BRAKING NEWS

পরম্পরাগত সাংসৃকতিক ঐতিহ্যকে কেন্দ্র করে উৎসব ও মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ আগস্ট৷৷ সমাজের প্রতিটি কাজের সঙ্গে যদি সংসৃকতিকে সংযুক্ত করা যায় তবেই যেকোনও কাজে উৎসাহ বৃদ্ধি পাবে৷ তাই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পরম্পরাগত সাংসৃকতিক ঐতিহ্যকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন উৎসব ও মেলার আয়োজন করার উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান রাজ্য সরকার৷ আজ মেলাঘরে ৪ দিনব্যাপী নীরমহল জল উৎসবের সমাপ্তি দিনে নৌকা বাইচ ও সাঁতার প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি বলেন, মেলাঘর রথের মেলা, নীরমহল জল উৎসব ইত্যাদির জন্য বিখ্যাত৷ নীরমহল জল উৎসবে যে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা হয় তার সাথে এখানকার মৎস্যজীবীদের সংসৃকতি জুড়ে রয়েছে৷ নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই মৎস্যজীবিকার সাথে যুক্ত৷ এদের উৎসাহ দানের জন্যই প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মেলাঘরে নীরমহলের মতো ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান থাকা স্বত্বেও এখানে পর্যটন শিল্প সেবাবে বিকশিত হয়নি৷ কিন্তু বর্তমান সরকার রাজ্যে পর্যটন শিল্পকে উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করেছ৷ রাজ্যের ঊনকোটি, নীরমহল, মাতাবাড়ি, ছবিমুড়া প্রভৃতি দর্শনীয় স্থানগুলিকে নিয়ে টুরিস্ট সার্কিট বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার৷ এরজন্য কেন্দ্রীয় বিভিন্ন প্রকল্প থেকেও অর্থ এসেছে৷ একে সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই৷ তিনি আরও বলেন, নীরমহলকে কেন্দ্র করে এখানকার এলাকাবাীদের স্থায়ী রোজগারের ব্যবস্থা হওয়ার কথা ছিলো৷ কিন্তু বাস্তবে এর কিছুই হয়নি৷ তাই বর্তমান রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মাধ্যমে নীরমহল এলাকায় বসবাসরত পরিবারের মধ্যে ভর্তুকীতে ৫০ হাজার হাঁসের বাচ্চা প্রদান করা হবে৷ নীরমহলের জলাশয়ে তা প্রতিপালন করে তারা স্বরোজগারী হবেন৷ পাশাপাশি জলাশয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে, এতে পর্যটকরাও আকর্ষিত হবেন৷ সরকার সেই দিশাতেই পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে৷

এছাড়াও রাজ্যের যতগুলি বড় দীঘি রয়েছে তার আশেপাশের এলাকার মানুষকেও হাঁস পালনের জন্য প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মাধ্যমে হাঁসের বাচ্চা প্রদানের উদোগ নেওয়ার জন্য পর্যটন মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এতে রোজগারের পাশাপাশি রাজ্যও ডিম উৎপাদনে স্বয়ং সম্পূর্ণ হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন মুখমন্ত্রী৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের রাজ্যে মাছের যা উৎপাদন হয় তা চাহিদার তুলনায় কম৷ মাছের এই চাহিদা পূরণের জন্য পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ থেকে মাছ আমদানি করা হয়৷ রাজ্যকে মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ং সম্পূর্ণ করার জন্য মৎস্য দপ্তর, পর্যটন দপ্তর এবং প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরকে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার ত্রিপুরাকে নেশামুক্ত, নারী নির্যাতন মুক্ত, ভ্রষ্টাচার মুক্ত, অপরাধ মুক্ত এবং জমি মাফিয়ামুক্ত রাজ্য হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে৷ এই কাজে রাজ্যের সকল অংশের জনগণের সহযোগিতা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷

অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা বিষ্ণুপদ দাস বলেন, রাজ্যের বিবিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সংসৃকতির উন্নয়ন ও প্রসারে তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তর রাজ্যব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে৷ অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পর্যটন মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়, বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায়, বিধায়ক সুভাষ চন্দ্র দাস এবং সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক ব্রহ্মিত কৌর৷

উল্লেখ্য, ৪ দিনব্যাপী নীরমহল জল উৎসবকে কেন্দ্র করে মনসামঙ্গল প্রতিযোগিতা, সাঁতার প্রতিযোগিতা এবং নৌকা বাঁইচ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের আজ পুরসৃকত করা হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *