BRAKING NEWS

তৃণমূলকে সরিয়ে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আনার ডাক দিলেন অমিত শাহ

কলকাতা, ১১ আগস্ট (হি. স.) : নারদা-সারদা-রোজ ভ্যালি- সিন্ডিকেট, একটা ভ্রষ্টাচারের সিরিজ হয়ে উঠেছে বাংলা৷ পশ্চিমবঙ্গে দাঁড়িয়ে রাজ্য দখলের ডাক দিয়ে এমনই আভিযোগ করলেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ৷ তৃণমূল সরকারকে সরিয়ে তাঁদের এ রাজ্যে আনার আর্জি রাজ্যবাসীর কাছে রাখলেন তিনি৷ ক্ষমতায় আসলে নিজেদের প্রমাণ করবেন বলে দাবি জানিয়ে গেলেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি ৷ তিনি বলেন, বাংলা কংগ্রেসকে সুযোগ দিয়েছে, বাম এবং এখন তৃণমূলের ওপরও আস্থা রেখেছেন রাজ্যের মানুষ৷ একবার বিজেপিকেও সেই দায়িত্ব দিক বাংলার মানুষ, রাজ্যবাসীর কাছে এই অনুরোধ রেখে গেলেন তিনি|

আজ ক্ষুদিরাম বসুর আত্মবলিদানের ১১১-তম দিবসে ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার যুব স্বাভিমান সমাবেশে অমিত শাহ ছিলেন প্রধান বক্তা| মঞ্চে ক্ষুদিরামের প্রতিকৃতিতে পুষ্প অর্পন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন অমিতবাবু| মঞ্চের নিচেও বড় করে লেখা ছিল কাজী নজরুল ইসলামের ‘কান্ডারী হুঁশিয়ার’-এর বিখ্যাত সেই পংক্তি- “ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান, আসি অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন্ বলিদান”|

অমিতবাবু বলেন, নারদা-সারদা-রোজ ভ্যালি- সিন্ডিকেট, একটা ভ্রষ্টাচারের সিরিজ হয়ে উঠেছে বাংলা৷ কোল মাফিয়া, ক্যাটাল মাফিয়া- এই ভ্রষ্টাচার থেকে মুক্তি চাইলে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি-র প্রতি আস্থা রাখুন| একবার সুযোগ দিন, উন্নয়ন করে দেখাবো| আগে এই বাংলায় রবীন্দ্র সঙ্গীত, শ্রী চৈতন্যের কির্তন লোকে শুনত. এখন সনে বোমার আওয়াজ| একটার পর একটা পিস্তল আর বোমার কারখানা| সংস্কৃতির এই অবক্ষয় রোধের জন্য এ রাজ্যে বিজেপি-র সরকার আনতে হবে|

তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাসের কড়া সমালোচনা করতে গিয়ে তিনি হুঁশিয়ারী দিয়ে বলেন, হত্যাকারী কখনও বাঁচতে পারে না| কমিউনিস্টদের দিকে তাকান| ক্ষমতা চলে গেলে সব বদলে যায়| তৃণমূল সরকারের কটাক্ষ করতে তাঁর বক্তব্য এই জমানায় রাজ্যে মাফিয়ারাজ চলছে৷ তৃণমূলের শাসনে বেড়েছে দুর্নীতি৷ এই রাজ্যে জিডিপির হার ২৫% থেকে ৩% নেমে এসেছে৷ তাঁর সাফ বক্তব্য বাংলার ক্ষমতা পেয়েও উন্নয়ন করতে পারেনি তৃণমূল সরকার৷ ক্ষমতায় এলে শুধুমাত্র রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করবে বিজেপি৷

অমিতবাবু সমবেতদের বলেন, মমতাদি কখনও কনগ্রেসের বা ইউপিই-র শরিক ছিলেন| ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশে এর রাজ্য কত টাকা পেয়েছিল জানেন? ১ লক্ষ ৩২ হাজার কোটি টাকা| আর কেন্দ্র মোদী সরকার আসার পর এনডিএ আমলে চতুর্দশ অর্থ কমিশনে এ রাজ্য কত পেয়েছে, জানেন? ৩ লক্ষ ৫৯ হাজার কোটি টাকা|আমি জানতে চাই, বাংলার গ্রামেগঞ্জে ওই টাকা গিয়েছে? সমবেতরা অস্পষ্ট কন্ঠে জবাব দেয়, না| অমিতবাবু বলেন, জোরে বলেন, ওই টাকার মুখ কেউ দেখেছেন আপনারা? এবার সমবেত জোরে উত্তর আসে, নাআআআআ| অমিতবাবু প্রশ্ন করেন, তাহলে বলুন, ওই টাকা গেল কোথায়? কেন্দ্রীয় নানা প্রকল্পের সাফল্যের খতিয়ান দিয়ে অমিতবাবু বলেন, তিন লক্ষ গ্রামে বিদ্যুত সংযোগ দেওয়া হয়েছে| বিকাশ করতে গেলে এ রাজ্যে মোদিজির হাত ধরতে হবে|

আজ মেয়ো রোডের সমাবেশে তিনি পঞ্চায়েত ভোটের কথা উল্লেখ করে অমিতবাবু জানান, পঞ্চায়েত ভোটে তাঁদের কর্মীদের ওপর হামলা সত্ত্বেও বিজেপির ফল ভাল ছিল৷ সাত হাজার আসনে বিজেপি জিতেছে| এতেই উৎসাহী তাদের কর্মীরা, বলেন তিনি৷ কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্য তাঁর বক্তব্য ২০১৯-এ বাংলায় ২২ আসনে জিতবে হবে৷ এই মুহূর্তে দেশে ১৯টি রাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি৷ এবার পাখির চোখ বাংলা৷ কারণ বিজেপি সভাপতির স্পষ্ট বার্তা বাংলায় ক্ষমতা ছাড়া জয় সম্পূর্ণ হয় না৷

মা দুর্গার বিসর্জন করতে দেব না| সরস্বতী পুজো নিয়ে সমস্যা| এ সব আগে কখনও হয়েছে? এই প্রশ্ন তুলে অমিতবাবু বলেন, আমরা কথা দিচ্ছি, বিজেপি এলে এ রকম কখনও হবে না৷” তিনি বলেন, “ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির একটা সীমা থাকবে তো| একটা কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে রাখি মমতাদি- সব কথা জানাতে আমাদের কার্যকর্তারা গ্রামে গ্রামে, গলিতে গলিতে, ঘরে ঘরে ঘরে যাবে| লোকসভায় ২২টার কম আসনে আপনারা আটকে রাখতে পারেন কি না দেখুন| এর পর ভারতমাতার জয়ধ্বনি দিয়ে ভাষণ শেষ করেন অমিতবাবু|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *