নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ জুন৷৷ যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের উদ্যোগে রাজ্যের আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের মূল

অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয় আজ সকালে উমাকান্ত মিনি স্টেডিয়ামে৷ এই অনুষ্ঠানে বি এস এফ, আসাম রাইফেলস, সি আর পি এফ এর জওয়ান, এন এস এস, স্কাউট এন্ড গাইড, খেলোয়াড়, ক্রীড়াবিদ, প্রশিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী অংশ নেন৷ প্রদীপ জ্বেলে তৃতীয় আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের উদ্বোধন করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ফগ্গন সিং কুলাস্থে বলেন, যোগা কেবল নিজের জন্য নয়, সকলের জন্য৷ যোগা স্বাস্থ্যের জন্য, সমাজের জন্য ও দেশের জন্য৷ এটা একটা সাধনা ও মাহাত্ম্য৷ স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী শ্রী কুলাস্থে বলেন, সমাজকে পরিবর্তন করতে হলে চাই স্বাস্থ্যের পরিবর্তন৷ তিনি বলেন, সকলেই স্বীকার করেন যে, যোগার গুরুত্ব রয়েছে৷
বিশেষ অতিথির ভাষণে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বাদল চৌধুরী বলেন, যোগা শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে৷ সংকীর্ণতা দূর করে৷ আবাল বৃদ্ধ বনিতা সকলকে সুস্থ থাকতে যোগার ভূমিকা অনস্বীকার্য৷ তিনি বলেন, যোগা যাতে কোন ধর্মের আচরণের শিকার না হয়, ধর্ম-বর্ণ জাতপাত নির্বিশেষে সকলে করতে পারেন তা আমাদের দেখতে হবে৷ আমরা যোগাভ্যাসকে ছাত্র-ছাত্রীসহ সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দেবার উদ্যোগ নিয়েছি৷ কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন স্থানে স্টেডিয়াম ও ইন্ডোর [vsw id=”fnZbxX9v89E” source=”youtube” width=”425″ height=”344″ autoplay=”yes”]স্টেডিয়াম নির্মাণের৷ যোগাকে গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সর্বত্র যাতে ছড়িয়ে দেয়া যায় এজন্য তিনি আরও কেন্দ্রীয় অনুদানের দাবী জানান৷ সভাপতির ভাষণে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী সহিদ চৌধুরী বলেন, কেবল রাজ্য ভিত্তিক নয়, রাজ্যের ৫৮ টি ব্লকের ৬৯ টি স্থানে এই দিবস পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ এতে রয়েছে র্যালী ও যোগাসন৷ অংশ গ্রহণকারীর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে প্রায় ৪৬৫০০ জন৷ তিনি বলেন, যোগা সম্প্রসারণে ক্রীড়া দপ্তরের সঙ্গে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দপ্তরকেও যুক্ত করা হয়েছে৷ এখন ৯৮০ টি বিদ্যালয়ের ২১,২৪৭ জন ছাত্র-ছাত্রী এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে৷ আরো ৪৪২৭ টি বিদ্যালয়েও ৫ লক্ষ ৪ হাজার ৩০ জন ছাত্রছাত্রীকে এতে যুক্ত করা হবে৷ এখন পর্যন্ত ৯৯৪ জন শিক্ষককে একাজে নিযুক্ত করা হয়েছে৷ যোগা ও অন্যান্য খেলাধূলা সম্প্রসারণে বর্তমানে এন আর আর সি সি তে এবং সোনামুড়া ইন্ডোর হল নির্মাণ, আমবাসা ও কৈলাসহরে স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ চলছে৷ বিশালগড়ে যোগা হেলথ কেয়ার সেন্টার নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে৷
সম্মানিত অতিথির ভাষণে আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ড প্রফুল্লজিৎ সিনহা যোগা চর্চাকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন৷ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান সচিব রাকেশ সারোয়াল, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব সমরজিৎ ভৌমিক, বি এস এফ-এর আই জি মিঃসারেঙ্গী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷ অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী কুলাস্থে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য একটি যোগাসনের বইয়ের মলাট অন্মোচন করেন৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রাজ্যের দু’জন মন্ত্রীসহ উপস্থিত ছাত্রছাত্রী ও অন্যান্যরা যোগা প্রদর্শন করেন৷
কৈলাসহর সংযোজন ঃ আন্তর্জাতিক যোগা দিবস উপলক্ষে আশ্রয় সামাজিক সংস্থার উদ্যোগে এবং ভারত সরকারের আয়ুস দপ্তরের আর্থিক সহযোগিতায় এক মাস ব্যাপী ঊনকোটি জেলার বিভিন্ন জায়গায় ফ্রী যোগা ক্যাম্প চলছে৷ গত একুশ মে থেকে চলছে এই ক্যাম্প এবং এই ক্যাম্পের আজ ছিল শেষ দিন৷ অন্তিম দিনে আজকে কৈলাসহরে আর কে, আই সুকলের ক্যাম্পাস হলে অনুষ্ঠিত হয়৷ উপস্থিত ছিলেন আশ্রয় সামাজিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিধায়ক বিরজিৎ সিনহা, সম্পাদক চন্দ্রশেখর সিনহা, গৌরনগর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মোঃ বদরুজ্জামান৷ আজকের যোগা ক্যাম্পে আর কে আই সুকলের ছাত্রদের এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷
বক্সনগর সংযোজন ঃ যথারাজ্যে মর্যাদার সঙ্গে পালিত হল বুধবার সকাল ৬টা মানিক্যনগর হাইসুকলে বক্সনগর ব্লক ভিত্তিক যোগা দিবস পালিত হল৷ প্রচুর ক্রীড়া প্রেমী মাঠের কোনায় কোনায় উপস্থিত ছিল৷ বিশেষ সহযোগীতার হাত বাড়ায় ৩১ নং ব্যাটেলিয়ান সীমান্ত রক্ষী বাহিনী তথা বিএসএফ৷ মানিক্যনগর গ্রামের মহিলা থেকে বৃদ্ধরাও অংশ নেন এদিনের আন্তর্জাতিক যোগা শিবিরে৷ প্রায় ৩ হাজার লোকসমাগম হয়৷ শিবিরে উদ্বোধন করেন সিপাহীজলা জিলা পরিষদের ওয়ার্কিং কমিটির সভাপতি তপন বিকাশ পাল, বক্সনগর বিডিও অর্মত্য বর্মন, বিএসএফ এর ৩১ নং কমাউন্টার প্রদীপ সিং, মানিক্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এর উপপ্রধান মানিক দেবনাথ প্রমুখরা৷ সভাপত্বি করেন বক্সনগর পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভুষন সরকার৷
চড়িলাম সংযোজন ঃ এবছর আন্তর্জাতিক যোগ দিবস তৃতীয় বর্ষে পা দিয়েছে৷ বুধবার ২১ জুন সিপাহীজলা জেলার বিভিন্ন এলাকায় এবং সুকলে আয়োজিত করা হয়েছে যোগ দিবস৷ বিশালগড়ের বিয়েবাড়িতে সকাল নটায় যোগ দিবস এড অনুষ্ঠানের অংশ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের মন্ত্রী ফাগুন সিং, রাজ্য বিজেপি সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব সন্ত্রীক এবং ডাঃ দীলিপ দাস, সিপাহীজলা জেলায় বিজেপির সহ সম্পাদক রাজীব ভট্টাচার্য্য এবং অন্যান্য স্থানীয় বিজেপির সমর্থকরা ও বহু মানুষ৷ কেন্দ্রীয় বিজেপি মন্ত্রী আলোচনায় বলেন, সুস্থ শরীরের সুস্থ মনের বিকাশ ঘটাতে যোগার প্রয়োজন রয়েছে৷ শ্রমিকদের চাহিদাও বেড়েছে৷ তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজির জন্যই আজ সারা দেশের সঙ্গে সিপাহীজলা জেলায় বিভিন্ন প্রান্তে যোগ দিবস পালন করছে৷ শরীর, মন, আত্মায় মেল বন্ধন গড়ে তুলতে সক্ষম যোগ৷ অনুষ্ঠানের বৃক্ততা দেওয়ার পর যোগাভ্যাস করেন উপস্থিত সকলেই৷ তাছাড়া, সিপাহীজলা জেলায় বিশ্রামগঞ্জ মিনি স্টেডিয়ামেও ৩য় আন্তর্জাতিক যোগ দিবসকে কেন্দ্র করে তিনটি সুকল থেকে প্রায় ৩৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী সকাল ৭টায় যোগ দিবস উপলক্ষে এক র্যালী এবং র্যালী শেষে স্টেডিয়াম জড়ো হয়ে যোগ দিবসে সকল স্তরের ছেলে মেয়েদা যোগাসনের পাশাপাশি মেডিটেশন, সূর্য্য নমস্কার (১২টি পদ্ধতি) সাধারন ব্যায়াম এবং যোগাসন প্রদর্শন করেছে৷ বিশ্রামগঞ্জ মিনি স্টেডিয়ামে যোগাসন প্রদর্শন করার পর বক্তা সিপাহীজলা জেলার জেলাধিপতি ফকর উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, সুস্থ থাকতে যোগের গুরুত্ব অপরিসীম৷ যোগ হলো প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত এক বিশেষ ধরনের শারীরিক ও মানসিক ব্যায়াম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা৷ এর উদ্দেশ্য মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাবিধান৷ এপ্রথা ভারত সহ অনেক দেশে আজও প্রচলিত রয়েছে৷ বুধবার ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে বিশ্রামগঞ্জ স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন বহু মানুষ এবং বিভিন্ন ক্রীড়া দপ্তরের কর্মী সহ তিনটি বিদ্যালয় থেকে আগত শিক্ষক ও শিক্ষিকাগন৷ সমাজের নানা প্রান্তের মানুষ ওইসব অনুষ্ঠানে আজ যোগ ব্যায়ামে অংশ নিয়েছিল৷ আন্তর্জাতিক যোগ ব্যায়ম দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছে ছেচরীমাই হাইসুকল, বিশ্রামগঞ্জ দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরাও৷ আস্তে আস্তে তা আরও বাড়বে বলে মনে করেছেন ক্রীড়া শিক্ষক বেনীমাধব দেবনাথ এবং গিরিধারী দেবনাথ৷

