নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ জুলাই৷৷ ওটিপিসি এবং নেপকোর দেনা মেটাতে ২৫০ কোটি টাকা ঋণ নিতে চলেছে বিদ্যুৎ নিগম৷ ৯৯ শতাংশ সুদের হারে এই ঋণ নিচ্ছে নিগম৷ তিনটি ধাপে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়া হবে৷ সোমবার মহাকরণে বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে জানিয়েছেন, ওটিপিসি এবং নেপকোকে এককালীন বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হবে৷ এরজন্য নিগম ২৫০ কোটি টাকা ঋণ নিচ্ছে৷ ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া নিগমের এই বিরাট অঙ্কের ঋণের জামিনদার রাজ্য সরকার৷
তাতে, প্রশ্ণ উঠেছে নিগম ব্যাঙ্কের এই ঋণ কি করে পরিশোধ করবে৷ এবিষয়ে নিগমকে বিদ্যুৎ মন্ত্রীর দাওয়াই, বকেয়া বিল সঠিক সময়ে আদায় করতে হবে৷ বিদ্যুতের ডিস্ট্রিবিউশন এবং ট্রান্সমিশন ক্ষতি কমাতে হবে৷ সঠিক সময়ে বিদ্যুতের বিল গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে হবে৷ সর্বোপরি দীর্ঘদিন ধরে যে সমস্ত গ্রাহকরা বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধ করছেন না তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করে তাদের বিরুদ্ধে সার্টিফায়েড মামলা নথিভুক্ত করতে হবে৷ বিদ্যুৎ মন্ত্রী মনে করেন, আপাতত নিগম এই সমস্ত বিষয় সঠিকভাবে রূপায়ণ করতে পারলে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ সহজেই পরিশোধ করা সম্ভব হবে৷ এদিন, বিদ্যুৎমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন, বিশ্ব ব্যাঙ্কের অর্থানুকূল্যে রাজ্যে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং চুরি আটকানোর একটি প্রকল্প শুরু হচ্ছে৷ ১৩০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি পিজিসিআইএল আগামী মাসদুয়েকের মধ্যে শুরু করবে এবং আগামী ২০১৯-২০ অর্থ বর্ষের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷
বিদ্যুৎমন্ত্রীর বক্তব্য এই প্রকল্পটি ঠিকঠাকভাবে রূপায়িত হলে রাজ্যে বিদ্যুৎক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন পরিলক্ষিত হবে৷ একদিকে যেমন নিগমের ক্ষতির হার কমবে, অন্যদিকে গ্রাহকদেরও অনেক সুযোগসুবিধা হবে৷ এদিকে, ব্যাঙ্ক থেকে নিগমের ঋণ নেওয়ার প্রসঙ্গে বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, ওটিপিসিকে প্রায় জরিমানা বাবদ ১৩২ কোটি টাকা এবং নেপকোকে জরিমানা বাবদ ১৬৮ কোটি টাকা দেনা৷ এদিন তিনি জানান, দেশের সবকটি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা দেনায় জর্জরিত৷ এমন অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যে বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থাগুলি অনেকেই উৎপাদন বন্ধ করে দিচ্ছে৷ অনেকে আবার উৎপাদন আগের তুলনায় কমিয়ে দিয়েছে৷ উদয় স্কিমে রাজ্য সরকার নেপকো এবং ওটিপিসিকে দেনা মেটানোর জন্য অর্থ দাবি করেছিল৷ কিন্তু বাজারে রাজ্য সরকারের কোন দেনা নেই, সে জন্য উদয় স্কিম থেকে কোন সাহায্য মিলেনি৷ এবার হয়ত ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ায় উদয় স্কিম থেকে সাহায্য পাওয়া যেতে পারে বলে বিদ্যুৎমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন৷
2016-07-12