নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ জুন৷৷ আগামী বছর দেড়েকের মধ্যে ধান উৎপাদন রাজ্যে উদ্বৃত্ত হয়ে যাবে৷ তখন এই ধান নিয়ে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন সেই বিষয়ে রাজ্য সরকার এখনও কোন কিছু ভাবনা চিন্তার মধ্যে আনেনি৷ কৃষিমন্ত্রী অঘোর দেববর্মা জানিয়েছেন, বর্তমানে রাজ্যে ৭৬ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হচ্ছে৷ আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে ৮৫ লক্ষ মেট্রিক টন ধান প্রতিবছর উৎপাদন হবে৷ তাতে চাহিদার তুলনায় সামান্য পরিমাণ চাল উদ্বৃত্ত হবে৷ এখন প্রশ্ণ উঠেছে রাজ্যে ধান উৎপাদনে সয়ংভর হয়েও চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন৷ কারণ, কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন এফসিআই রাজ্যে উৎপাদিত ধান কিনবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে৷ তাদের যুক্তি রাজ্যে ধান ভাঙানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোসম্পন্ন মিল নেই৷ ফলে এই ধান ক্রয় করে বহিঃরাজ্যে পাঠিয়ে ধান ভাঙ্গিয়ে চাল করে নিয়ে আনারা বিষয়টি যথেষ্ট ব্যয়বহুল৷ এজন্যই এফসিআই রাজ্যে উৎপাদিত ধান ক্রয় করতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না৷ রাজ্য সরকার অবশ্য বারবার এফসিআইকে অনুরোধ জানাচ্ছে গণবন্টন ব্যবস্থায় যে চাল সরবরাহ করা হয় তাতে যেন রাজ্যে উৎপাদিত ধান ব্যবহার করা হয়৷ তাতে রাজ্যের চাষীরা উপকৃত হবেন৷ এরই সাথে গণবন্টন ব্যবস্থায় চাল আমদানীর ক্ষেত্রে যে পরিবহণ ব্যয় বহন করতে হয় রাজ্য সরকারকে তা থেকে কিছুটা নিস্তার মিলতে পারে৷ কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ধান ভাঙ্গানোর জন্য অত্যাধুনিক মিল ইতিমধ্যে বেসরকারী উদ্যোগে দুটি গড়ে উঠেছে৷ সরকার দুটি ধান ভাঙ্গানোর মিল গড়ে তুলছে৷ একটি গোমতী জেলায়, অন্যটি ফটিকরায়ে৷ কিন্তু, সরকারী এবং বেসরকারী মিলিয়ে চারটি দিয়ে রাজ্যে উৎপাদিত সমস্ত ধান ভাঙ্গানো সম্ভব নয়, যা এফসিআইয়ের জন্য পর্যাপ্ত নয়৷
সোমবার মহাকরণে কৃষিমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, রাজ্যে ধান উৎপাদন উদ্বৃত্ত হলে কৃষকরা দারুন ক্ষতিগ্রস্ত হলে তখন দেখা যাবে এই বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়৷ তাতে আরও একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেল রাজ্য সরকার সরকারী কোষাগার থেকে অর্থ ব্যয় করে কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করবে না৷ ফলে আগামী দিনে রাজ্য চালে সয়ংভর হয়ে উঠলেও কৃষকদের যে তেমন কোন লাভ হচ্ছেনা তারই আভাস মিলল৷
কৃষিমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, চলতি বছরে ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে৷ এজন্য কৃষকদের পর্যাপ্ত সমস্ত কৃষি সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে৷ পাশাপাশি সেচের ব্যবস্থাও সুনিশ্চিত করা হয়ছে প্রশাসনের তরফে৷ আর যেহেতু ক্রমাগত বৃষ্টি হচ্ছে তাতে আমন ধান চাষাবাদে তেমন কোন সমস্যায় পড়তে হবে না বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী৷
2016-06-14