BRAKING NEWS

জাতীয় প্রেস ডে অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি, জাগরণ ও ত্রিপুরা দর্পণ সম্পাদক সম্বর্ধিত

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ নভেম্বর৷৷ গণমাধ্যমে বিশেষ অবদানের জন্য ‘জাগরণ’ পত্রিকার সম্পাদক পরিতোষ বিশ্বাস ও ‘ত্রিপুরা

জাতীয় প্রেস ডে উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আগরতলা প্রেসক্লাবে তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তর এবং আগরতলা প্রেসক্লাবের যৌথ উদ্যোগে গণমাধ্যমে বিশেষ অবদানের জন্য জাগরণ পত্রিকার সম্পাদক পরিতোষ বিশ্বাস (বায়ে) ও ত্রিপুরা দর্পণ পত্রিকার সম্পাদক সমীরণ রায়কে (ডানে) সম্বর্ধনা জানাচ্ছেন বিধানসভার উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর৷ নিজস্ব ছবি৷

দর্পণ’পত্রিকার সম্পাদক সমীরণ রায়কে সম্বর্ধনা জানাল ত্রিপুরা সরকার ও আগরতলা প্রেস ক্লাব৷ জাতীয় প্রেস ডে-২০১৭ উপলক্ষে আজ সন্ধ্যায় আগরতলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই প্রবীণ সম্পাদককে পুষ্পস্তবক, অভিনন্দন পত্র ও অঙ্গবস্ত্র দিয়ে সম্বর্ধনা জানান রাজ্য বিধানসভার উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর৷ অনুষ্ঠানে ‘চ্যালেঞ্জ বিফোর দ্য মিডিয়া’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে৷ অনুষ্ঠানে জাগরণ সম্পাদক পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, আগে সংবাদপত্র প্রকাশনা চালিয়ে রাখা আরও কঠিন ছিল৷ অনেক কষ্ট করে কাগজ চালাতে হতো৷ তবু, গর্ব অনুভব করতাম৷ আর আজ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কার্য্যত বিপন্ন৷ অঘোষিত জরুরী অবস্থা চলছে৷ মূদ্রণ মাধ্যম এখন চরম অস্তিত্ব সংকটের মুখে৷ এই অবস্থা থেকে উত্তরণের সমস্ত পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ একই কথা ব্যক্ত করেন সম্বর্ধিত বরিষ্ট সাংবাদিক সমীরণ রায়৷

তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তর এবং আগরতলা প্রেস ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠানের উদ্বোধক উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর বলেন, এখন যে চ্যালেঞ্জ মিডিয়ার সামনে উঠে এসেছে তা কিভাবে মোকাবিলা করা হবে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ প্রিন্ট মিডিয়া এখন অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগছে৷ সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে ইলেকট্রনিক মিডিয়াও টিকে থাকার লড়াইয়ে পড়েছে৷ এই চ্যালেঞ্জকে সংশ্লিষ্টদের গ্রহণ করতে হবে৷ তিনি বলেন, সাংবাদিকদের পেশা হল প্রতিবাদী কন্ঠ৷ কোন বিষয়ে কেউ কিছু না বললেও সাংবাদিকরা বলতে পারেন৷ আর তারা এটা বলতে পারেন বলে সমাজও টিকে আছে৷ আমরা মাথা নত না করে এগিয়ে যাব আজকের দিনে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্তদের এই শপথ নিতে হবে৷ উপাধ্যক্ষ শ্রীকর বলেন, দেশ আজ প্রচন্ড সঙ্কটের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে৷ সমস্ত সামাজিক দায়িত্ব থেকে দেশের সরকার হাত তুলে নিচ্ছে৷ এসবের বিরুদ্ধে সংবাদপত্রগুলিকে একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে৷ প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া, প্রেস ক্লাবগুলিকেও সদর্থক ভুমিকা নিতে হবে৷

[vsw id=”8DMuu0cfqvg” source=”youtube” width=”425″ height=”344″ autoplay=”yes”]আলোচনাচক্রে অংশ নিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী তথা মানবাধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত পুরুষোত্তম রায় বর্মণ বলেন, ডিজিটাল মিডিয়ার কথা এখন যেভাবে বলা হচ্ছে তাতে প্রিন্ট মিডিয়া আর কতদিন তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবে এই প্রশ্ণ উঠে এসেছে৷ সংবাদপত্র বেশী করে কর্পোরেট সেক্টরের স্বার্থ দেখছে কিনা এই প্রশ্ণও উছে এসেছে৷ কারণ, বৃহৎ মিডিয়াকে এখন কর্পোরেট সেক্টরই নিয়ন্ত্রণ করছে৷ বড় বড় সংবাদপত্রে এখন সাধারণ মানুষের সমস্যা সম্পর্কিত খবর খুঁজে পাওয়াই দায়৷ তিনি বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বাধীনতার পর এত বড় সঙ্কট ভারতবর্ষে আর আসেনি৷ ৭৫ সালে জরুরী অবস্থার সময় সেন্সরশীপ দেখা গেছে৷ এখন চলেছে অঘোষিত জরুরী অবস্থা৷ সংবাদপত্র এবং সরকারের মধ্যে দূরত্ব বজায় থাকলে প্রকৃত ঘটনা ওঠে আসবে বলে তিনি মনে করেন৷

সেমিনারের অন্যতম বক্তা ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ইন্দ্রনীল ভৌমিক বলেন, মার্কেটের বাইরে গিয়ে কাজ করাটা এখন মিডিয়ার সামনে কঠিন হয়ে পড়েছে৷ সোশ্যাল মিডিয়া এখন দারুণভাবে চলে আসায় প্রিন্ট এন্ড ইলেকট্রনিক মিডিয়া একটা চাপের মধ্যে পড়ে গেছে৷ বিশিষ্ট সাংবাদিক শেখর দত্ত বলেন, মিডিয়ার সামনে চ্যালেঞ্জ অতীতে ছিল, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে৷ আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়াটা এখন মিডিয়ার সামনে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ গত কয়েক বছরে প্রচুর সাংবাদিক চাকুরীচ্যুত হয়েছেন৷ রাজনৈতিক নিরপেক্ষ মিডিয়া এখন খুবই কম৷ বিশ্বাসযোগ্যতা হচ্ছে মিডিয়ার সব থেকে বড় পুঁজি৷ এটা ধরে রাখা ভীষণ কঠিন চ্যালেঞ্জ৷ যে দুজনকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়েছে তাঁদের অন্যতম ত্রিপুরা দর্পণ পত্রিকার সম্পাদক সমীরণ রায় বলেন, এখন পত্রিকাগুলির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চলছে৷ অনুরূপ অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে জাগরণ পত্রিকার সম্পাদক পরিতোষ বিশ্বাস বলেন, আগামী দিনে প্রিন্ট মিডিয়া থাকবে কিনা এই প্রশ্ণ উঠে এসেছে৷ উল্লেখ্য, এই দু’জনকেই সম্বর্ধনা জ্ঞাপন করেন রাজ্য বিধানসভার উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর৷

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের সচিব এম এল দে বলেন, সত্য এবং নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন করা সংবাদ মাধ্যমের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের অধিকর্তা এম কে নাথ৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আগরতলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সত্যব্রত চক্রবর্তী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *