BRAKING NEWS

পঞ্চদশ অর্থ কমিশন আসছে ১৬ই, গতবারের চেয়ে তিনগুণ বেশি বরাদ্দের দাবি জানাবে রাজ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ জানুয়ারি ৷৷ ১৬ জানুয়ারি রাজ্যে আসছে পঞ্চদশ অর্থ কমিশন৷ ১৫ সদস্যের কমিশন ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি রাজ্যের দাবি দাওয়া নিয়ে বৈঠক করবেন৷ ২০২০-২১ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য রাজ্য সরকার ১ লক্ষ ৭ হাজার ৭১৪ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দের দাবি জানাবে অর্থ কমিশনের কাছে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, চতুর্দশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দের তুলনায় তিন গুণ অর্থ চাইবে রাজ্য৷

পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান এন কে সিংহের নেতৃত্বে অন্য সদস্যরা ১৬ জানুয়ারি রাজ্যে আসবেন৷ জানা গেছে, কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন, ডা অনুপ সিং, ডা অশোক লাহিরী, ডা রমেস চান্দ, কমিশনের সচিব অরবিন্দ মেহতা, যুগ্ম সচিব মুখমিত এস ভাটিয়া ও রবি কোটা, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এন্টনি সাইরিক, এডিজি মৌসুমী চক্রবর্তী, ডিরেক্টর ভারত ভুষণ গড়, উপর্ধিকর্তা শিখা দাহিয়া, সহ অধিকর্তা রীতেশ কুমার, ইকোনমিক অফিসার পংকজ গেড়া প্রমুখ৷ জানা গেছে, পঞ্চদশ অর্থকমিশন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এবং বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের সাথে ১৭ ও ১৮ জানুয়ারি আগরতলায় রাজ্য অতিথিশালায় বৈঠক করবেন৷ কমিশনের কাছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে রাজ্যের জন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে প্রস্তাব রাখা হবে৷
রাজ্যের পাঁচ বছরের খরচের জন্য ১ লক্ষ ৭ হাজার ৭১৪ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের কাছে স্মারকলিপি পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার৷ শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় করের শেয়ারের অংশ ৪২ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে রাজ্য৷ অর্থ কমিশনের কাছে পাঠানো স্মারকলিপিতে দুর্যোগ মোকাবিলা খাতে ৪ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য ১৭ হাজার ৭৮৩ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা চেয়েছে রাজ্য সরকার৷

২০২০-২১ থেকে ২০২৪-২৫ এই পাঁচ বছরের খরচের জন্য রাজ্য সরকার ১ লক্ষ ৭ হাজার ৭১৪ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা চেয়ে অর্থ কমিশনের কাছে স্মারকলিপি পাঠানোর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর ব্যাখ্যা, রাজ্যের নিজস্ব আয় ওই পাঁচ বছরে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি ৭ লক্ষ টাকা হবে৷ তাতে রাজ্যের নিজস্ব কর সংগ্রহ বাবদ আয় হবে ১২ হাজার ৫৪৫ কোটি ৩ লক্ষ টাকা এবং কর ব্যতিত আয় হবে ১ হাজার ৯৫৫ কোটি ৩ লক্ষ টাকা৷ কিন্তু, ওই পাঁচ বছরে রাজ্যের খরচের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লক্ষ ২২ হাজার ২১৪ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা৷ ফলে, ঘাটতি দাঁড়াবে ১ কোটি ৭ হাজার ৭১৪ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা৷ শিক্ষামন্ত্রী ওই পাঁচ বছরে খরচের বিস্তারিত হিসাব দিয়ে জানিয়েছেন, বেতন ও মজুরি খাতে ৬১ হাজার ৯৪৮ কোটি ৪ লক্ষ টাকা, পেনশন খাতে ২১ হাজার ৩০৮ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা, সুদ বাবদ ৮ হাজার ৬০ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা এবং অন্যান্য খরচ হিসেবে ৩০ হাজার ৮৯৭ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা প্রয়োজন৷

শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, চর্তুদশ অর্থ কমিশন কেন্দ্রীয় করের শেয়ার বাবদ পূর্বোত্তরের বেশ কয়েকটি রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্য কম পেয়েছে৷ তাঁর কথায়, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মেঘালয় এবং অরুণাচল প্রদেশের তুলনায় এ রাজ্য কেন্দ্রীয় করের শেয়ার অনেকটাই কম পেয়েছে৷ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের কাছে কেন্দ্রীয় করের শেয়ারের অংশ ৪২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে৷ এছাড়া জিএসটি রাজস্ব ক্ষতিপূরণের বিষয়টিও বিবেচনার জন্য অর্থ কমিশনকে বলা হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় প্রকল্পে পূর্বোত্তরের রাজ্য গুলির জন্য ১০০ শতাংশ কেন্দ্রীয় সহায়তার দাবি জানানো হয়েছে৷

শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ওই পাঁচ বছরে রাজ্যে নির্দিষ্ট কিছু প্রকল্পের জন্য ১৭ হাজার ৭৮৩ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে৷ তাছাড়া, ত্রিপুরা স্ব-শাসিত জিলা পরিষদ এবং অন্যান্য স্ব-শাসিত সংস্থার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ঠিক করে দেবে অর্থ কমিশনই৷ তিনি আরও জানান, দুর্যোগ মোকাবিলা খাতে আলাদভাবে ৪ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে৷ এর মধ্যে রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল বাবদ ২ হাজাব কোটি টাকা এবং দুর্যোগ প্রতিরোধে ২ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা খরচ করার পরিকল্পনা রয়েছে৷

এখন পর্যন্ত গত চারটি অর্থ কমিশনের সুপারিশের একটি তথ্যও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ ওই তথ্য অনুসারে, একাদশ অর্থ কমিশন ৪ হাজার ২৪৬ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা, দ্বাদশ অর্থ কমিশন ৮ হাজার ১২০ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা, ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন ১১ হাজার ৮৬৪ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা এবং সর্বশেষ চতুদর্শ অর্থ কমিশন ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রাজ্যের জন্য মঞ্জুর করেছে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, বাম জমানার অবসানের পর বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার সর্বশেষ অর্থ কমিশনের মঞ্জুরিকৃত অর্থের তুলনায় তিন গুনের অধিক অর্থ রাজ্যের জন্য অর্থ কমিশনের কাছে চাইবে রাজ্য সরকার৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *