপির করা সমীক্ষায়। তাই এবার চৌকিদারের প্রচারে সংযুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।ট্যুইটারে অরুণ জেটলি লেখেন, ভুয়ো এবং বিভ্রান্তকর বিষয় তৈরি করে রাহুল গান্ধী গোটা বিরোধী শিবিরকে নিমজ্জিত করে দিচ্ছে। রাফাল, বেকারত্ব এবং কৃষকদের নিয়ে দেশবাসীকে ভুল পথে চালিত করা হচ্ছে। রাফাল, বালাকোট, বিচারক লোয়া মৃত্যু, কৃষি ঋণ মকুব, জেএনইউ, ইভিএম, জিএসটি, নোটবন্দি, নীরব মোদী, বিজয় মালিয়া, অন্ধ্রপ্রদেশের বিষয় মর্যাদা নিয়ে বিভ্রান্ত খবর রাটানো হচ্ছে বলে ট্যুইটারে দাবি করেছেন অরুণ জেটলি। তিনি লেখেন, মিথ্যাকে সত্য করে চালানো হচ্ছে। ভারতীয় ভোটাররা অনেক বেশি বিবেচক। সত্য ও অসত্যে মধ্যে পার্থক্য তারা বোঝে। ভোটাররা স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী। বিরোধী নেতারা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভুগছে। যারা মিথ্যা প্রচার করছে তাদের শাস্তি দেবে জনগণ। নোটবন্দির ফলে অর্থনীতি সংগঠিত হয়েছে। নোটবন্দির ফলে কালোটাকার কারবারিরা বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছে। করের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। নোটবন্দির ফলে গরিবরা উপকৃত হয়েছে।উত্তরাখন্ডের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। শনিবার কংগ্রেসে যোগ দেন বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি সি খান্ডুরির ছেলে মণীষ খান্ডুরি। আর বিষয়টিকে হাতিয়ার করে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন রাহুল গান্ধী।

এদিন রাহুল গান্ধী বলেন, বি সি খান্ডুরি সংসদে প্রতিরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। দেশ এবং সেনাবাহিনীর জন্য নিজের জীবনের বেশির ভাগ সময় দিয়েছিলেন তিনি। জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি নিয়ে প্রশ্ন করার জন্য তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপিতে সত্যের কোনও স্থান নেই। রাহুল গান্ধী আরও বলেন, রাফাল চুক্তি নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে ফের চুক্তি করে অনিল আম্বানিকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চুক্তিতে অনিল আম্বানিকে রাখার জন্য ফ্রান্সকে বাধ্য করে প্রধানমন্ত্রী। ফ্রান্সের প্রাক্তন ফ্রাসোয়া ওলান্দ বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। সিবিআই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে রাহুল গান্ধী বলেন, সিবিআইয়ের প্রধান পদে বসে অলোক বর্মা রাফাল নিয়ে তদন্ত করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাঁকে সরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। ইউপিএ আমলের তুলনায় নতুন চুক্তি করে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার ক্ষেত্রে ডাস্লোটকে বেশি অর্থ দিয়েছে বর্তমান বিজেপি সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *