BRAKING NEWS

বিজেপি রাজ্যভাগের দাবির বিরোধিতা করেনি ঃ সিপিএম

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ জুন৷৷ তিপ্রাল্যান্ড ইস্যুতে রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে৷ এই ইস্যুতে অবস্থান স্পষ্ট করতে

সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সিপিএম রাজ্য কমিটির সম্পাদক বিজন ধর৷ ছবি নিজস্ব৷

গিয়ে বিজেপি’র বক্তব্যে রাজ্যভাগের দাবীর বিরোধীতা উঠে আসেনি, দাবি করেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর৷ রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে বিজনবাবু দৃঢ়তার সাথে জানান বিজেপি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভেদকামী শক্তিকেই প্রশ্রয় দিচ্ছে, তা তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট৷ পাশাপাশি তিনি আবারও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিপ্রাল্যান্ড ইস্যুতে আইপিএফটি-কে আন্দোলনে যেতে কোন একটি শক্তি বাধ্য করছে৷
এদিন বিজনবাবু বলেন, তিপ্রাল্যান্ড ইস্যুতে রেল এবং জাতীয় সড়ক অবরোধ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে অবস্থান জানতে চাওয়া হয়েছিল৷ দুটি রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে৷ বিজেপি যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে তাতে স্পষ্ট আলাদা রাজ্যের দাবী তারা বিরোধীতা করেন না৷ বরং ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভেদকামী শক্তিকেই বিজেপি প্রশ্রয় দিচ্ছে৷ এদিন তিনি আইপিএফটি-কেও কটাক্ষ করেছেন৷ তিনি বলেন, বিভাজিত আইপিএফটির সভাপতি এন সি দেববর্মা জানিয়েছেন রাজ্যের কোন একটি নির্দিষ্ট অংশে অবরোধ করলে স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় ব্যাঘাত ঘটবে না৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজনবাবুর দাবি রাজ্যে উন্নয়ন হয়েছে, রাস্তাঘাট সম্প্রসারিত হয়েছে৷ তাই কোন একটি স্থানে অবরোধে রাজ্যে জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত না ঘটাটাই স্বাভাবিক৷ তিনি আরও বলেন, এন সি দেববর্মা উপজাতি এলাকায় উন্নয়ন হয়নি তা বলতে পারেননি৷ বিজনবাবু মনে করেন, আইপিএফটি-কে আন্দোলনে যেতে পেছন থেকে কোন একটি শক্তি বাধ্য করছে৷ কারণ, তারা বিভেদকামী দর্শনে বিশ্বাসী৷ বিজনবাবু জানতে চান অনির্দিষ্টকালের জাতীয় সড়ক এবং রেল অবরোধ করে কী ফায়দা মিলবে৷
এদিকে, রাজ্যে বিজেপি কোটি কোটি টাকা খরচ করছে বলে জানিয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক৷ তিনি জানান, কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রচুর গাড়ি ও বাইক কিনছে প্রদেশ বিজেপি৷ নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা বিলাচ্ছেন নেতৃত্বরা৷ বিজনবাবু জানতে চান এত টাকার উৎস কোথায়৷ তবে, তাঁর ধারণা পঁুজিপতিরা বিজেপিকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করছেন৷ তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, সাহস থাকলে বিজেপির টাকার উৎস দেখাক৷ তিনি উদ্বেগের সুরে বলেন, টাকা ছিটিয়ে বিজেপি রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করে দিচ্ছে৷ কারণ, সিপিএম বিধায়ক ও দলীয় কর্মীদের টাকা ছিটিয়ে কিনতে চাইছে বিজেপি৷ কিন্তু, সিপিএম থেকে কাউকে নিয়ে যাওয়া খুব কঠিন বলে দাবি করেন বিজনবাবু৷
এদিকে, স্বাধীনতা আন্দোলনে কমিউনিস্টরা বিরোধীতা করেছেন বিজেপির এই অভিযোগের খন্ডন করেন তিনি৷ বিজনবাবুর দাবি আরএসএস স্বাধীনতা আন্দোলনে সর্বোতভাবে বিরোধীতা করেছে৷ বরং কমিউনিস্টরা পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষেই সওয়াল করেছেন৷ তিনি বলেন, ১৯২১ সালে কমিউনিস্টরা কংগ্রেস অধিবেশনে পূর্ণ স্বাধীনতার প্রস্তাব এনেছিলেন৷ অনেক সংগ্রামের পর ১৯৩০ সালে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়৷ তাই স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে বিজেপি সিপিএম সম্পর্কে যে অপবাদ দিচ্ছে তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিজনবাবু৷ এদিন তিনি আরও বলেন, দেশে হিন্দু – মুসলিমের মধ্যে বিভেদ তৈরীর চেষ্টা চলছে৷ এই প্রচেষ্টা দেশের জন্য ভয়ংকর৷
রাজ্যের উপজাতিদের উন্নয়ন নিয়ে বিজেপি যে প্রশ্ণ তুলেছে তা হাস্যকর বলে উড়িয়ে দেন তিনি৷ তাঁর কটাক্ষ, ত্রিপুরাতে বিজেপি নেই তাই উপজাতিরা বেঁচে গেছেন৷ তাঁর দাবি, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে উপজাতিদের সম্পত্তি বলপূর্বক দখল করা হচ্ছে৷ তাদের সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে৷ বনাধিকার আইন সারা দেশে আর কোথায় এরাজ্যের মতো বাস্তবায়িত হয়েছে সেই প্রশ্ণের জবাব চেয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক৷ তিনি এদিন মোদি সরকারের সবকা সাথ, সবকা বিকাশেরও তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন৷ তিনি জানতে চেয়েছেন দেশের এক শতাংশ মানুষের কাছে ঊনষাট শতাংশের সম্পদ পৌঁছল কিভাবে৷ পাঁচ শতাংশের কাছে পঞ্চাশ শতাংশের বেশি জমি পৌঁছেছে কিভাবে৷ তাঁর দাবি, পঁুজিপতিদের স্বার্থেই বিজেপি সরকার নিবেদিত৷
এদিকে, অশ্বমেধ যজ্ঞ নিয়েও বিজেপি প্রদেশ সভাপতিকে কটাক্ষ করেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক৷ তিনি বলেন, বিজেপি প্রদেশ সভাপতি স্বীকার করেছেন লব ও কূশ অশ্বমেধেরে ঘোড়া আটকে দিয়েছিল৷ তাই তাঁর দাবি, ত্রিপুরাতে ঘরে ঘরে লব কূশ তৈরী হচ্ছে৷ তারাই বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া আটকাবেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *