BRAKING NEWS

আল কায়দার ডেরায় তল্লাশি, মেজর জিয়ার সন্ধানে এন আই এ

কলকাতা, ২৬ নভেম্বর ( হি.স.): আলকায়দার লিঙ্কম্যান মনতোষের ডেরায় আজ তল্লাশি চালালো পুলিশ। বসিরহাটে মনোতোষের দুই স্ত্রীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হল প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ ও বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম । মিলেছে ম্যাপ ও ডায়েরি । বসিরহাটের দক্ষিণপাড়ার রঘুনাথপুরে স্ত্রী আফরোজা বিবির বাড়িতে তল্লাশিতে মেলে ৫টি ওয়ান শটার,১২টি নাইন এমএম পিস্তল । – উদ্ধার হয়েছে ১টি দেশি ও ১টি নাইন এমএম পিস্তল । এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ৩৫টি কার্তুজ ও ২টি সিল প্যাকেটে বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে ।
আলকায়দার লিঙ্কম্যান মনতোষের ডেরায় তল্লাশি । বসিরহাটে মনোতোষের দুই স্ত্রীর বাড়ি থেকে উদ্ধার প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ ও বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম । মিলেছে ম্যাপ ও ডায়েরি। উদ্ধার ডায়েরিতে একাধিক ব্যক্তির নাম রয়েছে । মনোতোষের দুই স্ত্রীর ভূমিকাও খতিয়ে দেখছে এস টি এফ ।
এদিকে, বাংলাদেশে বছর ছয় আগে শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যে সেনাকর্তা অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করেছিল সেই মেজর জিয়াকে এখন হাতে পেতে চাইছে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা এন আই এ । কারণ, পাক গোয়েন্দা সংস্থা আই এস আই-এর সাহায্যে হাওড়ার ডবসন রোডে ডেরা বাঁধা দুই জঙ্গি তামিম ও সাইফুল ওরফে নয়ন গাজিকে কলকাতায় পাঠিয়েছিল এই মেজরই । এখানেই শেষ নয়, বসিরহাটের গোপন পথ দিয়ে পাকিস্তানের নাগরিক মাজিদ ভাইকে পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের ‘ব্রেন ওয়াশ’ করার জন্য নিয়ে এসেছিল সেনা বিদ্রোহের এই পাণ্ডা । স্বভাবতই পশ্চিমবঙ্গে পাকিস্তানি অর্থে আল কায়দার স্লিপার সেল তৈরির বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে ধৃত তনভির ও শাহদাতদের পাশাপাশি চক্রের মাথা মেজরের সন্ধানে জোর তল্লাশি শুরু করেছেন গোয়েন্দারা ।যদিও কলকাতা পুলিশের এস টি এফ শাখার গোয়েন্দাদের অনুমান, দিন কয়েকের জন্য পশ্চিমবঙ্গে গোপনে পা রাখলেও এখন মেজর জিয়া ও মাজিদ ভাই হয় বাংলাদেশ না হলে তৃতীয় কোনও দেশে আশ্রয় নিয়েছে । ধৃত তিন জঙ্গিকে জেরা করে কলকাতা পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, এই দলে আরও কয়েকজন জঙ্গি রয়েছে । আফতাব তাদের অন্যতম । বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এসে পশ্চিমবঙ্গ না হলেও হায়দরাবাদ অথবা বিহারে লুকিয়ে থাকতে পারে । ধৃত শাহদাতকে জেরা করে অন্যদের সন্ধানে নেমেছে পুলিশ । সুইসাইড স্কোয়াড তৈরি করতেই হাওড়ায় এসেছিল এ বি টি-র জঙ্গি তামিম ও নয়ন গাজি । স্কোয়াডের সদস্য জোগাড় করতে হাওড়ার তিনটি বস্তিতে দফায় দফায় বৈঠক করে তারা । আনসার বাংলা টিম (এ বি টি)-এর এই দুই জঙ্গি নেতার হাত ধরেই হাওড়ায় তৈরি হয়েছে তিনটি স্লিপার সেল । এই তিনটি বস্তিতে এখনও লুকিয়ে এই স্লিপার সেলের সদস্যরা । অক্টোবর মাস থেকে টানা এই সব এলাকায় গোপনে সংগঠন তৈরি করে কট্টর জঙ্গি ও সংগঠনের ‘অপারেশন গ্রুপ’-এর চাঁই তামিম ও নয়ন । এই দুই জঙ্গি নেতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকার সন্দেহে এস টি এফের নজরে রয়েছেন হাওড়ার মাদ্রাসার দুই শিক্ষক ।
এসটিএফ জানতে পেরেছে, তিন দিনে দু’বার এই দুই শিক্ষকের সঙ্গে গোপন বৈঠক করে এই তামিম ও নয়ন । তদন্তকারীদের আশঙ্কা, সুইসাইড স্কোয়াড তৈরির জন্য ওই জঙ্গি নেতাদের সাহায্য করেছিলেন এই দুই শিক্ষক । হাওড়ায় গোপন বৈঠক করার পর এখন কলকাতার আশপাশেই ঘাঁটি গেড়েছে এই দুই খতরনাক জঙ্গিনেতা, এমনটাই আশঙ্কা এস টি এফে র। তাদের সন্ধানে জোর তল্লাশি শুরু করেছে তদন্তকারীরা । হাওড়ার ওয়াটকিন লেনের শিবা গেস্ট হাউসে ১ অক্টোবর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ঘাঁটি গেড়েছিল এ বি টি-র ‘অপারেশন গ্রুপ’-এর মাথা তামিম ও নয়ন ।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, জাল আধার কার্ড দিয়ে নিজেকে স্বপন বিশ্বাস বলে পরিচয় দিয়েছিল তামিম । ওই গেস্ট হাউসের কর্মীদের জেরা করে এস টি এফের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, সকালেই ওই গেস্ট হাউস থেকে বেরিয়ে পড়ত স্বপন ওরফে তামিম এবং নয়ন । রাতে ফিরে কারও সঙ্গে কথাও বলত না তারা । শুক্রবার শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে একটি সিনেমা হলের কাছে পাকড়াও হয়েছে এবিটি-র জঙ্গি শাহদাত হোসেন ওরফে বাবু । তার মুখ থেকেই তামিম-নয়নের খবর মিলেছে বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন । শাহাদাতকে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, টিকিয়াপাড়া, কাজিপাড়া ও পিএম বস্তিতে দফায় দফায় বৈঠকে করে নয়ন ও তামিম । সেখানেই দলের সদস্য তৈরি করে তারা। এছাড়া শাহদাত গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, শালকিয়া ও টিকিয়াপাড়ায় দু’টি মাদ্রাসার দু’জন শিক্ষকের নামও ।
তদন্তে উঠে এসেছে আরও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য । জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট এলাকার গাছা গ্রাম থেকে চোরাপথে অনুপ্রবেশ করেছিল তামিম ও নয়ন । সীমান্ত পার করার পর ওই গ্রামেই বেশ কিছুদিন কাটিয়েছিল তারা । ওই এলাকা থেকেই জাল আধার কার্ড বানিয়ে, নতুন নাম ভাঁড়িয়ে হাওড়ার ওই গেস্ট হাউসে উঠেছি়ল তারা । শুধু কী তামিম, নয়ন, সামশাদ ও রিজাউল ? নাকি এই সংগঠনের আরও জঙ্গি ওই পথে রাজ্য ঢুকছে কি না সে বিষয়েও তদন্ত চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *