BRAKING NEWS

ধর্মান্তকরণের প্রতিবাদে বিধানসভায় ওয়াকআউট সিপিএম-কংগ্রেসের

কলকাতা, ২২ ফেব্রুয়ারি (হি. স.) : এ রাজ্যে, বিশেষত কলকাতার প্রকাশ্য সমাবেশে ধর্মান্তকরণের প্রতিবাদ জানাতে বৃহস্পতিবার রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন থেকে কক্ষত্যাগ করেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। ওই সমাবেশে উদ্যোক্তা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও পুলিশের উপস্থিতিতে সাংবাদিক নিগ্রহের প্রতিবাদও করেন তাঁরা।
সম্প্রতি এসপ্লানেডে ‘হিন্দু সংহতি’-র প্রকাশ্য সমাবেশে হাওড়ার ১৩ জন ধর্মান্তরিত হন। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা পরামর্শদাতা তপন ঘোষের দাবি, \”ওঁদের পূর্বপুরুষরা আগে হিন্দু ছিলেন। একসময় বাধ্য হয়েছিলেন মুসলিম হতে। এবার স্বেচ্ছায় ফিরে এলেন হিন্দুধর্মে।\” কিন্তু অনুষ্ঠানশেষে ওই ধর্মান্তরিতদের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে সংগঠনের কিছু সমর্থকের হাতে আক্রান্ত ও লাঞ্ছিত হন কিছু সাংবাদিক। এ নিয়ে ব্যাপক হইচই হয় নানা মহলে।
ঘটনার নিন্দা করে প্রস্তাব গ্রহণের জন্য দাবি জানান কিছু বিরোধী সদস্য। এ দিন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী, নেপাল মাহাতো, সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী প্রমুখ কয়েকজনের নামোল্লেখ করে জানান, ওঁরা ধর্মান্তরকরণের ওই ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করে প্রস্তাব এনেছেন।
বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ না পেয়ে সুজনবাবু তাঁর আসনে উঠে দাঁড়িয়ে এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ করেন। বলেন, \”এসপ্লানেডের ওই ঘটনায় রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভূলুন্ঠিত হয়েছে। আহত হয়েছেন কিছু সাংবাদিক।\” সুজনবাবুর মাইকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এর পর শ্লোগান দিতে দিতে কংগ্রেস-সিপিএম বিধায়করা অধিবেশনকক্ষ থেকে বেড়িয়ে আসেন। তাঁরা শ্লোগান দেন, ‘ধর্মান্তকরণের নামে অসভ্যতা বন্ধ কর’, ‘পুলিশ তুমি কোথায় ছিলে, জবাব চাই জবাব দাও’, ‘সরকার-বিজেপি অশুভ আঁতাত বন্ধ কর’, ‘কেন বিধানসভায় এ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না?’, ‘জঙ্গি রাজ বন্ধ কর’ প্রভৃতি।
বিরোধীদের কক্ষত্যাগের সময়ে অধিবেশনে ছিলেন না রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পরে এর কারণ জানতে চাইলে হেসে বলেন, \”আমি না থাকলে এ সব নিয়ে হইচই করতে স্বচ্ছন্দ্য বোধ করে বিরোধীরা\” ওয়াকআউট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, “আমি তো ছিলাম না! ওদের ব্যাপার!আর, ধর্মান্তরণ কি নিষিদ্ধ? আগে হয়নি? এ দেশে প্রায় দু’কোটি খ্রিষ্টান এবং ১৮ কোটি মুসলমানের আদিপুরুষদের ৯০ শতাংশই তো ধর্মান্তরিত! অনেক আগে এ দেশ তো পুরো হিন্দু-নিয়ন্ত্রিত ছিল! ভিন ধর্মের অতিথিরা এলে হিন্দু রাজারাই সভায় বসিয়ে ওঁদের ধর্ম শুনতেন, লোককে শুনতে বলতেন। মসজিদ-গির্জা বানানোর অনুমতি, জায়গা, অর্থ কিন্তু হিন্দু রাজারাই দিয়েছিলেন।\”
উচ্চবর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারে বহু নিম্নবর্ণের হিন্দু ধর্মত্যাগ করেছিলেন, এই অভিযোগ মানতে রাজি নন দিলীপবাবু। এ নিয়ে ব্যাখ্যাও দেন তিনি। বলেন, \” যে কোনও কারণেই হোক, সাবেক ধর্মান্তরিত হিন্দু বা তাঁদের বংশধরেরা যদি ফের হিন্দু হন, ক্ষতি কোথায়?\”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *