ভষ্মিভূত গ্রামে ফিরে যেতে চাননা ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই

DSCN8696নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ মে৷৷ কাশীরাম পাড়ায় রিয়াং শরণার্থীদের একাংশের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তরা নিরাপত্তার প্রশ্ণে ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন৷ বনমন্ত্রী নরেশ জমাতিয়া জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কিছু লোক এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন৷ একাংশ অবশ্য ভিটে মাটি ছেড়ে যেতে চাইছেন না৷ তাতে অনেকটাই স্পষ্ট রিয়াং শরণার্থী শিবির সংলগ্ণ অউপজাতিরা ঐ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন৷ যে কোন সময় বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে সে আশঙ্কায় রয়েছেন৷ রাজ্য সরকার তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করলেও ক্ষতিগ্রস্তরা কোনভাবেই চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না৷ বনমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাদের সাথে আলোচনা করে বাড়িঘর মেরামত এবং নতুন করে তৈরি করার বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ কিন্তু তারা এখনো সকলে একমত হতে পারছেন না যে এই এলাকায় তারা সকলেই থাকবেন কিনা৷ বনমন্ত্রী বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু এদের মধ্যে কেউ কেউ যদি এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে চান তাহলে তাদের বিষয়ে অন্য চিন্তা করতে হবে৷
এদিকে, রাজ্যে আশ্রিত রিয়াং শরণার্থীরা যখনই কোন সমস্যায় পড়েন তখন রাজ্য সরকার চটজলদি ব্যবস্থা নিয়ে থাকে৷ কিন্তু রিয়াং শরণার্থীদের একাংশের দ্বারা ঐ এলাকার অউপজাতিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও রাজ্য সরকার তাদের দিকে সহায়তার হাত সঠিকভাবে কেন বাড়িয়ে দিচ্ছে না সে প্রশ্ণ উঠেছে৷ অতীতে দেখা গেছে, রিয়াং শরণার্থী শিবির আগুনে পুড়ে ছাঁই হয়ে গেলে, রাজ্য সরকার যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের পুনর্বাসন এবং অন্যান্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে৷ অথচ ঐ শরণার্থীদের একাংশের দ্বারা এলাকার অউপজাতি ২০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া চারদিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরও তাদের ঠাঁই এখনো সেই এসপিও ক্যাম্পে৷ এই ক্যাম্পটি স্বরাষ্ট্রদপ্তর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থায়ী টিএসআর ক্যাম্প করার৷ জানা গেছে, একটি হলঘরে ২০টি পরিবার থাকছেন৷ তাতে, নারী-পুরুষ সকলেই এক ছাদের নিচে বসবাস করতে হচ্ছে৷ শিশুরাও রয়েছেন এদের সাথে৷ জানা গেছে, এই ক্যাম্প থেকে তাদের অন্যত্র কোথাও নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ কারণ, তারা রবিবারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভয়ে কাবু হয়ে রয়েছেন৷ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই সুযোগে তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে৷ বিজেপি রাজ্য সভাপতি বুধবার ২০টি পরিবারের হাতে দশ হাজার টাকা করে তুলে দিয়েছেন৷ ফলে, স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্তদের মনে প্রশ্ণ জেগেছে রিয়াং শরণার্থীদের বেলা সরকার কালবিলম্ব দেরি না করে তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে৷ অথচ এই রাজ্যের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও সরকারের তরফে সঠিকভাবে সহায়তা মিলছে না৷ এমনটাই ক্ষোভ জন্মেছে ক্ষতিগ্রস্তদের মনে৷